কিন্নর মিথুন | Kinnor Mithun

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
২০ /কিন্নর মিথুন কিন্নরদের মধ্যে একটা প্রথা ছিল, অবৈধ প্রণয়ে যদি কোনও কুমারীকন্যা সম্ভানসম্ভবা হয় তাহলে একটি বিচারসভা বসে। সেই সভায় গ্রামের যুবক-যুবতীসহ প্রায় সকল মানুষকে উপস্থিত থাকতে হয়। সরপঞ্চ সন্তানসম্ভবা মেয়েটিকে প্রশ্ন করেন, সভামধ্যে কোন্‌ যুবক তোমার সম্ভানের জন্মদাতা? কুমারী Sai তখন তার প্রেমিক যুবকের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে। পঞ্চায়েত প্রধান যুবকটিকে প্রশ্ন করেন, তুমি কি এই অনাগত সন্তানের পিতৃত্ব স্বীকার কর? সাধারণত কিন্নরভূমিতে অসত্য ভাষণের আশ্রয় কেউ নেয় না। যুবক সত্য হলে স্বীকার করে নেয়। তখন সরপঞ্চের প্রশ্ন, তুমি কি কন্যাটিকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করবে? যদি যুবকটি সত্য স্বীকার করে কিন্নরীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে চায়, তাহলে সমস্যাটির সহজ সমাধান ইয়ে গেল। আর যদি সে সম্ভানসম্ভবা কন্যাটিকে গ্রহণ করতে না চায়, তাহলে সরপঞ্চের নির্দেশমতো কিছু মুক্তিপণ দিয়ে সে রেহাই পেয়ে যায়। ওই মুক্তিপণের অর্থ কন্যাটির মায়ের কাছে জমা থাকে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তখন তার দায়িত্ব গ্রহণ করে শিশুটির দিদিমা। এ ব্যবস্থায় অবৈধ সম্ভানের জননীর বিবাহে কোনও বাধা থাকে না। সমাজও তাকে সহজভাবে গ্রহণ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাড়া করে ফেরে ওই শিশুসম্তানটিকে। ওরা সমাজে স্থান পায় না। ওদের বলা হয় পুগ্লাং। এইভাবে পুগ্লাং ছেলেমেয়েদের জন্য আলাদা সমাজ তৈরি হয়। তারা সমাজের মূলআত্রোতের বাইরে ACH ছেলেরা সাধারণত ভেড়াচারকের বৃত্তি গ্রহণ করে অথবা খেত খামারের কাজে নিযুক্ত থাকে। মেয়েরা গৃহস্থালির কাজকর্ম করে, এইভাবে তাদের অন্নসংস্থান হয়। ATU মেয়ে পুরুষরা পরস্পরের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়ে সংসারধর্ম পালন করে। সমাজের মধ্যে থেকেও তারা সমাজবহির্ভূত। সরপঞ্চের কাছে যাওয়ার আগে FT মেয়ের সঙ্গে পরামর্শে বসলেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন এসে গেল মা, আর তো বসে থাকা যায় না। দুদান পরিবারে খোঁজ নিয়ে জানলাম, যুবরাজের এখন এদিকে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই এ ব্যাপারে যা করণীয় এখন আমাদের তা করতে হবে। নিলম বলল, তুমি প্রচার করেছ, একবছর ট্রেনিং-এর কাজে আমি সিমলা চলে গেছি। এখন তুমি সরপঞ্চের সঙ্গে এ বিষয়ে গোপনে পরামর্শ কর। তিনি একসময় আমার বাবার বন্ধু ছৈলেন। সাংলায় তিনি যদি পঞ্চায়েত সভা ডাকেন তাহলে কথাটা জানাজানি হয়ে যাবে, তখন মহারাজের সম্মান রক্ষাও হবে না। তার চেয়ে উনি যদি রামপুর বুশেহারে গিয়ে মহারাজের সঙ্গে পরামর্শ করেন তাহলে এ ব্যাপারে হয়তো একটা সুষ্ঠু সমাধান হতে পারে। কথাটা মনে ধরল কুশলার। সে নিজের হাতে তৈরি উলের একটা থেপাং বা টুপি নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি হাজির হল।



Leave a Comment