কাঙাল হরিনাথ মজুমদার জীবন সাহিত্য ও সময়কাল | Kangal Harinath Majumdar Jiban Sahitya O Samakal

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ও স্থুলরুচির প্রভাবে”: সমসময়ে শিল্প-সাহিত্যক্ষেত্রে স্কুলতার সঞ্চার অবধারিত হয়েছিল। উনিশ.শতকের MACS শহর কলকাতার নতুন আলোকচ্ছটা এই চর্চার প্রসারতায় বাধা উপস্থিত করেছিল। তবে একটা বিষয় এখানে পরিষ্কারভাবে ধরা দেয়। রাজা-মহারাজদের রাজসেবার স্কৃতি বা আঠারো শতকের শেষের দিকের কলকাতায় ধনী রাজা-রাজড়াদের পৃষ্ঠপোষিত স্কুল wor সংস্কৃতি কোনমতেই তাকে গণজীবনের THAW থেকে তুলে এনে বিকশিত করার দায়িত্ব নেয়নি বা পালন করেনি। আত্মস্বার্থচরিতার্থতা ও আত্মবিনোদনের উপকরণ হিসেবে শিল্পসাহিত্যকে এঁরা দেখেছিলেন এবং এই উদ্দেশ্যে কবি-গীতিকারদের পৃষ্ঠপোষণা দিতেন কোনরকম সামাজিক দায়বোধের চিস্তাচর্চা ব্যতিরেকেই। উনিশ শতকের প্রথমার্ধে শহর কলকাতা থেকে যেসব সংবাদ-সাময়িকপত্র প্রকাশিত হতে শুরু করে, তার পৃষ্ঠায় সংবাদ-প্রতিবেদন রচনার সঙ্গে সঙ্গে স্বাধীন চিস্তাচর্চাপ্রসূত কাব্যকৃতির প্রকাশ ঘটতে শুরু করে। শহর কলকাতার এবং শহর কলকাতার বাইরের উঠতি কবিরা এইসব সংবাদ-সাময়িকপত্রের পৃষ্ঠায় হাত পাকাতে শুরু করেন। সংবাদ- সাময়িকপত্রের সম্পাদকরাও এক্ষেত্রে এইসব কবি-যশোপ্রার্থীদের কবিতা পরিমার্জিত করে যথোচিত মর্যাদায় পত্রিকায় প্রকাশ করে এক সামাজিক দায়বোধের পরিচয় দিয়েছিলেন। এইদিক দিয়ে এইসব সংবাদ-সাময়িকপত্রের সম্পাদকরা লেখক তৈরির একটি সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এবং এর মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য পত্রিকা-সম্পাদক ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র ed! নিজে কবি ও সাংবাদিকের ব্রতচর্চায় রত থাকার দরুন তিনি সংবাদ ও কবিতা রচনার ব্যাপারে অন্যদের উৎসাহ ও প্রেরণা দেন। এইভাবে একটি অনন্য এবং অভূতপূর্ব সামাজিক দায়িত্ব পালন করে তিনি বাঙলা সাহিত্যকে চিরখনণী করে গেছেন। বঙ্কিমচন্দ্র মনে করতেন, যিনি যথার্থ গ্রন্থকার', তার কাছে 'পরোপকার ভিন্ন গ্রন্থ ANAT. অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। অন্যত্র তিনি আবার বলেছেন ফুল নিজের জন্য ফোটে না, পরের সেবাতেই তার সার্থকতা। অর্থাৎ ae তত্ত্বে যে বিষয়টি এখানে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তা হলো £ জনহিতসাধনই সাহিত্যের উদ্দেশ্য, সাহিত্যস্রষ্টার লক্ষ্য। এর পাশাপাশি বন্কিমচন্দ্র আবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, 'যশের জন্য লিখিবেন না। তাহা হইলে যশও হইবে না, লেখাও ভাল হইবে ANI” নিছক আত্মতৃপ্তিতে নয়, সামাজিক দায়বোধেই সাহিত্যের সার্থকতা। নিজে শিল্প- সাহিত্যের সেবক হওয়া এবং অপরকেও এই সেবকত্তের অংশীদার করে তোলার প্রক্রিয়ায় যে সামাজিক দায়বোধের পরিচয় নিহিত থাকে তা সবসময় প্রাপ্তির আনন্দে ধরা দেয় না। নিজে কি পেলাম তার চাইতে বড়ো হয়ে ওঠে অপরের জন্য কি করতে পারলাম--এই প্রশ্নটি। ১৮



Leave a Comment