আমার সময়, আমার গল্প | Amar Samay, Amar Galpa

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
সরি। আমি আপনার সঙ্গে আপনার বাবার কোয়ালিফিকেশান গুলিয়ে ফেলেছিলাম। নীচে দরজা বন্ধ করার আওয়াজ হল। কারও দয়া হল বোধ হয়। লিফটটা এসে গেল। অশেষ ভদ্রতা করে লিফট-এর গেট খুলে দিল। ড. ভৌমিক বললেন, না সেটাও ভুল শুনেছেন। আমি নিছকই একজন এম বি বি এস ডাক্তার। আপনার ফিসটা? হাসলেন ড. ভৌমিক। বললেন, আমি পুরোনো দিনের লোক, প্রতিবেশীকে আত্মীয় বলেই জেনেছি ছোটোবেলা থেকে। লিফট-এর মধ্যে মুখ নীচু করে গেটের ভিতরের দিকটা টানতে টানতে বললেন, বোস সাহেব স্কুল এবং ডিগ্রির সঙ্গে শিক্ষার কোনোই সম্পর্ক নেই বোধহয়। হয়তো আয়েরও নেই। ওড়িশা থেকে আসা ভালো কাজ জানা কলের মিস্ত্রি, বিহার বা ইউ পি থেকে আসা পানের দোকানদার, এঁরা সবাইই কিন্তু মার্কেন্টাইল ফার্মের অনেক বাঙালি অফিসারের চেয়ে বেশি রোজগার করেন। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কী করতে চান আপনারা তাই ভালো করে ভেবে ঠিক করুন। কলকাতার ভালো ভালো স্কুলে যেসব ছেলেমেয়ে পড়ার সুযোগ পায় বা পেয়েছে, পরবর্তী জীবনে তারা কি সকলেই কেওকেটা হয়েছে? সো কলড খারাপ স্কুলের ছেলেমেয়েদের কাছে হেরে তারা কখনও গেছে কি যায়নি তাই নিয়েও একটি সার্ভে করার সময় বোধহয় এসেছে। একমাত্র সম্ভানকে কী করে তুলতে চান তাই ভাবুন ভালো করে দুজনে। পরীক্ষা আপনাদেরই। অশেষ লিফটের বোতাম টিপে রেখে দীড় করিয়ে দিল লিফটটিকে। কাকুতিভরা গলায় বলল, কী করতে বলেন আপনি আমাদের, ডাক্তার ভৌমিক? কিছুই বলি at | ছেলেকে শিক্ষিত করে তুলুন | জীবিকার সঙ্গে শিক্ষার কোনো বিরোধ যেমন নেই, তেমন কোনো কানেকশানও নেই। যা কিছু করেই একজন মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। এমনকি যদি কড়াইশুঁটি কী কচুরির দোকানও দেয়। আপনি কি সত্যিই মনে করেন যে, যাঁরা টাই পরে গাড়ি চড়ে অফিসে গিয়ে অন্যের বেশি মাইনের চাকর হয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তারাই শুধু শিক্ষিত আর অন্যরা সবাইই অশিক্ষিত? ছেলেটাকে শিশুকাল থেকেই কতগুলো প্রি-ডিটারমিনড আইডিয়াজ-এর চাকর করে তুলবেন না। ওদের মানুষ করে তুলুন। ভালো স্কুলে আ্যাডমিশান হলে ভালো, কিন্তু তা না হলে যে তার জীবন বৃথা হয়ে যাবে এমন মনে করার মতো মূর্খতা কিন্তু আর নেই। ফটফট করে ইংরিজি ফুটোলেই সে শিক্ষিত, সে জীবিকায় সফল হবে, তার কোনো মানেই নেই। তাছাড়া জীবিকার জন্যে তো জীবন নয়, জীবনের জন্যেই জীবিকা। অশেষের হাতের আঙুল আপনা থেকেই ঢিলে হয়ে eT | লিফটটা উঠে গেল উপরে। ওর মনে হল, ড. ভৌমিক যেন ওকে নীচেই ফেলে রেখে নিজে অনেক উঁচুতে চলে গেলেন। ‘ সুরমাও তার কোয়ার্টার্সে যেতে দরজা বন্ধ করে ফিরে এসে অশেষ আর একটা হুইস্কি ২২



Leave a Comment