বঙ্গভঙ্গ | Bangabhanga

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
বিকালবেলায় কথাবার্তা হবে-_ আর অমনি পাত্রকেও একবার দেখে যাবেন। দেখছেন তো আমি ওঁদের নিয়ে ব্যস্ত। দেওয়ানজি বললেন, বিলক্ষণ। আমাদের ভার যোগ্য লোকের হাতে দিয়েছেন, আপনি সাহেবদের দিকে যান। মামলাসূত্রে শৈলেন খুড়োর সঙ্গে দেওসানজির পরিচয় ছিল। কিন্তু এদিকে শচীনটা গেল কোথায়? ওরে সুশীল, তোর দাদাকে একবার পাঠিয়ে দে। সংবাদটা অন্দরমহলে পৌঁছুতেই পুরনারীদের রসনাগ্র আনন্দিত উলুধ্বনিতে চঞ্চল হয়ে উঠল। আজ তারা সকলেই নিজ নিজ মর্যাদা অনুসারে নানা রকম দাবি পেশ করলো RBA নিস্তারিণীর কাছে। রাখোর মা শৈশব থেকে শচীনকে মানুষ করেছে, সে দাবি করে বসলো বেনারসী শাড়ি। হরির মা বলল, তোমার কি আর বেনারসী শাড়ি পরবার বয়স আছে দিদি? কেন, বেটার বউয়ের জন্যে তুলে রাখবো। এখানে তার জিত। হরির মার ছেলে নেই, কোনো কালে ছিল না। কোন্‌ সম্বন্ধে সে হরির মা স্বয়ং Safa ছাড়া আর কেউ জানে at! অন্দর মহলে মাসি পিসি খুড়ি মামি প্রভৃতি সকলের মুখে হাসি, মলিন মুখ শুধু নিস্তারিণীর। তিনি আগেই সুশীলের কাছে সব বৃত্তান্ত শুনেছেন, শুনেই বুঝেছেন তাজপুরের তাজের লোভেও শচীন ফিরবে না, এই নিয়ে একটা অনর্থপাত হবে। তার এখন ভাবনা কথাটা জানতে পারলে স্বামী আগুন হয়ে উঠে একটা কাণ্ড করে বসবেন। তার চেয়েও বড়ো ভাবনা কথাটা কী ভাবে গোপন করে রেখে রাজবাড়ির লোকদের কী বোঝাবেন। শৈলেনখুড়োর স্ত্রী এসে বলল, বৌ, রাজার বেয়ান হতে চললে, মুখে হাসি নেই কেন? খুড়ি, রাজার বেয়ান হওয়ার দায় কি কম? বউ যার দায় সে বহন করবে, তুমি হেসে নাও। কথাটা এখানেই মিটে গেল। নিস্তারিণী দেবী অত্যস্ত ভালোমানুষ কিন্তু তার মধ্যে কোথায় কী শক্তি ছিল সবাই ভয় করতো, সবচেয়ে বেশি স্বয়ং রায়বাহাদুর। যেখানে ভালোবাসা সেখানে ভয়। জগৎপাতা বিষ্ণুর বাহন ভয়ংকর গরুড়। শ্বেতাঙ্গ দায়মুক্ত রায়সাহেব বিকাল বেলায় বৈঠকখানা বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়ে দেখলেন Mes নিদ্রান্তে দেওয়ানজি একখানা বৃহৎ হেলানো মোড়ার উপরে বসে পা দোলাচ্ছেন। রায়বাহাদুরকে দেখেই একবার দীড়াবার ব্যর্থ চেষ্টা করে বলে উঠলেন, আসুন, আসুন রায়বাহাদুর। আহাহা উঠবেন না, উঠবেন না, আপনি অতিথি | তার পরে ওদিকে সব HSM? হ্যা, ওরা অনেকক্ষণ বিদায় নিয়েছেন। রায়বাহাদুর, আপনি এক BSS করলেন। রাজবাড়িতে একটা সাহেব গেলে আমরা কী করবো ভেবে পাই নে আর জেলার সমস্ত সাহেব আপনার বাড়িতে এসে ভূরিভোজন করে গেল--এ কি কম ব্যাপার! ১৮



Leave a Comment