নদীয়ার পুতুলনাচ | Nadiyar Putulnach

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
দল দেশভাগের আগে ছিল বলে প্রমাণ পাইনি। আমি এই বিষয়ে ড. আশুতোষ ভট্টাচার্যকে তার বাড়ির ঠিকানায় বিনীতভাবে একাধিক চিঠি লিখি কিন্তু কোনও উত্তর পাই নি। অনুমিত হয়, নদীয়ার অন্যান্য স্থান থেকে পুতুলনাচের দল কৃষ্ণনগরে এসে পৃূজাপার্বণ উপলক্ষে ও মেলায় পুতুলনাচ পরিবেশন করত, এইসব পুতুলনাচের দলকেই কৃষ্ণনগরের পুতুলনাচ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাসঙ্গিক উল্লেখ্য যে কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুলের সঙ্গে পুতুলনাচের পুতুলের কোনও সম্পর্ক নেই এবং কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পীরা পুতুলনাচের পুতুল তৈরি করেন না। দেশভাগের আগে নদীয়া জেলায় কালীগঞ্জ -নাকাশিপাড়া থানার গঙ্গাতীরবত্তী গ্রামসমূহে বেণীপুতুলনাচ অর্থাৎ হাতে ঘোরানো-নাচানো TBA SAMS প্রচলিত ছিল | এ ব্যাপারে ড. আশুতোষ ভট্টাচার্য তার “বাংলার লোকনৃত্য” গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে ভাগীরদীর উরের জনপদের পুতুলনাচের উল্লেখ করেছেন, আমরা তার সঙ্গে একমত নদীয়া জেলায় কালীগঞ্জ থানার গঙ্গাতীরব্তী এলাকার CHGS (ঘোড়ই বা ঘড়াই) উপাধিধারী তফসিল সম্প্রদায়ভুক্তেরা ছিলেন বেণীপুতুলনাচের লোকশিল্পী। অধুনা বেণীপুতুলনাচে খ্যাতনামা হয়েছেন লোকশিল্পী রামপদ ঘোড়ুই (৩৫ বৎসর বয়স্ক, পিতা আশুতোষ canes), তিনি কিন্তু মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর থানার মুগবেড়িয়া অঞ্চলের পল্মতামলী গ্রামের (ডাকঘর : দুমুরদাড়ি) মানুষ৷ পলদ্মাতামলী গ্রামে প্রায় চল্লিশটি পরিবার শ্েণৌপুতুলনাচের সঙ্গে যুক্ত এবং তাদের অনেকেই ঘোড়ুই উপাধিধারী। অনুসন্ধানে জেনেছি যে নদীয়ায় সনাতনী বেলীপুতুলনাচের পুতুল তৈরি করা হত বিচিত্র পদ্ধতিতে। একটি পাত্রে জলে মেথি সহ খবরের কাগজের টুকরো ও শোলা (জলজ উদ্ভিদ)-র গুঁড়ো ভেজানোর পর কাগজের Te তৈরি করা হত। বাম হাতের Gomes (forefinger) বা একটি ছোট বর্গাকার কাঠের পাটাতনের উপর কাঠের দণ্ডের মাথায় কাগজ জড়িয়ে সুতো দিয়ে বেঁধে তারপর এঁ কাগজের মণ্ড লেপে দেওয়া BS! পিছনে ফাকা রাখা BW মণ্ড শুকিয়ে গেলে তাতে মানুষের মূর্তির চোখ-কান-মুখের অবয়বের আকার দেওয়া হত। রোদে শুকিয়ে কাঠের দণ্ড থেকে আলগোছে কাগজের মণ্ডের মূর্তি বের করা হত। ভিতরের কাগজ বের করে ফেলার পর সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘসে ঘসে মসৃণ করে রঙ দেওয়া হত। মাথায় পাটের কালো চুল SOT লাগিয়ে কাপড়ের পোশাকাদি মৃর্তিমুখের গলায় লাগানো হত। দুই হাতের প্রথমাংশ কাগজের AAS তৈরি করা হত, তার সঙ্গে কাপড় থাকত। পুতুলনাচিয়েরা হাতের প্রথম তিন আঙুলের মাঝের আঙুল পুতুলের মাথায় ফাকা জায়গায় ঢুকিয়ে ও অপর দুই আঙুল পুতুলের দুই হাতের মধ্যে ঢুকিয়ে নাচাতেন। ATTA এই সনাতনী বেলীপুতুলনাচের ধারা এখন প্রায় অবলুপ্ত, আজ শুধু স্মৃতি। একসময় তালআটিকেও বেণীপুতুলনাচের পুতুলের রূপ দেওয়া হত বলে জানা যায়। প্রাসঙ্গিক উল্লেখ্য যে নদীয়া জেলার কালীগঞ্জ থানার অজ্ঞল বিল-বাওরে ও গঙ্গার প্রাচীন খাদে প্রচুর পরিমাণে ফুলশোলা (spongewood) আজও উৎপন্ন হয় এবং ১৬



Leave a Comment