গল্পসমগ্র ৩ | Galpasamagra 3

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
তিনকড়ি হাসেন-_ কালের ইচ্ছা | ঘড়ির দোকানের AM SPA আবার জমে উঠেছে। জীবনবাবু আসেন, অনাথবাবু আসেন, এবং আরও অনেকে আসে | সকলেই সন্দেহ করেন, যদিও সেই সন্দেহ নিয়ে কেউ আলোচনা করেন না, তিনকড়ির স্ত্রী বোধহয় আর আসবে না । আসবার হলে কি এই এক বছরের মধ্যে ASS একবারও আসতো না ? কিন্তু তিনকড়ির মুখের দিকে তাকালে মনে হয়, ওরই মনে কোন সন্দেহ নেই । বেশ নিশ্চিন্ত মনে, সেই গম্ভীর মুখ, আর মাঝে মাঝে মুখের উপর সেই শাস্ত হাসি টেনে নিয়ে কথা বলেন তিনকড়ি | শুধু দিন দিন রোগা হয়ে যেতে থাকেন তিনকড়ি 1 কোন অসুখ নেই, তবু গাছের ভাঙা ডালের মতো শুকিয়ে শীর্ণ হয়ে যাচ্ছেন ৷ কলপ ক্ষয়ে গিয়ে লাল হয়ে গিয়েছে তিনকড়ির যে মাথার চুল, সেই মাথার চুল এইবার যেন দিনে দিনে ফিকে হয়ে শেষে একেবারে সাদা হযে যায় । পাড়ার ছেলেরা আড়ালে আড়ালে বলে-_ এইবার সত্যিই মানিয়েছে তিনকড়িদাকে, একেবারে খাঁটি কালপুকষ | Bay আনেন, তিনকড়ির শ্বশুববাড়ি কাশীপুরে । তবু এই Gs বছরের মধ্যে, টালিগঞ্জের এই বাড়ি আর দোকানের ঝাঁপ একটি দিনের মতো বন্ধ রেখে একবারও কাশী পুর ঘুরে এল না তিনকড়ি ৷ অনাথবাবু বলেন-_ কিন্তু প্রতি মাসে বত্রিশ-চল্লিশটা টাকা কাশীপুরে স্ত্রীর কাছে ঠিক পাঠিযে দেয় তিনকড়ি, সে খবর জানেন তো ? -জানি | একটু বিস্ময় প্রকাশ করেন জীবনবাবু | টালিগঞ্জের গলির ভিতর দিয়ে শীতের হাওযা বযে যায় । বৈশাখের জ্বালাও লাগে । আর বর্ষার জলে গলির কাদা পিছল হয়ে যায় । তিনকডির নিকেল-ফ্রেমেব চশমা তেমনই নাকের কাছে ঝুলতে থাকে, কাজ করেন তিনকড়ি | ত্রিশ বছব বযসেব টাইপ-পীসে ঠিক নিয়মমত দম দিয়ে এবং কানের কাছে তুলে নিযে শব্দ শোনেন, টিক-টিক-টিক, কালের ইচ্ছায় কত শুভক্ষণ আসছে আর যাচ্ছে, শুনতে পান তিনকডি | তিনকড়িকে একদিন হাঁসফাঁস করে হাঁপাতে দেখে প্রশ্ন করেন সান্ধ্য বৈঠকের জীবনবাবু-_ এ কি হলো তিনকড়ি ? তিনকড়ি হাসেন-_ কালের ইচ্ছায় যা হয়, তাই হযেছে জীবনবাবু । একদিন মুখ খুলে বলেই ফেলেন অনাথবাবু-_ কাশী পুরের ব্যাপার কি তিনকড়িবাবু ? উনি আসবেন কবে ? কাচের CHACHA মতো দুটো চোখ তুলে আস্তে আস্তে হাসেন তিনকড়ি 1 --কাল সহায় হলেই আসবেন | আবার ঘাড় ঝুঁকিয়ে খুটখাট করে কাজ করেন তিনকড়ি | এবং নিজের মনেই, বিড়বিড় করেন-_ কাল পূর্ণ না হলে কেউ আসে না, যায়ও না জীবনবাবু আর অনাথবাবু ওঠেন ৷ হঠাৎ মুখ ঘুবিয়ে তাকান তিনকড়ি 1— আমিও যাব। অনাথবাবু হেসে ওঠেন-_ কোথায় ? কাশীপুর ? তিনকড়িও যেন গম্ভীর মুখের একটা শীর্ণ হাসি চেপে চেপে বললেন-_ ভোর পাঁচটা তিন মিনিটটা খুব শুভক্ষণ | -_এত ভোরে ড্রাম পাওয়া যাবে তো অনাথবাবু ? জীবনবাবু বলেন-_ বাস পাবেন | রাত দশটাও পার হয়নি | জীবনবাবু ছুটে এসে তিনকড়ি দত্তের দোকানের দরজার কাছে. ১৮



Leave a Comment