জীবানানন্দ : জীবন আর স্মৃতি | Jibanananda : Jiban Aar Sristi

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
অনিল। ঠিকই-_-দেহ কথাটা এখানে সঙ্গত হয়নি।...শরীর কথাটাকে তো তিনিই [জীবনানন্দ] জাতে তুলে' দিয়েছেন। তবে দেহ কথাটাও তো কেবলমাত্র অভিধানগত নয়। সূরেশ। দেহ সম্বন্ধে আপত্তি করবার কিছুই ছিলো না, কিন্তু ছেঁড়া! অনিল। ছিন্ন না বললে মানে বোঝো না নাকি? সুরেশ। ছেঁড়া শুনলেই হাসি পায়। অনিল। অনভ্যাস। সয়ে' গেলেই এর সৌন্দর্য্য ধরা পড়বে। দ্যাখো, এতদিনে আমাদের এ-কথাটা উপলব্ধি করা উচিত যে সংস্কৃত আর বাঙলা এক ভাষা নয়, সংস্কৃতের সঙ্গে বাঙলার নাড়ির বাধন বহুকাল ছিঁড়ে গেছে। বাংলা এখন একটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র, সাবালক ভাষা--তা'র ব্যাকরণ, তা'র বিধি-বিধান, তা'র spirit সংস্কৃত থেকে আলাদা ।...অথচ, আশ্চর্যের বিষয় বাঙলা কবিতা এখন পর্যন্ত সংস্কৃত কথাগুলোর প্রতিই পশক্ষপাত দেখাচ্ছে, সংস্কৃত conventionVen এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আমাদের কবিতায় এখনো সুন্দরীরা বাতায়ন-পাশে দাড়িয়ে কেশ আলুলিত ক'রে দেয়, মুকুরে মুখ দেখে, চরণ অলক্তক-রঞ্জিত করে, শুভ্র ও শীতল শয্যায় শোয়। আমাদের নায়িকাদের এখনো হস্তে লীলাকমলমলকে বালকুন্দানুবিদ্ধং Bert, যদিও ও-সব-ফ্যাশান দেশ থেকে বহুকাল উঠে গেছে। সংস্কৃতের দুয়ারে এই কাঙালপনা করে' আর কতকাল আমরা মাতৃভাযাকে ছোট করে' রাখবো? আমাদের ভুল জীবনানন্দ দাশ বুঝতে পেরেছেন বলে' মনে হয়; ভাষাকে যথাসম্ভব খাঁটি বাঙলা করে' তোলবার চেষ্টা তার মধ্যে দেখা যায়। তিনি সাহস করে লিখেছেন: সেই জল-মেয়েদের স্তন ঠাগা-_শাদা-_বরফের Boa মতনু। শুনে তোমার-_শুধু তোমার কেন? অনেকেরই-_হাসি পাবে, বলবে --'ঠাণ্ডা-_ শাদা--এ আবার কী?" কিন্তু এ শব্দ দুটো গদ্যে লিখতে পারি, মুখে বলতে পারি-_আর কবিতাতেই লিখতে পারবো না? কেন কবিতায় জানালাকে জানালা বলবো, বিছানাকে বিছানা ?..য়ত কথা আমাদের মুখের ভাষায় স্থান পেয়েছে...কাবাসমাজ থেকে তাদের একঘরে করে রেখে কেন আমরা আমাদের কবিতাকে এক বিপুল শন্দ-সম্ভার থেকে বঞ্চিত করবো? মৌখিক ভাষার Borsa ব্যবহার ara’ কবিতাকে স্বাভাবিক: ও সহজ SA তুলবো না কেন...আমি তো বলি, ক্ষণিকার ভাষা, জীবনানন্দের কবিতার ভাষা purest বাঙলা, কারণ তা বাঙলা ছাড়া আর কিছু নয়। ('প্রগতি'-- ভাদ্র, ১৩৩৬, 'বাঙলা কাব্যের ভবিষ্যৎ) ইচ্ছে করেই উদ্ধৃতি একটু দীর্ঘ করলাম, সেই সময়কার সাহিত্যিক আবহাওয়ার কিছু আভাস দেবার Sent | আজকের দিনের পাঠক নিশ্চয়ই এ-কথা ভেবে অবাক হচ্ছেন যে কবিতায় 'ঠাণ্ডা' বা 'শাদা” কথাটার ব্যবহারের সমর্থনের জন্য এতগুলো বাকাবায়ের প্রয়োজন হ'তে পারে, কিন্তু এ-কথা সত্য যে গম্ভীর ভাবের কবিতায় দেশজ ও বিদেশী শব্দের এমন স্বচ্ছন্দ, সংগত ও প্রচুর ব্যবহার জীবনানন্দর আগে অন্য কোনো বাঙালি কবি করেননি। মনে পড়ছে 'পাখিরা' কবিতা প্রথম পাঠেই আমাদের পক্ষে রোমাঞ্চকর হয়েছিলো 'স্কাইলাইটে'র জনা, 'প্রথম ডিমে'র জনা, 'রবারের বলের মতন' ছোটো বুকের জন্য, আর সেখানে 'লক্ষ লক্ষ মাইল ধ'রে সমুদ্রের মুখে' মৃত্যু ছিলো ব'লে। ওটা যে v



Leave a Comment