ইসলামি বাংলা সাহিত্য বাংলার পুঁথি | Islami Bangla Sahitya O Banglar Punthi

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৬ ইসলামি বাংলা সাহিত্য ও বাংলার পুঁথি সাহিত্য কেবলমাত্র মনের আয়না ও সমাজের we নয়, পরিবেশ ও পরিস্থিতিরও দর্পণ। কোন্‌ পরিবেশে শিশু জন্ম নিল, কোন্‌ পরিস্থিতিতে শিশু বড় হল একথা যে-কোন কবি ও সাহিত্যিকের জীবনেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। পরিবেশ-পরিস্থিতি তাকে আলোড়িত করতে থাকে। আন্দোলিত হয় তার দেহ ও প্রাণ। সমাজের বিভিন্ন ঘটনারাশি নানা তরঙ্গে তার মনের ঘাটে আছড়িয়ে পড়তে থাকে। তখন মনের মাঝে MEAT জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হতে AUCH এখানে পরিস্থিতি ও পরিবেশের অবদান কম নয়। তাই যে-কোন দেশের প্রকৃত সাহিত্য সেদেশের পরিবেশ ও পরিস্থিতিরও স্পষ্ট ছাপ। তার Se প্রমাণ বিদ্রোহী কবি নজরুল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ। সাহিত্য কি, এ সম্পর্কে শেষ কথা, সমগ্র সৃষ্টঅগৎই মহান স্রষ্টার লীলাভূমি মাত্র। কোটি কোটি মানুষের মনে কতই না অযুতভাবের অভ্যুদয় WH | কিন্তু ওই ভাবের যথাযথ বহিঃপ্রকাশ ঘটে মাত্র কয়েক জনের TAT | বাকি লাখে লাখে নীরব-নিশ্চুপ। তাহলে এ কেমন রহস্য। ইচ্ছা করলেই তো কবি বা সাহিত্যিক, সাধক ও সিদ্ধপুরুষ হওয়া যায় না। তাহলে কার ইচ্ছাবলে (কবি বা সাহিত্যিক বা লেখক) হওয়া যায়? তিনি কে? কোন মহাশক্তি পশ্চাতে দীড়িয়ে? অলক্ষ্যে বসে স্থির লক্ষ্যে এক একজনকে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউ কবি, কেউ সাহিত্যিক, কেউ লেখক, কেউ দার্শনিক, কেউ বৈজ্ঞানিক, বেউ এঁতিহাসিক, আরও কত কি! বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ভাষায় তিনিই শুধু একমাত্র যন্তরী, বাকি সকলেই Ay | এই যন্ত্রীটিই আল্লাহ, ঈশ্বর, ভগবান বা রহমান। তাই সাহিত্যের সর্বশেষ কথা-_ সাহিত্য মহান asia অপূর্ব বহিঃপ্রকাশ ও লীলামাত্র। তিনি যার দ্বারা যতটুকু করাবার করিয়ে নেন। সাহিত্যের উদ্দেশ্য : আমরা সাধারণত বলে থাকি যে, সাহিত্য কল্পলোকের এবং সমাজ প্রাণচেতনার সহজ দোলায় দোল দেওয়া পুরুষ ও নারী হৃদয়ের দুই বৃত্তে বীধা দুটি সত্তা। সাহিত্যে কল্পনার লীলাবিলাস, সমাজ শাস্ত্রবিহিত শৃঙ্খলাবিধান। সাহিত্য যখন সমাজের দর্পণ, তখন সেই দর্পণটি যাতে স্বচ্ছ ও সুন্দর হয় সেটা দেখাও সাহিত্যের প্রয়োজন। অধিকাংশ সাহিত্য বর্তমান সমাজের পরিস্থিতি ও পরিবেশের জোয়ারে ও ভাটাতে বইতে থাকে। ও-গুলো সাহিত্য নয়, সাহিত্য নামের আবর্জনা। প্রকৃত সাহিত্য তাই-ই, যা দেশে নতুন পরিস্থিতি ও পরিবেশের জম্ম দেয়। যে পরিস্থিতি ও পরিবেশ দেশকে সুশৃঙ্খল সমৃদ্ধ ও উন্নত পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত করে, যে সাহিত্য দেশের উত্তাল যৌবনকে সুসংহত করে, তাদের উদ্দাম শক্তিকে দেশের অগ্রগতিতে নিয়োজিত করে। মানুষের নৈতিকতাকে অনৈতিকতার দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া কোন সাহিত্যেরই উচিত নয়। ASSAM যুগে এমন অনেক আরবে জম্ম নিয়েছিল, যাদের সাহিত্যগুণ অনেক উচ্চমানের, উৎকর্ষে ভরা, কিন্তু ওই আরব জাতিকে চরম উচ্ছৃঙ্বলতা দান করেছিল। তাদের বিশাল শক্তিকে সুপথে সুসংহত না করে বিপথে বিদীর্ণ করে তুলেছিল। খেলাধুলারও একটি উদ্দেশ্য থাকে, শরীরচর্চা । যারা বলেন--&া1 for Arts Sake, সাহিত্যের জন্য সাহিত্য করা, মানবজীবনও মানব সমাজের জন্য একথা তো একেবারেই অর্থহীন। যে-চিস্তা, যে-কথা ও যে-কাজ উদ্দেশ্যহীন, তা তো মানবজীবনের পক্ষে খুবই অনিষ্টকারী। কেননা মানুষের জীবনে সময় বড়ই অমূল্য ধন। মৃত্যু আগত হলে বিশ্ব মিলিতভাবেও কাউকেই এক মিনিটও সময় দিতে পারে না। সুতরাং উদ্দেশ্যহীন কাজ সময় নষ্ট ব্যতীত আর কিছুই নয়। সাহিত্যের প্রকৃত উদ্দেশ্য হবে জীবশ্রেষ্ঠ মানুষকে জীব শ্রেষ্ঠর আচরণে প্রতিষ্ঠিত করা। মানুষকে খেয়াল-খুশির দাস বানান নয়। তাকে লজ্জাইীনতার মধ্যে উলঙ্গ করা নয়ই। তাকে সু-আচরণের পোশাকে আবৃত করা। তাকে মহৎ HW ও মহৎ বেদনাবোধে সতত উদ্বুদ্ধ Fat | যে সাহিত্য এইসব মহান দায়িত্ব পালনে অক্ষম, তাকে শুঁড়িখানার মুখরোচক চাটনি ছাড়া আর কি বলব।



Leave a Comment