দুশ বছরের বাংলা প্রবন্ধসাহিত্য [খণ্ড-২] | Dusho Bacharer Bangla Prabandhasahitya [Vol. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
হিন্দু-মুসলমান / ৩ বড়ো মূল্য দিয়ে থাকে তার মমত্ববোধ সংকীর্ণ হতে বাধ্য। রাষ্ট্রসমন্মিলনীতেও এই অভাব কথায় কথায় ধরা পড়ে এবং দেখা যায় — আমরা যে Gey ব্যবধান সঙ্গে করে নিয়ে বেড়াই তা সংস্কারগত, অতি FAR aa সেইজন্য অতি দুর্লঙঘ্য। আমরা যখন মুখে তাকে অস্বীকার করি তখনো নিজের অগোচরেও সেটা অনস্তঃকরণের মধ্যে থেকে যায়। ধর্ম আমাদের মেলাতে পারে নি, বরঞ্চ হাজারখানা বেড়া গড়ে তুলে সেই বাধাগুলোকে ইতিহাসের অতীত শাশ্বত বলে পাকা করে দিয়েছে। ইংরেজ নিজের জাতকে ইংরেজ বলেই পরিচয় দেয়। যদি বলত খ্রিস্টান তা হলে যে ইংরেজ বৌদ্ধ বা মুসলমান বা নাস্তিক তাকে নিয়ে বাষ্ট্রগঠনে মাথা-ঠোকাঠুকি বেধে যেত | আমাদের প্রধান পরিচয় হিন্দু বা মুসলমান | এক দলকে বিশেষ পরিচয়কালে বলি বটে হিন্দুস্থানি কিন্তু তাদের হিন্দুস্থান বাংলার Wea | কয়েক বছর পূর্বে আমার ইংরেজ বন্ধু YES নিয়ে মালাবারে ভ্রমণ করছিলুম। ব্রাহ্মণপল্লির সীমানায় পা বাড়াতেই টিয়া-সমাজ-ভুক্ত একজন শিক্ষিত ভদ্রলোক আমাদের সঙ্গ ত্যাগ করে দৌড় দিলেন। yer বিস্মিত হয়ে তাকে গিয়ে ধরলেন, এবং প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করাতে জানলেন, এ পাড়ায় তাদের জাতের প্রবেশ নিষেধ। বলা বাছল্য, হিন্দুসমাজবিধি অনুসারে এন্ডুজের আচারবিচার টিয়া-ভদ্রলোকের চেয়ে অনেক গুণে অশান্ত্রীয়। শাসনকর্তার জাত বলে তার জোর আছে, কিন্তু হিন্দু বলে হিন্দুর কাছে আত্মীয়তার জোর নেই। Gia সম্বন্ধে হিন্দুর দেবতা পর্যন্ত জাত বাঁচিয়ে চলেন, স্বয়ং জগন্নাথ পর্যন্ত প্রত্যক্ষদর্শনীয় নন। CAMA সম্তানও মাতার কোলের অংশ দাবি করতে পারে — ভারতে বিশ্বমাতার কোলে এত ভাগ কেন? অনাজ্ীয়তাকে অস্থিমজ্জায় আমরা সংস্কারগত করে রেখেছি, অথচ রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে তাদের আত্মীয়তা না পেলে আমরা বিস্মিত হই। শোনা গিয়েছে, এবার পূর্ববঙ্গে কোথাও কোথাও হিন্দুর প্রতি উৎপাতে নমঃশৃদ্ররা নির্দয়ভাবে মুসলমানদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। ভাবতে হবে না কি, ওদের দরদ হল না কেন, আত্মীয়তার দায়িত্বে বাধা পড়ল কোথায়? এই অনাগ্নীয়তার অসংখ্য অন্তরাল বহু যুগ ধরে প্রকাশ্যে আমাদের রাষ্ট্রভাগ্যকে ব্যর্থ করেছে এবং আজও ভিতরে ভিতরে আমাদের দুঃখ ঘটাচ্ছে। জোর গলায় যেখানে বলছি, আমরা এক, PH সুরে সেখানে অন্তর্যামী আমাদের মর্মস্থানে বসে বলছেন, 'ধর্মে-কর্মে আচারে-বিচারে এক হবার মতো Vues তোমাদের নেই ।' এর ফল ফলছে; আর রাগ করছি ফলের উপরে, বীজবপনের উপরে নয়। যখন বঙ্গবিভাগের সাংঘাতিক প্রস্তার নিয়ে বাঙালির চিত্ত বিক্ষুব্ধ তখন বাঙালি অগত্যা বয়কট-নীতি অবলম্বন করতে চেষ্টা করেছিল। বাংলার সেই দুর্দিনের সুযোগে বোম্বাই মিলওয়ালা নির্মমভাবে তাঁদের মুনাফার GS বাড়িয়ে তুলে আমাদের প্রাণপণ চেষ্টাকে প্রতিহত করতে কুষ্ঠিত হন নি। সেই সঙ্গে দেখা গেল, বাঙালি মুসলমান সে দিন আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে দীড়ালেন। সেই যুগেই বাংলাদেশে হিন্দু মুসলমানে লজ্জাজনক কুৎসিত কাণ্ডের সূত্রপাত হল। অপরাধটা প্রধানত কোন্‌ পক্ষের এবং এই উপদ্রব অকস্মাৎ কোথা থেকে উৎসাহ পেলে, সে তর্কে প্রয়োজন নেই। আমাদের চিন্তা করবার বিষয়টা হচ্ছে এই



Leave a Comment