গল্প সমগ্র [খণ্ড-২] | Galpa Samagra [Vol. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
গৃহিণী হলেই জীবন-স্বপ্নে বারোটা বেজে গেল। তার চাইতে কবিদের অশরীরী প্রেম, অতীন্দ্রিয় মিলন-_ আমি মস্তব্য করলাম, PIA AAT | বিমলেন্দু ক্ষেপে উঠল। নাটক ক্রমশ মেলোদ্রামার রূপ নিতে লাগল 3 বৌ, ছেলেমেয়ে, বাঁধা রুটিনের চাকরি, PRIS মতো জীবন | তার চাইতে অনেক ভালো একটা খোলা আকাশ, একটা অপার দিগন্ত, মিষ্টি, মহুয়ার ফল, কালো সাঁওতালের মেয়ে-_ হাসি চাপাটা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল। কলকাতার বইরে জীবনে বিমলেন্দু কখনো পা বাড়িয়েছে কিনা জানি না। হয়তো বড় জোর মধুপুঃ দেওঘর অথবা পুরী, কিংবা শ্রীশীবারাণসীধাম। সুতরাং অবারিত Mow আর মহুয়া ফলের স্বপ্ন দেখাটা তার স্বাভাবিক অধিকার। বললাম, ভুল PACT | মহুয়ার ফল অত মিষ্টি নয়, একটু তেতো। অবশ্য তাতে ক্ষতি নেই, সে কথা যাক। আসলে প্রেমের পরিণতিই হচ্ছে পূর্ণগ্রাস---ওর একমাত্র উপমা ভেনাস ফ্লাই ট্র্যাপ। সোপেনহাওয়ের পড়লে অনেক জ্ঞান লাভ করতে পারবে! কিন্তু শুধু মানুষের প্রেম নয়- প্রকৃতির cae ওই রকম সর্বগ্রাসা। --আফ্রিকার জঙ্গলের কথা বলছ? -_না। বাংলা দেশের মাঠঘাট, তার অবারিত fiw, তার ধানের ক্ষেত, তার বনতুলসীর ঝাড়-_তার শরতের সোনা-ঝরানো আকাশ-_ — Sab} বিশদ করো। আমি বলতে শুরু করলাম। কৈশোরের অনেকগুলো দিন আমার কেটেছে বাংলা দেশের একটুকরো পাড়াগীয়ে! মনে রেখো, কৈশোরের কথা বলছি। যে বয়েসে মানুষের জীবনে প্রথম নেশার মতো প্রথম প্রেম আবির্ভূত হয়, যখন চোখের সামনে পৃথিবীটাকে আরব্য-উপন্যাসের মতো বলে মনে হতে ATH | যখন জ্যোৎস্না রাত্রে ঘুম ভেঙে গেলে জানলার দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে ইচ্ছে করে, জলের ঝাপটায় চোখমুখ ভিজে গেলেও ভালো লাগে বৃষ্টি পড়া দেখতে | ঘাসের ছোট ছোট ফুলগুলোর সঙ্গে পর্যন্ত পরিচয় থাকে, সদ্য-ফোটা আনন্দের বুনো গন্ধ পর্যন্ত রক্তে রক্তে কথা কইতে চায়। সেই বয়েসে বাংলা দেশের পাড়াগীয়ে অনেকগুলো দিন আমি কাটিয়েছিলাম। জায়গাটা কোন এক অখ্যাত Sle লাইনের অখ্যাততর একটি স্টেশন। ঝিমিয়ে-চলা প্যাসেঞ্জার গাড়িগুলো পর্যন্ত সেখানে এক মিনিটের বেশি দাঁড়াত না। তিন-চার মাইল দূরের গ্রামগুলো থেকে যেসব যাত্রী আসত বা যে দু-চারজন নামত, সারাদিন-রাহ্রে APTA ঘণ্টা দেড়েকের বেশি তারা স্টেশনের নির্জনতায় fay ঘটাত না। তা ছাড়া বিপুল are নিঃসঙ্গ পৃথিবী | রাঙা মাটির টিলায় তালবীথির মর্মর। বহু দূরে ধুলোর কুয়াশা বুনে চলা গরুর গাড়ি | মাঝে মাঝে ভুট্টার ক্ষেত, বোরোধানের নিচু জমি। আকাশে উড়ে যাওয়া বুনো BA আর এক ফালি মরা নদী। দুপুরের রোদে ঝকঝকে নুড়ির ওপর বিছানো চকচকে একটা মিটার-গেজের লাইন, GUT ক্ষেতের পাশে বাক নিয়ে দৃষ্টির বাইরে মিলিয়ে গিয়েছে; তার এক ANT একটা জংশন স্টেশনে, আর এক পরাস্ত কোথায় গেছে জানা ছিল না, কল্পনা করা যেত দিল্লী, বোম্বাই, কাশ্মীর কারাকোরাম ১৪



Leave a Comment