অচলপত্র সংকলন [সংস্করণ-১] | Achalpatra Sangkalan [Ed. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
শিবরাম চক্রবর্তীর গল্প কালোবাজার রুজনী স্থলিত পায়ে মই বেয়ে উঠছিল। সিদ্ধিলাভের পর অবিচলিত থাকা সকলের পক্ষে সহজ নয়। তখন পদে পদেই পতনের ABT | সিদ্ধির মাত্রাটা একটু বেশিই হয়ে গেছল বুঝি। ভারতের স্বাধীনতা আর পাকিস্তানলাভের পর এই প্রথম বিজয়া-ঈদ্‌-সম্মিলনী। বিজয়ীদের শুভ সংঘটন। নতুন নেশাদের নতুন নেশা- তাই আর সব কিছুর মত এদিকটাতেও একটু মাত্রা ছাড়াবে বিচিত্র কি? কিন্তু বাশের সিঁড়ি ধরে ওঠা সহজ নয়। এমন কি, পনেরই আগস্টের পরেও কাজটা সহজ হয়নি। স্বাধীনতা পাবার পর দেশের যত কিছুই অদলবদল হয়ে থাক, বীশ এবং বংশধারার বিশেষ কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। পড়তে পড়তে বার কয়েক টাল সামলাতে হয়েছে রজনীকে। ধীরে রজনী, ধীরে! অধোগতির পথে WEe করে নামা গেলেও উন্নতির সোপান-জীবনের যে কোনো দিকেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমান টলায়মান। রাত হয়েছে বেশ। উপনগরীর পথ এমনিতেই একটু নিরালা, তার ওপর এদিকটা আবার নিরালাও মনে হয়। লক্ষ্মীপূজো পেরিয়ে, প্রায় কালীপুজোর কাছ chews ওদের বৈঠকটা বসেছিল, তাই অমায়িক রজনীকে এই মুহূর্তে অমারজনীর হাত ধরে এগুতে হয়েছে। নির্জ্যোৎস্না রাত্রি, দূরে দূরে এক একটা গ্যাসবাতি ছ্বলছে-_মাঝের গুলো হয় জ্বালা হয়নি, নয়তো কেউ দয়া করে নিবিয়ে দিয়েছে। এই আলো আঁধারের আবছায়া পথে একলা চলতে চলতে হঠাৎ সে এই সিঁড়ির সামনে এসে হাজির। কাছেই একটা গ্যাস জ্বলছিল বলে জিনিসটা তার নজরে ঠেকলো। একখানা ফ্ল্যাট ফাইল বাড়ির দোতলার একধারের একানে এক MCHA সঙ্গে লাগানো বাঁশের মইটা একটু অদ্ভুত দৃশ্যই বলতে হবে। রজনীকে থমকে দাঁড়াতে হলো। কলকাতা এবং সহরতলীর সব লোকচরিত্র তার নখদর্পণে নয় তা সত্যি, কিন্তু তাহলেও UA তার ধারণা, এ ধারের নাগরিকদের গৃহপ্রবেশের ধরণটা ঠিক এরকম নয়। ইঞ্জিনীয়াররা পারতপক্ষে বাড়ির যত সর্বনাশই করুক, সিঁড়ির একটা ব্যবস্থা রাখেই। নিশ্চয়ই তার বাসিন্দাদের সপরিবারে বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে যাতায়াত করতে হয় না। রজনী গভীর। রজনীমাত্রই যেমন হয়ে থাকে। আমাদের রজনীও তার ব্যতিক্রম নয়। কাজেই এই গভীর রজনীতে, গভীরভাবে তলিয়ে এটাকে কোনো বদলোকের কারসাজি ছাড়া আর কিছুই তার মনে হয় না। দেশটা বিলেত এবং সিঁড়িটা দড়ির হলে ব্যাপারটাকে ইলোপমেণ্ট বলেই সে ঠাওরাতে পারত ; কিন্তু এই বিদঘুটে বংশপরম্পরার সামনে খাড়া হয়ে খুনখারাপী ছাড়! আর কিছু যেন ভাবতেই পারা যায় না। হয়তো বা চুরি-চামারিও হতে পারে। রজনী নিজের মহল্লার পীসকমিটির একজন। অশান্তির গন্ধ পেলে সে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। নিসপিস করতে ACH রজনী বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো! PRR অলিন্দের গায়ে-পড়া। অলিন্দ দোতলার সঙ্গে লাগানো। অলিন্দ ও ঘরের মাঝে কালো রঙের পর্দা ঝুলছে। বারান্দা উত্তরে রজনী পর্দার কাছে পৌছলো। ঘরের ভেতরটা ১৬



Leave a Comment