মেঘ জীবনের তৃষ্ণা | Megh Jiboner Trishna

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
হাতের মুঠি ঘেমে উঠছিল পবনের, তার দুবলা শরীরটা কাপছিল থরথরিয়ে। হরিয়ার কথা-বার্তায় অহষ্কারের মিশেল, চিবিয়ে চিবিয়ে বিকৃত কণ্ঠে সে বলল, চাম আমি দেব না; যা পারিস কর গে AT স্স্টাম দেবা না? -_না, দেব না। দু' হাত দিয়ে সজোরে ঠেলা মেরে পবনকে সরিয়ে দিতে চাইল হরিয়া। পবন তবু সরল না। হরিয়া বিকৃত গলায় বলল, ধর্মাবাবুর টাকা কোথায়? তার টাকা শোধ না করলে এ চাম তোরা পাবি না। -_র্মাবাবুর ধার ধর্মাবাবুই বুঝবে, তাতে তোমার এত মাথা ব্যথা কেন? -_মাথা থাকলেই ব্যথা হয়, এ তো সোজা কথা। হরিয়া কপালে তাজ ফেলে শয়তানের ঢঙে হাসল, বাবু আমাকে ভাগাড়ে পাঠিয়েছে। বাবু মানুষ, তাই চাম ছুঁতে পারবে না। তাই বাবুর হয়ে আমি এসেছি। -কাক হয়ে তুমি কাকের মাসে খাবা? -_ক্ষিদে লাগলে পুরো দুনিয়া আমি খেয়ে ফেলব। -__তোর এত ক্ষিদে? ব্রজবুড়ার কথা শুনে হরিয়ার চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসে আগুন, সে আবার ঝাপিয়ে পড়তে চায় ব্রজবুড়ার উপর। বিপদ বুঝে লাঠি বাগিয়ে দীড়ায় পবন। হামাগুড়ি দেওয়া শেয়ালের মত ব্রজবুড়ার দিকে এগিয়ে যায় AAA | তাকে sia দেবার কেউ নেই। সে যেন অপ্রতিরোধ্য ঝড়। পবন আরও শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে লাঠি। ব্রজবুড়া কাকুতি-মিনতি করে বলে, হরিয়ারে, দে আমার চামটা ঘুরোন দে। এঁ চামের উপর আমার পুরো সংসার তাকিয়ে আছে। -__ বললাম তো দেব না। যা পারো করো গে যাও। আমার কাছে নাকে কেঁদে কী হবে? যা বলার ধর্মবাবুর পা ধরে বল গে যাও। হরিয়ার কথাগুলো যেন aad তীর, ব্রজবুড়ার বুক এফৌড়- CHG করে চলে যায়। ব্রজবুড়া তবু কাকুতি-মিনতি করে বলে, দে বাবা, চামটা দে। কত কষ্ট করে চামটা আমি ছাড়ালাম-_ -চাম Al? এই নাও-_। বিকট হেসে হরিয়া চাম-পুটুলিটা ছুঁড়ে দেয় ভাগাড়খেগো কুকুরগুলোর দিকে। চোখের পলকে হামলে পড়ে কুকুর। চামড়ার প্রিয় গন্ধে তারা ভোজবাড়ি সওয়ার আনন্দে মেতে ওঠে। নিঃস্ব চোখে সব দেখতে থাকে ব্রজবুড়া। চোখের জলে তার তোপড়ান গাল ভিজে যায়। এ দৃশ্য AQ হয় না পবনের। সে লাঠি বাগিয়ে তাক করে মারে হরিয়ার মাথায়। ঠোঙা ফাটানোর মত শব্দ হয় একটা। তারপর শুকনো মাটিতে লুটিয়ে পড়ে হরিয়া। রক্ত মেশে ধানের মাঠে। টুটিছেঁড়া মোরগের মত ছটফট করে সে। পবন কালবিলম্ব না করে ছুটে যায় চামড়ার দখল নিতে। ব্রজবুড়া সংজ্ঞাহীন হরিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, এ কী করলি রে পবনা? একটা চামের জন্য হরিয়াকে তুই---কথা শেষ হল না ব্রজবুড়ার, তার আগেই ভয়ে বুজে এল গলা। দম ধরে দাঁড়িয়ে ছিল পবন, ফুঁস করে শ্বাস ছেড়ে সে বলল, ওকে আমি মেরেই ফেলব। যে তোমার বুকের উপর চড়ে বসে চাম ছিনিয়ে নেয় তাকে কি আমি ফুল দিয়ে পুজো করব? তার মাথা আমি লাঠির ঘায়ে ফাটিয়ে দেব। তাতে আমার যা হয় হোক! ব্রজবুড়া ফ্যাকাসে গলায় বলল, তুই পালিয়ে যা পবন। হরিয়ার কিছু হলে গাঁয়ে পুলিশ আসবে। তুই ধরা পড়ে যাবি। মেঘ-২ ১৭



Leave a Comment