For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)এই সময় ঠাকুর সারদাদেবীকে কত ভাবে শিক্ষা দিয়েছেন সে সম্বদ্ধে
সারদাদেবী স্ত্রীভক্তদের কাছে বলেছেন, “প্রদীপের সলতেটি কিভাবে রাখতে হবে,
বাড়ির প্রত্যেকে কে কেমন লোক, কার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হবে ইত্যাদি সারের খুঁটিনাটি কাজ থেকে, ভজন কীর্তন ধ্যান সমাধি ও ব্রহ্মাজ্ঞানের কথা পর্যন্ত। সকল বিষয়ই তিনি আমাকে শেখাতেন।”* স্বামীর সঙ্গে যে কমাস বাস করেছেন সারদা দেবী, তার সুখ স্মৃতি, অস্তরে
তার পূর্ণ হয়ে আছে। দেবতুল্য স্বামী তার। সেই সুগৌর তনু, সদাহাস্যোজ্জ্বল মুখ,
প্রেমভরা চাউনি, কখনো কি বিস্মৃত হওয়া যায়? স্নেহ ভালবাসা ও মমতা দিয়ে
সারদাদেবীকে তিনি অভিভূতই করেননি, তার সম্মুখে তুলে ধরেছেন কল্যাণময়
আদর্শ স্বামীর সেই ভাবমূর্তিটি প্রোজ্্বল হয়ে রয়েছে তার অস্তর পটে। এবারে
সারদা দেবী এক নতুন আলোর স্পর্শানুভূতি নিয়ে ফিরলেন পিত্রালয়ে। উত্তরকালে নিজের তখনকার অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে স্ত্রীভক্তদের কাছে
সারদাদেবী বলেছিলেন, “হৃদয়ের মধ্যে আনন্দের AAAS যেন স্থাপিত রয়েছে, এই
সময় থেকে সর্বদা এমন মনে হত। সেই ধীর, স্থির, দিব্য উল্লাসে অস্তর কতখানি
যে পূর্ণ হয়ে থাকত তা বলে বোঝাবার নয়।”* এখন তিনি শুধু দিন গুণছেন, কবে আসবে প্রেমময় স্বামীর আহবান | দেখতে
দেখতে প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেল। চার বছর আগেকার কিশোরী, আজ আঠারো
বছরের এক পূর্ণ যুবতী। স্বামীকে দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন তখন তার কানে
এলো ঠাকুর নাকি উন্মাদ হয়েছেন, উলঙ্গ হয়ে বেড়ান। পাড়া-গীয়ের পরিবেশে
গায়ের বৌ-ঝিয়েরা কখনও বা রসিকতা করে কখনও বা সারদাদেবীর প্রতি
সহানুভূতি জানায়। কিন্তু এই রসিকতা বা সহানুভূতি দুটিই ছিল সারদাদেবীর পক্ষে
দুর্বিষহ। দ্বিধা আর শঙ্কা সারদাদেবীর মনকে করে তোলে উদ্বেল। তাই তিনি সিদ্ধাস্ত
নেন নিজেই যাবেন দক্ষিণেশ্বরে, স্বচক্ষে দেখবেন তার স্বামীর বাস্তব অবস্থা। ফাল্গুনী পূর্ণিমায় গ্রামের অনেকেই গঙ্গাম্নানে চলেছেন কলকাতাভিমুখে।
সারদাদেবীও পিতার সঙ্গে চলেছেন। জয়রামবাটী থেকে দক্ষিণেশ্বর এই দীর্ঘ পথ
পায়ে হেঁটে চলতে হবে। স্বামীকে দেখবার জন্য এই দীর্ঘপথ অতিক্রম করতে কত
কষ্টই না সহ্য করতে হয়েছে GCF | পথে প্রবল জ্বরে আক্রাম্তও হলেন। সেদিনের
যাত্রা স্থগিত রইল। নিকটে একটি চটিতে আশ্রয় নিলেন বাপ-বেটিতে। জ্বরের ঘোরে
মা ভবতারিণীর দিব্য দর্শন লাভও হয়েছিল এবং মা ভবতারিণী আশ্বাস দিয়েছিলেন
যে তিনি দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে স্বামী সন্দর্শন লাভ করবেন। পরের দিন অসুস্থ শরীর আর অনিশ্চিত হৃদয়ে সারদাদেবী উপস্থিত হলেন
দক্ষিণেশ্বরে স্বামীর কাছে। সারদাদেবীকে অসুস্থ দেখে ঠাকুর খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে
পড়লেন। ঘোমটার আড়াল থেকে সারদাদেবী দেখলেন যে তাঁর মানুষটি আগের ২০