প্রবাসী গল্পসম্ভার | Prabasi Galpasambhar

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
প্রবাসী গল্পসম্ভার শিব যখন তাঁর ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে দারিদ্যগৌরবে ad তখন খবর পান না, যে লক্ষ্মী কোন্‌-একসময়ে সেটা নরম রেশম দিয়ে বু'নে রেখেছেন, তা'র সোনার সুতোর দামে সূর্য্যন্ষত্র বিকিয়ে যায়। যখন ভিক্ষের অম্ন খাচ্ছি ব'লে সন্ন্যাসী নিশ্চিন্ত, তখন জানেন না যে, অন্নপূর্ণা এমন মসলায় বানিয়েছেন A, দেবরাজ প্রসাদ পাবার জন্যে নন্দীর কানে কানে ফিস্‌ ফিস্‌ করতে থাকেন। আমার হ'ল এই দশা। শয়নে বসনে অশনে পিসিমার সেবার হস্ত গোপনে ইন্দ্রজাল বিস্তার করতে লাগল, সেটা দেশাত্মবোধীর অন্যমনস্ক চোখে পড়ল না। মনে মনে ঠিক দিয়ে ব'সে আছি, তপস্যা আছে অস্ষু্ন। চমক ভাঙল, জেলখানায় গিয়ে। পিসিম! ও পুলিসের ব্যবস্থার মধ্যে যে একটা ভেদ আছে, কোনো- রকম অছ্বৈতবুদ্ধিদ্বারা CA সমন্বয় করতে পারা গেল না। মনে-মনে কেবলই গীতা আওযড়াতে লাগলেম, “নিস্ট্রগুণ্যো ভবার্্জুন।” হায়রে SAR, Seta যে পিসিমার নানাগুণ নানা উপকরণ-সংযোগে BRAC পেরিয়ে একেবারে পাকযস্তরে প্রবেশ করেছে, তা জানতেও পারিনি। জেলখানায় এসে সেই জায়গাটাতে বিপাক ঘটতে লাগল। ফল হ'ল এই যে ব্রাঘাতছাড়া আর কিছুতে যে শরীর কাবু হ'ত না, সে পড়ল অসুস্থ হয়ে। জেলের পেয়াদা যদি বা ছাড়লে, জেলের রোগগুলোর মেয়াদ আর ফুরোতে চায় না। কখনো মাথা ধরে, হজম প্রায় হয় না, বিকেল-বেলা জ্বর হ'তে থাকে। ক্রমে যখন মালাচন্দন হাততালি ফিকে হ'য়ে এসেছে, তখনো এ আপদণগুলো টনটনে হ'য়ে রইল। মনে মনে ভাবি, পিসিমা তো তীর্থ করতে গেছেন, তাই ব'লে অমিয়াটার কি ধর্স্মজ্ঞান নেই? কিন্তু দোষ দেবো কাকে? ইতিপূর্বে অসুখে বিসুখে আমার সেবা করবার জন্যে পিসিমা তা'কে অনেকবার উৎসাহিত করেছেন--আমিই বাধা দিয়ে বলেছি, ভালো লাগে ati পিসিমা বলেছেন, “অমিয়ার শিক্ষার জন্যেই বলচি, তোর আরামের জন্যে aa” আমি বলেচি, হাসপাতালে নার্সিং করতে পাঠাও না।” পিসিমা রাগ ক'রে আর জবাব করেন নি। আজ সুয়ে শুয়ে মনে মনে ভাবচি, “না হয় একসময়ে বাধাই দিয়েচি, তাই ব'লে কি সেই বাধাই মানতে হবে। গুরুজনের আদৈশের পরে এত নিষ্ঠা এই কলিযুগে!” সাধারণত নিকট সংসারের ছোটোবড়ো অনেক ব্যাপারই দেশাত্মবোধীর চোখ এড়িয়ে যায়। কিন্তু অসুখ ক'রে পড়ে আছি ব'লে আজকাল দৃষ্টি হয়েছে AIA লক্ষ্য করলেম্‌ আমার অবর্তমানে অমিয়ারও দেশাত্মবোধ cla চেয়ে অনেক বেশি প্রবল হয়ে উঠেছে। ইতিপূর্ব্বে আমার দৃষ্টান্ত ও শিক্ষায় তা'র এত অভাবনীয় উন্নতি হয় নি। আজ অসহযোগের SH আবেগে সে কলেজতাগিনী; ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করতেও তা'র হৃৎকম্প হয় না; অনাথাসদনের bra জন্যে অপরিচিত লোকের বাড়ীতে গিয়েও সে ঝুলি ফিরিয়ে বেড়ায়। এও লক্ষ্য ক'রে দেখলেম, অনিল তা'র এই কঠিন অধ্যবসায় দেখে তাকে দেবী ব'লে ভক্তি করে---ওর জন্মদিনে সেই ভাবেরই একটা তাঙা ছন্দের স্তোত্র সে সোনার কালীতে চাপিয়ে ওকে উপহার দিয়েছিল। আমাকেও এধরনের একটা কিছু বানাতে হবে, নইলে অসুবিধা aoe! পিসিমার আমলে চাকরবাকরগুলো যথানিয়মে কাজ করত, হাতের কাছে কাউকে না কাউকে পাওয়া TS | এখন এক প্লাস জলের দরকার হ'লে আমার মেদিনীপুরবাসিনী Shay জলধরের অকনশ্মাৎ অভত্যাগমের প্রত্যাশায় চাতকের মতো তাকিয়ে থাকি; সময় মিলিয়ে ওষুধ খাওয়া সম্বন্ধে নিজের ভোলা মনের পরেই একমাত্র ভরসা। আমার চিরদিনের ন্লিয়মবিরুদ্ধ হ'লেও রোগশয্যায় হাজিরে দেওয়ার জন্যে অমিয়াকে দুই একবার ডাকিয়ে এনেচি। কিন্তু দেখতে পাই, পায়ের শব্দ শুনলেই সে দরজার দিকে চমকে তাকায়, কেবলি উসখুস করতে থাকে। মনে দয়া হয়, বলি, “অমিয়া আত্ম নিশ্চয় তোদের মীটিং আছে।” অমিয়া বলে, “তা হোক না দাদা, এখনো আর-কিছুক্ষণ””-_আমি বলি, “না, না, সে কি হয়? কর্তব্য সব HCA” কিন্তু প্রায়ই দেখতে পাই, কর্তব্যের অনেক আগেই অনিল এসে উপস্থিত হয়। তাতে অমিয়ার কর্তব্য-উৎসাহের পালে যেন দমকা হাওয়া লাগে, আমাকে বড়ো বেশি-কিছু বলতে হয় না। শুধু অনিল নয়ন, বিদ্যালয়-বর্ধক আরো অনেক উৎসাহী যুবক আমার বাড়ির একতলায় ১৬



Leave a Comment