চিত্র-চরিত্র [সংস্করণ-১] | Chitra-charitra [Ed. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
চিত্র-চরিত্র গড়িয়া উঠিয়াছিল। এই জ্ঞানকৈবল্যের sean warfare, ফরাসীবিপ্লবের অধিষ্টাত্বী দেবতা Reason—Reason-44 আহ্বায়কগণ, ভণ্টেয়ার ও এনসাইক্লোপিডিস্টগণ মূলত জ্ঞানমাগাীয় সাংক। ইহাদেরই সাধনা ইংরেজি সাহিত্য ও দর্শনের পথে, ইংরেজের সহিত ভারতবর্ষে আসিয়া পৌছিয়াছিল। এই সময়কার বাঙলা দেশে ছুইদল ইংরেজ প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা পাইতেছিল--একদল কেরি, মার্শম্যান প্রভৃতি মিশনারি; অন্যদল হেয়ার, ডিরোজিও প্রভৃতি শিক্ষাবিদ । প্রথম যুগের মিশনারিগণ আদৌ উল্লেখযোগ্য কোন প্রভাব বিস্তার করিতে পারেন নাই, অপরপক্ষে হেয়ার ও ডিরোজিও সেকালের শিক্ষিত ও শিক্ষালাভেচ্ছুগণের চিত্তে তুমুল তুফান তুলিয়াছিলেন। জ্ঞানমার্গের সাহায্যেই ইহা সম্ভব হইয়াছিল ৷ কেরি অবশ্য বাঙলা সাহিত্যের আদি যুগে প্রভাব বিস্তার করিয়| গিয়াছেন- কিন্তু সে তো জ্ঞানমাগীয় প্রভাব। মনে রাখিতে হইবে যে, মূলে কেরি এদেশে খৃ্ধর্ম প্রচার করিতেই আসিয়াছিলেন-_ কিন্তু কার্য্যত তিনি বাঙলা a9 সাহিত্য গড়িয়া তুলিতে সাহায্য করিলেন | প্রধানত হেয়ার ও ডিরোজিওকে অবলম্বন করিয়াই এদেশে জ্ঞানমাগীয় নাস্তিক্য প্রসারিত হইয়াছিল । ইহাদের প্রধান প্রধান ছাত্রগণ সকলেই জ্ঞান-কৈবল্যের সাধক-_-এবং অনেকেই নাস্তিক ছিলেন। way ইহাদের ছাত্রদের অনেকে খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন-_ কিন্ত তাহা ধর্মানুরক্তির ফল নহে। গুরুত্বয়ের শিক্ষার প্রভাবে তাহাদের চিত্তে একটা শূন্যতার xe হইয়াছিল, হিন্দুধর্মে বিশ্বাস শিথিল হইয়াছিল, দেবেন্দ্রনাথের ব্রাহ্মধর্মও প্রতিষ্ঠিত হয় নাই, সেই শূন্য চিত্তমন্দিরে তাহারা, হেয়ার-ডিরোজিওর ছাত্রগণ Reason-ct প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন কিন্তু Reason নিজেও একটি শূন্যতা, তাহাতে বেদীপূরণ হয় না, সেই শূন্যপ্রায় বেদীর উপরে তাহারা অনেকে খৃষ্টধর্মকে স্থাপন করিয়াছিলেন। ইহা আদৌ অত্যাশ্চর্য্য নয়। ফরাসী বিপ্লৰাস্তে Reason-aq মন্দির ফরাসী দেশে খৃইধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। তাহারই RRA, FAST একটা কাণ্ড এদেশের তৎকালীন ইংরেজি শিক্ষিতদের চিত্তে ঘটিয়] গিয়াছিল। হেয়ার-ডিরোজিওর ছাত্রগণ জ্ঞানকৈবল্যের অতীত কিছু মানিতেন না, তাঁহারা বুঝিয়া লইয়াছিলেন যে, জ্ঞান শক্তিম্বরপ--“নলেজ ইজ পাওয়ার*। নবলন্ধ অস্ত্রধানার মতো WAT জ্ঞানকে কেবল আঘাত করিবার কাজেই তাঁহারা ব্যবহার করিয়াছিলেন fee জ্ঞানকৈবল্য বা 898300-এর বিপদ এই যে, তাহার পরিণাম উৎকট ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র বা 'ইনডিভিজুয়ালিজম্‌*। করুণায় ও সমবেদনায় TRI WAC মিল, বুদ্ধিবৃত্তিতে মানুষে মানুষে ভেদ। সেই যুগের এই ব্যক্তি-স্বাতস্ত্র্যের ধাক্কা সমস্ত উনবিংশ শতকের মধ্য দিয় সঞ্চারিত হইয়৷ আসিয়াছে এবং আজ ATS তাহার স্থফল ও কুফল দুই-ই আমর] ভোগ করিতেছি। পরবর্তী উনবিংশ শতক আর খৃষ্ধর্মকে গ্রহণ করে নাই; নিছক জ্ঞানকৈবল্যকেও তেমন করিয়া স্বীকার করে নাই-_কিন্তু ব্যক্তি-স্বাতস্ত্রোর নেশাকে সে এড়াইতে পারিয়াছে বলিয়া মনে হয় না। উনবিংশ শতকের বাঙালীর গৌরবের ও নিক্ষলতার দুইয়েরই মূলে আছে- প্রচণ্ড ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র । বাঙালী একক কাজ করিতে পারে, দল বাধিলেই গোলমাল পাকাইয়া ফেলে। যে-কাজ একাকী সম্ভব-_



Leave a Comment