সেকুলার ভারতে ধর্ম ও রাজনীতি | Sekular Bharate Dharma O Rajniti

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ও পরীক্ষার দ্বারা সত্যানুসন্ধানের নতুন পথ দেখান। লক (১৬৩২-১৭০৪) ঘোষণা করেন ইন্ড্রিয়গ্রাহা ও মানস-প্রত্যক্ষ বিষয় ছাড়া আর কোনো কিছু জানবার উপায় নেই। আটের শতকে বেকন ও লক প্রদর্শিত Wow কয়েকজন মনীষী-_ ধর্মের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন। ফরাসী যুক্তিবাদীরা যুক্তিবাদের পথের অভিযাত্রী হন। তারা রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজকদের ভণ্ডামী আর বিবিধ অপকর্মের তীব্র সমালোচনা করেন। এঁরা ছিলেন নাস্তিক, জড়বাদী, সংশয়বাদী (Scepticism) ইত্যাদি। ঈশ্বর, আত্মার অবিনশ্বরতা এবং পাপ-পৃণ্য ও পরলোকে তার বিচার ও শাস্তি বা পুরস্কারের সুপ্রাচীন বিশ্বাসের অচলায়তনে এঁরা আঘাত QCA | ডেভিড হিউম (১৭১১-১৭৭৬) ছিলেন সংশয়বাদের প্রবক্তা, অলৌকিক fra তার বিশ্বাস ছিল না। বৈজ্ঞানিক যুক্তির প্রণালীতে তিনি ধর্মের উৎপত্তি ও ইতিহাস ব্যাখ্যা করার প্রয়াস পান। ধর্মের বাহ্যিক অনুষ্ঠানকে হিউম-_ যাজকদের চাতুরী ব'লে বিশ্বাস করতেন। “প্রায় দুই শতাব্দী ধ'রে পাশ্চাত্যের সমাজে এই বৈপ্লবিক চিত্তালোড়ন চলতে থাকে ।””১৭ নবচেতনার এই AAA ভেসে যায়, হারিয়ে যায় পুরোনো মূল্যবোধ, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের উদ্তাসে পরাভূত হয় ভ্রাস্তবিশ্বাস, গতির কাছে হার মানে জড়তা আর স্থবিরতা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চলে দুঃসাহসিক অভিযান; শুরু হয় ব্যক্তিমানুষের জয়যাত্রা। জীর্ণ হয়ে যাওয়া ধর্মবিশ্বাসের নিগড় ভেঙে ব্যক্তিমানুষ নতুন এক “ধর্মের” সন্ধান পায়। সময়, পরিশ্রম, অর্থ, বস্তু, দূরাস্তে উপনিবেশ স্থাপন-_ এ সবই হয়ে ওঠে জীবন যাপনে আরাধ্য । পরজগতে সুখ-শাস্তির আকুতি মলিন হয়ে যায় ইহজগতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুকঠিন সংগ্রামে! স্বর্গের বাসনা নয়, পৃথিবী হয়ে ওঠে বরণীয়, SHAN | কাণ্ট (১৭২৪-১৮০৪) ও রুশোর (১৭১২-১৭৭৮) দর্শন মানবজীবনে অতিপ্রাকৃত কর্তৃত্ব অস্বীকার করে। AEA (১৭৪৮-১৮৩২)-এর “উপযোগিতাবাদ' সমাজ স্কারের হাতিয়ার হয়ে ওঠে | হলব্যাখ (১৭২৩-১৭৮৯) প্রচার করেন বস্তবাদ ও নাস্তিকতা। শুরু হয় অতিবৃদ্ধ ঈশ্বর আর মূঢ় অত্যাচারী ধর্মধ্বজাধারী যাজককুলের নির্বাসনের পালা। নবীন বুর্জোয়াশেণী এবং তাদের মুখপাত্র স্বাধীন বুদ্ধিজীবীসম্প্রদায় সামস্ততান্ত্রিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে TIT সংগ্রামে রত হন! যুগ সৃষ্টিকারী শিল্পবিপ্লব, গণতান্ত্রিক বিপ্লব ও আধুনিক নগরের বিস্তার সেকুলারাইজেশন-এর প্রক্রিয়াকে ত্বরাস্বিত করে। বস্তুজগতের বৈপ্লবিক পরিবর্তন-_ রাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা, ধর্ম, শিল্পকলা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, দর্শন-_- সব কিছুরই আমূল পরিবর্তন ঘটায়। যুগারস্তে এক নতুন বিশ্ববীক্ষার জন্ম নেয়-- 'সেকুলারিজম”। যাকে সমাজবিজ্ঞানীরা বলেন, 'নেগেটিভলী রিলিজিয়াস' অর্থাৎ ধর্ম বা ধর্মান্কতার প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। এই নতুন বিশ্ববীক্ষার ফলস্বরূপ নবজীবনধারা ধর্মনির্দোশিত পথ পরিত্যাগ করে। এই মতবাদের উত্থানের ফলে ধর্ম আর রাজনীতির মধ্যে গড়ে ওঠে এক “অলঙঘ্যনীয় প্রাচীর! পুরাতন মতাদর্শ আর প্রগতির সঙ্ঘাতে 'সেকুলারাইজেশন-এর প্রক্রিয়া গতিলাভ করে; এর ফলে ধর্মীয় চিত্তা ধর্মাচরণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির সামাজিক গুরুত্ব লোপ পায় বা হ্রাস পায়। সমাজবিজ্ঞানী প্র্যাট লিখেছেন, তিনশো বছর আগে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রসঙ্গে কোনো দ্বিমত ছিল না। আজ ঈশ্বরের অস্তিত্বে বহু মানুষ অবিশ্বাসী, অনেকে সন্দিহান, আর অনেকে মনে করেন এ সম্পর্কে ভাবনা-চিত্তা করাটাই অর্থহীন ।১৮ অপর এক সমাজবিজ্ঞানীর মতে 'সেকুলারিজম' [এর মতবাদ] ধর্মীয় বা অতি-প্রাকৃতিক [বন্ধন থেকে] মুক্ত। এই মতবাদ ঈশ্বরের অস্তিত্ব ২২



Leave a Comment