গল্প সমগ্র [খন্ড-২] | Galpa Samagra [Vol. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
এখনই পুলিস এসে যাবে। লোকটাকে ধরে নিয়ে যাবে। সারাদিন ধরে ফুটপাথে ডাবের কাঁদি পড়ে থাকবে। লোকটা কবে ছাড়া পাবে কে UA! এক এই বাড়ির কেয়ারটেকার ওকে রক্ষা করতে পারে। বাড়ির দিকে ফিরতে ফিরতে সহদেববাবুর মনে হল এ ব্যাপারে তারও একটু দায়িত্ব আছে। তার জন্যেই লোকটি কাটারি আনতে গিয়েছিল। গোয়েন্দা দপ্তরের সঙ্গে সহদেববাবুর ভালই সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু সাধারণ পুলিসেরা সখের গোয়েন্দাদের মোটেই পছন্দ করে না। দুয়েকবার সহদেববাষু সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। আজকে গোলমালের মধ্যে মাথা গলালে পুলিস হয়ত তাকেও জড়াবে। তার যে গোয়েন্দা দপ্তরে সরাসরি যোগাযোগ আছে, সেখানে যে তার বেশ খাতির, তার পক্ষে সব পুলিসকে সেটা জানানো সম্ভব নয়। তাছাড়া পটললাল পালের wees রহস্যের অবিলম্বে সমাধান করতে হবে। সেই সূত্রে মিস্‌ জুলেখার সঙ্গে আজ বিকাল বেলাতেই আবার আ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে। সুতরাং আপাতত পুলিস এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। ঝুট বামেলায় জড়িয়ে লাভ নেই। [দুই] মিস্‌ জুলেখা ওরফে শ্রীমতী লেখা ভট্টাচার্য মিস্‌ জুলেখার নাম শুনে যদি কেউ ধরে নেন যে তিনি কোনও আ্যাংলো ইন্ডিয়ান তরুণী তবে তিনি খুব ভুল করবেন। প্রথমেই সেই ভ্রাস্তি নিরসন করা দরকার। ডাক্তার সহদেব শুকের মত মিস্‌ জুলেখারও একটি পূর্বনাম আছে। অবশ্য তিনি আদালতে এফিডেভিট করে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে নাম বদল করেননি। নাম বদলিয়েছেন নেহাতই পেশার দায়ে। মিস্‌ জুলেখার আগের নাম ছিল শ্রীমতী লেখা ভট্টাচার্য। রীতিমত ভটচাজ বামুন বংশের মেয়ে, গঙ্গাতীরের প্রসিদ্ধ পরিবারের তিনি কিশোরী বা তরুণী এমনকি যুবতীও প্রায় নন। চল্লিশ-বেয়াল্লিশ বছর বয়েস হয়েছে তার, তিন পুত্রকন্যার জননী। ক্লাস টেনে পড়ার সময় টেস্ট পরীক্ষার ঠিক দুদিন আগে গলির মোড়ের শ্রীহনূমান ব্যায়ামাগারের বালিকা শাখার ব্যায়াম শিক্ষক নারায়ণ ব্রিবেদীর সঙ্গে কুমারী লেখা ভট্টাচার্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে দক্ষিণেশ্বরে মা কালীর সামনে মালাবদল করেন এবং সিঁথিতে সিঁদুর আরোপ করে শ্রীমতী লেখা ব্রিবেদীতে পরিণত হন। এরপর চার-পাঁচ বছরের মধ্যে তিনটি পুত্রকন্যা তার oma কিন্তু ব্যায়ামবীর নারায়ণ ATM এর মধ্যেই সংসারে বীতশ্রদ্ধ হয়ে একদিন শেষরাতে লোটাকম্বল সম্বল করে একটা খবরের ঝ্ন্গজের ঠোঙায় রান্নাঘরের পেছনের ছাইগাদা থেকে কয়েক মুঠো ছাই নিয়ে পথে বেরিয়ে সেগুলো সারা শরীরে মেখে নিমতলা শ্মশানঘাটের কিঞ্চিৎ উত্তরে গঙ্গার ধার ঘেঁষে রেলের লাইন বাঁচিয়ে আস্তানা গাড়েন। যে কোনও কারণেই হোক, সংসার ত্যাগের পর তিনি প্রায় এক বছর মৌনী অবস্থায় থাকেন। সেখানে তার পরিচয় হয় মৌনীবাবা বলে। &



Leave a Comment