মধ্যবিত্ত | Madhyabitta

গিয়ে পট্যাটো চিপ্সের প্যাকেট নিয়ে এল। চিপ্সের প্যাকেট এগিয়ে দিতে দিতে বলেছে-_-বইটা ভালই | ক্কি বল? আচমকা মনে হল মিতার, তার দুঃখের জগৎটা কি পাল্টে যাচ্ছে? জীবনের মানে হারিয়ে গিয়েছিল এখন যেন কেউ সেই জীবনের মূল্য মাপছে। নিরেট অন্ধকারে অনেক আলোর চক্মকি। তারা কি তাকে হাতছানি দিচ্ছে? Howie হলে বসেও গরম লাগছে। সমস্ত শরীরে ঝিম্ঝিমানি। মনের ভেতর এত কিসের উত্থালপাথাল? চেতনায় ফিরে এল। রজত বোসের সঙ্গে এতটা মেলামেশা কি ঠিক হচ্ছে? অতটুকু বয়সে সিনেমা দেখানোর অফার প্রত্যাখ্যান করেছিল। এখন বয়স বেশী বলে কি আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে? যুবক বয়সে রজত বোসের মুগ্ধ দৃষ্টির কথা ভুলে গেল কিভাবে! আর না। নিজেকে এবার সরিয়ে নিতে হবে। এতসব CSAS অভদ্র হতে বেধেছিল। বাধ্য ছাত্রীর মত রেস্টুরেন্টে ঢুকেছিল মিতা। চামচ দিয়ে সম্বরা ঘাটছিল রজত কিন্তু তার দৃষ্টি স্থির মিতার মুখের ওপর। কিছুটা বাধো বাধো স্বর। বলল A আসা দিনগুলো বড্ড মনে পড়ছে। মিতা নিজেও বুঝতে পারছিল স্মৃতির জালে সেও আটকা পড়ছে। জীবনের পরিণতি হয়ত অন্যখাতে ISS | অথচ এতদিন ধরে রজত স্যারের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোন স্মৃতি তাকে আলোড়িত করে নি কেন বুঝে উঠতে পারা যাচ্ছে না। আজকের ভিন্নতর পরিবেশই কি এর জন্য দায়ী? -__সেদিন তুমি রাজী থাকলে-_সামান্য থামল AVS | তারপর বলল-_আমরা দুজনেই কিন্তু বেঁচে আছি। আমাকে কেন যে তোমার ভাল লাগে নি সে প্রশ্ন আজও আমাকে হিট করে। frag হাসি হাসল সে-_-দেখতে কি আমি এতই খারাপ ছিলাম? সিনেমার টিকিট ফেরৎ দিয়েছিলে মনে আছে? রেস্টুরেন্টের কাটাচামচের শব্দগুলো ভয়াবহ, যেন বোম ফাটছে। কেন রজত বোস তাকে টোপ ফেলে এখানে নিয়ে এসেছে বোঝা যাচ্ছে। বেশী বয়সের এসব আখ্যান গল্পের মজা নিয়ে শোনা ছিল। রক্ত জমা হচ্ছে মুখে। আর নয়-_কড়া কড়া শব্দসমষ্টি গোছাতে ব্যস্ত হল মিতা। রজত বোসের মুখ থামে নি। ধোসা চিবোতে চিবোতে সে বলে চলেছে--বলছিলে না সেদিন, চলার পথে মাঝে মাঝে উঠে যায় অবরোধের পাঁচিল। ইচ্ছে করলে সে পাঁচিল তুমি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে পার। রাগ ঘেন্না দুটো অনুভূতি মিলেমিশে আচ্ছন্ন করে ফেলল মিতাকে। আধখাওয়া ধোসার প্লেট সরিয়ে রাখল। রুমাল বার করে মুখ মুছে নিল। বুঝিয়ে দিতে হবে পাঁচিল ভেঙ্গে দেবার বিন্দুমাত্র শখ তার নেই। ঠিক কেমনভাবে কি বলা যাবে ভাবতে ভাবতেই বন্ধুভাবাপন্ন রজত বোসের গলার মাষ্টারি সুর শোনা গেল। ১৮