সুন্দরবনের ইতিহাস | Sundarbaner Itihas

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৬ সুন্দরবনেব ইতিহাস মাঝে মাঝে চর উঠিয়া থাকে। সুযোগসমন্ধানীরা এদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখে এবং চর উঠিবার সম্ভাবনা হইলেই মূল্যবান জমি পাইবার আশায় কালেক্টরের নিকট হইতে পূর্বাহ্নেই বন্দোবস্ত লইয়া সম্পত্তির মালিক হইয়া বসে। খুলনার দক্ষিণে চর উঠিলে উহা স্বাভাবিকভাবে সুন্দরবনে পরিণত হয়। আর বাকেরগঞ্জের দক্ষিণে সুন্দরবন না থাকায় চরভূমি পার্শ্ববর্তী ভূমির ন্যায় ধান্যের আবাদে পরিণত হয়। এইভাবে খুলনা হইতে কক্সবাজার পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের মধ্যে যে সমস্ত চর উদ্থিত হয় উহা যথাসময়ে পাশ্ববর্তী ভূমির ধর্ম গ্রহণ করিয়া থাকে। ১৯৬১ সালের ৯ই মে এবং ১৯৬৫ সালের ১১ই মে যে মহাপ্রলয়ঙ্করী ঝড় হয় উহাতে বাকেরগঞ্জ ও টট্টগ্রামের সমুদ্রকূলবর্তী বসতি অঞ্চল বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঝড়ের সঙ্গে সামুদ্রিক বন্যার জলোচ্ছাসে এতদঞ্চলের অসংখ্য মানুষ ও গবাদি পশু ভাসাইয়া লইয়া যায়। ঝড়ের পরে কোন কোন এলাকা জনমানবশুন্য হইয়া শ্মশান ভূমিতে পরিণত হয়। খুলনার দক্ষিণে ঘনাবৃত বনানীর অবস্থিতির জন্য যশোর-খুলনায় এই ধরনের জলস্ফীতির কারণ সচরাচর ঘটে না। গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের এক নাম ছিল বক্দ্বীপ। বক্দবীপই বৌদ্ধ আমলে বগ্্‌দী নামে পরিচিত হয়। হিন্দু রাজত্বের শেষ দিকে সেন ও পালরাজগণের সময় উহার নাম হইয়াছিল TAPS | এতদঞ্চলে যে-সব অসভ্য জাতি বাস করিত তাহারা বাগ্‌দী নামে পরিচিত ছিল। এখন এই জাতির বসতি কোন কোন স্থানে YB হয়। কেহ কেহ বলেন ব্যাঘ্রতটি (Tiger Coast) শব্দ Eee TNS নামের উৎপত্তি হইয়াছে। এ বিষয় অন্যত্র বিস্তারিত আলোচনা করিয়াছি। এই ব দ্বীপে মনুষ্যবসতি অপেক্ষা জঙ্গলই ছিল অধিক প্রাচীনকালের বছ গ্রন্থে এতদঞ্চলের গভীর জঙ্গলের কথা উল্লেখ আছে। বাকেরগঞ্জ ও যশোর জিলার ASAI এবং খুলনা জেলার প্রায় সর্বত্র পুকুর Boca এখনও সুন্দরী প্রভৃতি গাছের গুঁড়ি পাওয়া যায়। অন্যান্য জেলায়ও এই ধরনের বৃক্ষ মৃত্তিকার নিচে প্রোথিত অবস্থায় পাওয়া যায়। অনেক সময় এতদঞ্চলের লোকেরা পুকুর খননকালে প্রাপ্ত বৃক্ষের গুঁড়ি রৌদ্রে শুকাইয়া স্বালানিরূপে ব্যবহার করিয়া থাকে। সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্যের অভাবে উহার কাল নিরূপণ করা সম্ভব নয়। এই সমস্ত নিদর্শন হইতে ইহাই প্রমাণিত হয় যে, গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের সর্বত্র এককালে জঙ্গলে পূর্ণ ছিল এবং ধীরে ধীরে এই সমস্ত জঙ্গল অপসারিত হইলে বা কাটিয়া ফেলিবার পর মনুষ্যবসতি গড়িয়া উঠিয়াছিল। নদীর স্রোত যে পলিমাটি বহন করিয়া আনে উহা শেষ সীমান্ত বা পরো পার্শ্বে চরভূমি গঠন করে। জোয়ারের সময় বৃক্ষের বীজ Sia আসে এবং প্রাকৃতিক নিয়মে বৃক্ষের উৎপত্তি হয় এবং চরভূমি যথাসময়ে গভীর অরণ্যে পবিণত হয়। এই জঙ্গল কাটিয়া আবাদ করিলে ধানক্ষেত বা মানুষের আবাসযোগ্ায ভূমি সৃষ্টি হয়। এইভাবে যুগ যুগ ধরিয়া ঘরবাড়ি, বাগিচা, ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম ও কোলাহলময় নগরের সৃষ্টি হইয়া থাকিবে। কোন কোন সময় ভূমিকম্প, প্লাবন প্রভৃতি দৈব দুর্বিপাকে জনপদ বা



Leave a Comment