রাধারাণী দেবীর রচনা-সংকলন ১ | Radharani Devir Rachana-sankalan 1

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
অপূর্ব মধুর সম্পর্ক। গল্পটি ড্রামাটিক মোনোলগ- মেয়েটির একার জবানবন্দিতে লেখা। অবিকল এই বচনাশৈলিই রাধারাণী দেবী ব্যবহার করেছিলেন তার অপরাজিতা দেবীর কবিতাগুচ্ছে। এখানে যে কৌতুক, CIs, ব্যস্ততায় উচ্ছল জীবনপ্রবাহ আছে, অপরাজিতায় সেই সুরটিই ঝংকৃত। গল্পটিকে শব্দচিত্র বলাই উচিত, একটি যুগের মেয়েদের কথা ভারি সুন্দর ফুটেছে AACA! সেলাই-ফৌড়াই, আসন তৈরি, রান্নাবান্না, ঘর-গুছোনো, শাশুড়ি-সেবা, আর বাপের বাড়ির জন্য মন-কেমনের ফাকে ঘরের মেয়েদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের প্রভাবও দেখতে পাই সংসারের কাজের মধ্যে DAB কাটা, খাদির ধুতি-শাড়ি বোনাও রয়েছে। বাঙালি মেয়ের জীবনের নানাধরনের সামাজিক বিড়ম্বনার সাক্ষ্য এই গল্পগুলিতে ধরা পড়েছে। এখানে আছে দোজবরে বিয়ে হবার একাধিক কাহিনী, সংমায়েদের স্নেহের গল্প, জননী-না-হয়ে শুধু মাতৃস্থানীয়া হবার সামাজিক সমস্যা (যেখানে স্নেহের দায় থাকে, কিন্তু সামাজিক অধিকার থাকে না)। অরক্ষণীয়া মেয়ের পরিবারের কথা, বিধবা তরুণীদের কাহিনী, সতীনঘর করার ছবি, বাগ্‌্দান ভেঙে-যাওয়া মেয়েদের গল্প, বন্ধ্যা নারীর অসহায় মাতৃম্নেহ--বিভিন্ন ধরনের মর্মস্পর্শী পরিস্থিতিতে বাঙালি মেয়েদের জীবনযাপন ফুটেছে এইসব গল্পে। বিদ্রোহ্‌ নেই, সামাজিক সমাধানও নেই, আছে শুধু সমস্যাগুলির তীব্র, নগ্ন, TSM উপস্থাপনা। আর আছে, একটি বাঙালি বিধবা মেয়ের নিজস্ব চোখ। ৩ বিধবা কিশোরীর আবাল্যের শিক্ষা সঞ্চারিত হয়ে গিয়েছিল তার মর্মের গভীরে, ছোটগল্পেই শুধু নয়, সাহিতা-সমালোচনাতেও তার পরিচয় WA! “পতিপুত্রহীনা সারে সর্ব্বস্বরিক্তা নারী'র (মেজরাণীর বর্ণনা, ১৩৩৬) একমাত্র এঁশ্বর্য, আত্মত্যাগ। আর বিমলাকে তার অপ্ঃপতন থেকে 'রক্ষা করেছে কিশোর বালক অমৃূল্য'-“নারীর জীবনে মোহ ও প্রেমের যথার্থ স্বরূপ চিনিয়ে দিতে পারে--তার অমূল্য মাতৃস্নেহই ’ যে-সময়ে রাধারাণী দত্ত ছোটণগল্পে একক নারীর অসম্পূর্ণ জীবনচিত্র আকছেন বিভিন্ন দিক থেকে, সেই সময়ে তার প্রবন্ধগুলিতেও তিনি তুলছেন সমাজে স্ত্রী- পুরুষের অবস্থান নিয়ে, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে, নানান গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। প্রমথ চৌধুরী রাধারাণী দেবীর কাছে অনুযোগ করেছিলেন, বাঙালি মেয়েদের রচিত সাহিত্যে নারীকণ্ঠ শোনা যায় না, তারা পুরুষের স্বরের অনুকরণ করেন। এরই উত্তরে জন্ম হয়েছিল 'অপরাজিতা দেবী'র নারীকণ্ঠের কবিতার। রাধারাণী দত্তের এই গল্প এবং ল্রবন্ধগুলি পড়তে পড়তে আমার মনে পড়ছে প্রমথ চৌধুরীর সেই কথাটি-_ যেহেতু এখানে উচ্চৈঃস্বরে ধ্বনিত হয়েছে বাংলার নারীকণ্ঠ। প্রতিটি রচনায় [১৬]



Leave a Comment