স্বর্ণকুমারী দেবী স্বতন্ত্র এক নারী | Swarnakumari Devi Swatantra Ek Nari

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
মহাশয়গণ, করুণ শ্রবণ। বাজপন্ষ্মী পাখীদের রাজা সে উড়িলে সব উড়ে যায়। কেশরী সে পশুদের রাজা সে লাফালে সকলে লাফায়। মাতাল যে বচন-বাগীশ সেই জন কথা কয় যবে মন দিয়া শোনে আর সবে।... আমাদের কলিকাতায় ফিরিবার দিন ত নিকটে আসিয়া পড়িল, এই চিঠিই হয়ত এখানকার শেষ চিঠি। আমার একজন ag গল্প করিয়াছেন দারজিলিং হইতে যাইবার সময় তিনি কীদিয়া গিয়াছিলেন, আমি ততদূর না বলিতে পারি. আমার দশাও তার কাছাকাছি বটে... একদিন আমরা জেল দেখিতে গিয়াছিলাম-_ জেলের বাহিরের দৃশ্য আমাদের কাছে নূতন না হউক, ভিতরের দৃশ্য আমাদের সম্পূর্ণ নূতন লাগিল, আমার ত এই প্রথম জেলখানায় প্রবেশ। ... সে দিন সন্ধ্যার কিছু পূর্বে আমরা বাড়ীর দিকে ফিরিলাম। জেলখানা ছাড়াইয়াও ক্রমাগত জেলখানার কথাই মনে পড়িতে লাগিল। আমাদের চারিদিকে মধুর সুন্দর দৃশ্য-_ আশে পাশে তরুশ্রেণী, তরুরাজির মধ্যে মধ্যে জলপ্রপাতের উচ্ছাস, সম্মুখে সুবর্ণমেঘচুড়- পাহাড়, মাথায় নীলাকাশ, নিম্নে শ্যাম-পর্বতের তরঙ্গ-- এই সুখকর শান্তিময় দৃশ্যের মধ্যে জেলের সেই দুঃখ কষ্ট পাপ তাপের চিত্রই মনে জাগিয়া উঠিতে লাগিল। ... বাড়ী পৌঁছিয়াও আমরা ঘরে থাকিতে পারিলাম না; সেই রাত্রে আমরা কয়জনে মিলিয়া মলরোডে যাত্রা করিলাম।... সূর্য্যালোকে কাঞ্চনজঙ্ঘার যেরূপ ঝলসিত জমাট মূর্তি দেখায়-- এখন জ্যোৎস্নালোকে তাহার স্বতন্ত্র শী, এখন কাঞ্চনজঙ্ঘার শ্রেণী মেঘের গায়ের উপর উজ্জ্বল সুদীপ্ত, তরল মেঘের মতই দেখাইতেছিল। ... আমরা যখন সেই নিস্তত্ধে সেই নির্জন পাহাড়তলে দাঁড়াইয়া টাদের দিকে চাহিয়াছিলাম, আমার মনে হইল-_ তখন আমরাও যেন চন্দ্রলোকের লোক হইয়া গিয়াছি।* * [পুবাতন 'ভারতী" গত্রিবার পাতা থেকে। সংকলক শুচিস্মিতা চন্দ্র]



Leave a Comment