ঘুমভাঙানি | Ghumbhangani

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
২০ ঘুমভাঙানি 'শ্রেণীশত্রু খতম' ইত্যাদি শব্দ Ger পড়ে পাতা ACW’ ছড়ার মত জনপ্রিয়তা পেয়ে মুখে মুখে ঘুরছিল বললে কম বলা হয়, “ঘৃণা” ‘oy’, বাস্তবে ঘটতে শুরু করেছিল। সাপের গলা টিপে উগরে তোলা বিষের মত ঘৃণায় নীল হয়ে গিয়েছিল সময়ের শরীর, বোধ-বিচার হারানো পাগলামিতে যত্রতত্র তা ছোবল দিচ্ছিল এবং “খতম' শব্দটা বীজমস্ত্রের মত জপ করা শুরু হয়েছিল। ছাতু আর ছাই ওড়ানোর সেই পরব থেকে বারো-তেরো বছর বয়সে “মাইয়া মানুষ' হওয়ার অপরাধে বাদ পড়ে তার মনের মধ্যে প্রতিবাদের যে বীজ উসখুস করে উঠেছিল, তার অস্ফুট, সবুজাভ শরীর শুকিয়ে যাওয়ার বদলে ক্রমশ যে সতেজ, পুষ্ট হতে থাকল, তার কারণ, পৃথিবীর গভীরতর কোনও সুখ, না অসুখ বলা মুশকিল। তবে “MVM মানুষেরও শত্রু হয়”, এই বোধ তাকে প্রবল আত্মবিশ্বাস দিল। | CRA যে সব মেয়ে, নির্মলা কৃষ্ণমূর্তি, সম্পূর্ণা, সরস্বতী আম্মা, সমাজ বদলের যুদ্ধে শহিদ হয়েছে, এমনকী মেদিনীপুর জেলে আটক কলকাতার মেয়ে জয়শ্রী রানা পর্যন্ত, সবাইকে অনতিবিলম্বে ছুঁয়ে ফেলতে চলেছে সে অনুভব করে। তার মনে অচেনা জেদ আর কঠিন সন্কল্প জেগে ওঠে। কলেজের বাইরে নিজের এলাকার সমবয়সী বন্ধুরা, এমনকী বয়স্করা, অভিভূতের মত তাকে নতুন চিন্তার বার্তাবহ হিসেবে মেনে নেয়। নানা রঙের প্রতিপক্ষ, এলাকায় কম ছিল না। তারা বুঝতে পারে দু'বেণী বাঁধা ফরসা, ছিপছিপে, কলেজে পড়া এই মেয়ে, তাদের পায়ের তলার মাটি ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে। তাদের সমর্থনের বৃত্ত যত ছোট হচ্ছে, তত ভিড় বাড়ছে খুকুমণিকে fara! “VEY নামেই পাড়াপড়শিরা ছেলেবেলা থেকে তাকে চিনত। ‘HM’ নামটা তারা জেনেছিল পরে। তখন সে ছোটখাট মিছিল নিয়ে বেরোতে শুরু করেছে। মিছিলের সামনে থাকছে নিজে। সমর্থকদের ঘরে প্রায়ই গ্রুপ বৈঠক করছে। কলকাতা, শ্রীরামপুর, বালি, আসানসোল থেকে নেতা গোছের কাউকে ধরে এনে হাজির করছে সেইসব বৈঠকে। তাদের পাড়ায় তখনই এক বিকেলে এমন এক্টা ঘটনা ঘটল, যার জন্যে সে তৈরি ছিল না। প্রতিপক্ষের এক তরুণ কর্মী, স্কুলমাস্টার, সত্য ঘোষালের ছেলে, বারিদ, শেষ বিকেলে খুন হয়ে গেল । কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে মুড়ি, চা খেয়ে জয়ার তখন হিমানির সঙ্গে পাড়ায় বড় জনসভা করার বিষয়ে কথা বলছিল। ঝড়ের মত জিয়াদ এসে খুনের খবরটা দিয়ে তাকে বলেছিল, বাড়ি থেকে তুই পালা। বারিদের “বড়ি নিয়ে ওরা মিছিল করে তোদের বাড়ির দিকে আসছে। কয়েক জনের সঙ্গে 'আর্মস' আছে। তোর খোঁজে এ বাড়িতে ওরা চড়াও হবে। আমি যাই। আমাকেও গা-ঢাকা দিয়ে কয়েকদিন থাকতে ACAI জিয়াদের কথাগুলো জয়া পরিষ্কার বুঝতে পারল না। কিছুটা ধাধা খেল সে। কয়েক মিনিট বাদে ছোট ভাই সুকুমার বাড়িতে এসে, 'সাঙ্ছাতিক এক কাণ্ড ঘটেছে' বলে যে বিবরণ শোনাল, তা থেকে জয়ার বুঝতে বাকি থাকল না জিয়াদের



Leave a Comment