বইয়ের লেখক
বইয়ের আকার
32 MB
মোট পৃষ্ঠা
400
ধরণ
For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)মাতৃমহিমা ১৯ দরিদ্রতম সংসারে দরিদ্র ABA যথাকর্তব্য করতে কোনও ভ্রুটি রাখেননি। আমরা
আধুনিককালের মানুষরা দৈবলীলায় তেমন বিশ্বাসী নই। কিন্তু স্রীশ্রীমায়ের দেবশরীর রক্ষণার্থ
দৈব পরিবেশ সৃষ্ট হত--একথা শ্রীসারদা দেবীর স্বমুখেই প্রকাশিত। _ শ্রীমায়ের একাদশ বৎসর বয়সে ভীষণ দুর্ভিক্ষ লাগল। অজ্ঞ দুর্ভিক্ষপীড়িত গ্রামবাসীদের
জন্য নিজ মরাই-এর সংগৃহীত চাল দিয়ে কলাইয়ের ডাল মিশিয়ে হাঁড়ি হাঁড়ি খিচুড়ি am
করে মায়ের বাবা সকলকে খাওয়াতে লাগলেন। ছোটো মেয়ে সারদা মানুষের খিদের জ্বালা
নিজ অস্তরে অনুভব করে দু-হাতে পাখা নিয়ে গরম খিচুড়িকে ঠাণ্ডা করতেন । মায়ের
সম্ভানবাৎসল্য তার মধ্যে তখনই জাগরূক। তার শ্রীমুখ নিঃসৃত বর্ণনায় দুর্ভিক্ষের মর্মস্তদ
চিত্রখানি আমাদের হৃদয় মথিত করে। শ্রী্রীমায়ের অনন্যসাধারণ চরিত্রের মাধুর্য তার বাল্যলীলায় পিতামাতা ও পরিজনদের
বারবার অভিভূত করেছে। শ্যামাসুন্দরী দেবী কথাপ্রসঙ্গে বলেছেন-_“সারদা, তোর মতন
মেয়ে আমার যেন হয় MI” আবার বলেছেন, “মাগো, তুই যে আমার কে মা! আমি কি
তোকে চিনতে পারছি, মা?” কন্যা বাহ্যিক বিরক্তি সহকারে বলেছিলেন-_“কে আবার?
আমার কি চারটে হাত হয়েছে? তাহলে তোমার কাছে আসব কেন?””* শ্যামাসুন্দরী শ্লেহময়ী
কন্যার শাস্তিপ্ অতীত স্মরণপূর্বক বলেছিলেন-_“তোকেই যেন আবার আমি পাই,
মা।”* ভ্রাতাদেরও দিদির দেবীত্বের ওপর ছিল বিশ্বাস। শ্যামাসুন্দরীর উক্তিকে সমর্থন করে
তারাও বলেছেন-_“দিদি আমাদের সাক্ষাৎ লম্ষ্মী। আমাদের বাঁচিয়ে রাখবার জন্য দিদি কি
না করেছেন! ধান ভানা, পৈতা কাটা, গরুর জাবনা দেওয়া, রান্না-বান্না--বলতে গেলে
সংসারের বেশি কাজই তো দিদি করেছেন।”* ঈশ্বরের অবতীর্ণ হওয়ার যেমন ধারা আছে তেমনি আমাদের Bras তার বিভিন্ন
প্রকাশও লক্ষ্য করা যায় যদি আমবা এইসব ভাগবতী ভাবধারা সম্বন্ধে চিন্তা করি। বর্তমান কালে এদেশীয় নারীসমাজকে পাশ্চাত্য ভাবধারায় কিছুটা অভিষিঞ্চিত কবার
প্রয়োজনবোধেই স্বামী বিবেকানন্দ বিদেশিনী শিষ্যাদেব সাগ্রহে আহান জানান। আবার
পাশ্চাত্যের নারীসমাজও যদি প্রাচ্য ভাবধারার অংশবিশেষ গ্রহণ করেন তাহলে তারাও
নারীজাতির বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে সচেতন হতে পারবেন। ভারতীয় নারীর আদর্শ সতীত্ব ও
মাতৃত্ব। কারণ এদেশে এইসকল পবিত্র গুণের মাধ্যমেই পরমার্থলাভ সম্ভব বলে এই
শাশ্বত ভারতীয় রীতিগুলির প্রচলন হয়ে এসেছে। যে আদর্শ আমাদের দেশ ও জাতিকে
চিরকাল অস্থিমজ্জায় জাগিয়ে রেখেছে-_বর্তমানে তার মধ্যে কিছু অন্য ভাবের মিশ্রণ
হলেও আপন সমত্ভায় আজও সে স্থির আছে। এইক্ষেত্রে মানবী সত্তা নয়, দৈবী আধ্যাত্মিক
সত্তার পুনর্জাগরণের প্রয়োজন। কাল এবং যুগোপযোগী ধর্ম-কর্ম প্রভৃতি যুগপুরুষের দ্বারা নির্দিষ্ট হয়। ভারত নামক এই
বিশেষ দেশেও মানবধর্ম ও বিশ্বধর্মকে রক্ষা ও সংরক্ষণ করার দায়িত্ব বিশ্বম্রষ্টারই নির্দেশ
অনুযায়ী ঘটেছে। সেইজন্যই তো তার শুভ আগমন এই ধূলার ধরণীতে। শত দুঃখ-কষ্ট-ঝঞ্জাপীড়িত এই মাটির জগতে মানুষের প্রেমে উদ্বেল সেই প্রেমিক
ভগবান বারে বারে সশক্তিক অবতরণ করেন-_-মানুষকে ভালোবাসেন-_মানুষকে জাগান,
ভালোবাসার মন্ত্র শেখান-_তাকে নিজের কাছে রাখবেন বলে। মায়াময় এই বিশ্বসংসারকে
প্রেমময় জগৎ বলে বোধ করান, তাকে আত্মজ্ঞানে, Pay উদ্বুদ্ধ করেন।