প্রমীলা গল্প সংগ্রহ | Pramila Galpa Sankalan

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
সেখানে রম্য-সাহিত্য রস সৃষ্টির কোনো অবকাশই ছিল না। রামমোহন রায় ছিলেন প্রধানত যোদ্ধা। শিল্পী নন। তবে এ-কথা স্বীকার করতেই হয়, তার গদ্যেই বাঙালির প্রথম মানসমুক্তি ঘটেছে। এটা এঁতিহাসিক সত্য। ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৭৮৭-১৮৪৮) লেখালেখির প্রধান ও প্রত্যক্ষ উদ্দেশ্য ছিল সমাজের হিতসাধন। তবু তিনিই সর্বপ্রথম সাহিত্য রচনার মানসে আখ্যানধর্মী নকসা লেখেন | সেই রচনাগুলিতেও আমরা যথেষ্ট গল্পরসের সন্ধান পেয়েছি। সেগুলি হয়ে উঠেছে এক একটি সামাজিক গল্প। যেমন অসংখ্য ছোটো ছোটো আখ্যানধর্মী সামাজিক গল্পের ফুল দিয়ে একটি অখণ্ড মালা গেঁথেছিলেন প্যারীাদ মিত্র (১৮১৪-১৮৮৩) তার 'আলালের ঘরের দুলাল*”-এ। বিদ্যাসাগরের (১৮২০-১৮৯১) সকল কর্মেই প্রত্যক্ষ প্রেরণা জুগিয়েছে তার গভীর সমাজসচেতনতা-বোধ। তার ARIA রচনার ক্ষেত্রেও এটা সমভাবে AG | ছোটোদের জন্য লেখা তার 'আখ্যানমঞ্জরী'-তেও এই সমাজ-সচেতনতার ছাপ সুস্পষ্ট। ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের (১৮২৭-১৮৯৪) রচনাতেও আমরা পেয়েছি কাহিনিধর্মী গল্প-রস। ছোটোগল্পের পূর্বাভাস : গল্প : আধুনিক বাংলা ছোটোগল্প একাত্ভতই উনিশ শতকের দান। এই শতাব্দীর ব্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (১৮৪৭-১৯১৯), স্বর্ণকুমারী দেবী (১৮৫৫-১৯৩২), নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৮৬১-১৯৪০) রবীন্দ্রনাথের (১৮৬১-১৯৪১) সমসাময়িক কালে গল্প লিখেছেন। তবে যথার্থ অর্থে আধুনিক ছোটোগল্প বলতে যা বুঝি তা বাংলা সাহিত্যে সর্বপ্রথম এনেছেন রবীন্দ্রনাথই। বাংলা সাহিত্যে প্রথম ছোটোগল্পের কিছুটা লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে শ্রী As bs রচিত 'মধুমতী' গল্পে। 'বঙ্গদর্শন' পত্রিকার জ্যৈষ্ঠ মাসে (২য় খণ্ড, ২য় সংখ্যা) গল্পটি প্রকাশিত (১৮৭৩/১২৮০) হয়। ইনি ছিলেন বনঙ্কিম-সহোদর শ্রী পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বলা বাহুল্য 'মধুমতী” যথার্থ অর্থে ছোটোগল্প হয়ে ওঠেনি | 'বঙ্গদর্শন'-এ রচনাটিকে “উপন্যাস' নামে পরিচিত করা হয়েছে। মূল গল্পাংশে বন্কিমের বিভিন্ন কাহিনির প্রভাব অনায়াসে চোখে ATG | বিন্যাস ও ভাযাওঙ্গির ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য। অবশ্য কারও কারও মতে বাংলা সাহিত্যে প্রথম ছোটোগল্পের লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে সঞ্জাবচন্দর চট্টোপাধ্যায়ের (১৮৩৪-১৮৮৯) “ভ্রমর” পত্রিকায় (১২৮১/১৮৭ ৪) প্রকাশিত AMIE BYR’ ও “দামিনী' নামের গল্প দুটিতে | কিন্তু এ দুটিও ঠিক ছোটোগল্প নয়। 'নভেল' শ্রেণির রচনা। এর মধ্যে অবশ্য 'দামিনী' গল্পটিতে ছোটোগল্পের কিছুটা সম্ভাবনা ছিল | তবুও এগুলিকে ঠিক ছোটোগল্প না বলে, ছোটোগল্পের পূর্বাভাস বললেই যথার্থ বলা হয়। ছোটোগল্পের আবির্ভাব : বাংলা সাহিত্যে ছোটোগল্পের আবির্ভাব নিতান্ত আধুনিক কালের না। পৃথিবীর সাহিত্যের ইতিহাস সন্ধান করলে অতিপ্রাচীন কাল থেকেই গল্প পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সচেতনভাবে “ছোটোগল্প' নামক একটি বিশিষ্ট রূপ-সৃষ্টি শুরু হয় উনবিংশ শতাব্দীতেই | তাই ছোটোগল্প একেবারেই আধুনিক যুগের সন্তান প্রাগাধুনিক যুগে আধুনিক ছোটোগল্পের পূর্বপুরুষ সন্ধান নিষ্ফল প্রয়াস মাত্র। আসলে প্রশ্নমুখর আত্মানুসন্ধানী ব্যক্তিত্বের উদ্বোধন না হলে 'ছোটোগল্পের জন্ম হতে পারে না। তাই, ছোটোগল্পের জন্ম একেবারে আধুনিক যুগে। শিল্পবিপ্লবের পর। উনবিংশ শতাব্দীতে | ছোটোগল্পের জন্ম উনবিংশ শতাব্দীর এক ক্রম-অগ্রসরমান জীবনধারায়। CACHAN ইতিহাসগত সূচনা হল উত্তর আমেরিকায়, ওয়াশিংটন আরভিং-এর '“রিপভ্যান উইঙ্কল', এডগার আ্যালান পো-র WHS বাউন্ড ইন এ বটল”, আর নাথানিয়েল হথর্নম-এর “সিলেশ্চিয়েস ওমনিবাস*-এ।



Leave a Comment