প্রবন্ধসংগ্রহ [খন্ড-২] | Prabandhasangraha [Vol. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
শেষতম যে গোষ্ঠীটি ভারতবর্ষে এল তাদের বিষয়ে জানবার একমাত্র উৎস খথ্বেদ। মনে করা হয় যে, এরা যাযাবর পশুচারী ছিল। হয়তো-বা আরও দূর অতীতে এরা ইয়োরোপের কোনও অঞ্চল থেকে যাত্রা শুরু করে, কয়েক শতক পরিক্রমা করে, এখানে CATR | তখন এদের মূল খাদ্য ছিল ফলমূল, গর ছাগলের দুধ, ঘি, দই, ক্ষীর, ইত্যাদি, আর আগুনে-ঝলসানো AGMA | যে সব অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে এরা আসে তাদের মধ্যে অনেকেই চাষ করতে জানত, ফসল থেকে তৈরি রুটিও সে অঞ্চলে এরা কখনও কখনও পেয়ে ও খেয়ে থাকবে। কিন্তু এরা নিজেরা চাষ করতে জানত Al | যাযাবর অতীতে এরা যখন কোনও বিপদে পড়ে বা বিপদের আশঙ্কায় দেবতার শরণাপন্ন হত, অথবা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বা ভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভ করে কৃতজ্ঞতায় দেবতা শরণ নিত, তখন এরা খুব সংক্ষিপ্ত একটা যজ্ঞ করত। সম্ভবত দলেরই-- প্রবীণতম বা প্রাজ্ঞতম-- একজন একটা পরিষ্কার জমিতে একটা পশু বধ করত। সে নিজে বা আর কেউ কিছু মন্ত্র আবৃত্তি বা গান BAG | তারপর সেই মাংস আগুনে ঝলসে নিয়ে সকলে ভাগ করে খেত এবং যে লোকটি পশু বধ করে গানে, আবৃত্তিতে যজ্ঞটি নিষ্পন্ন করত, সে-ও তার পরই পশুপালক হয়ে দলে যোগ দিত। এই ছিল প্রাথমিক পর্বের যজ্ঞ। পশুচারীদের মধ্যে চালু ছিল বলে এ যজ্ঞপদ্ধতির কয়েকটি স্থায়ী লক্ষণও ওই জীবনযাত্রার দ্বারা নিরূপিত হয়েছিল। যেমন, এরা নিজেরা যাযাবর ছিল বলে এদের কোনও মন্দির ছিল না, কোনও দেবমূর্তিও ছিল না। বেদি ছিল পরিষ্কার-করা এক টুকরো জমি। ওই বেদির ওপরে দেবতাদের উদ্দেশে স্তব করে নিজেদের অভ্যস্ত খাদ্য-- পশুমাংস, মধ, দুধ, fa, ইত্যাদি নিবেদন করত এবং যা তাদের প্রয়োজন তার জন্য প্রার্থনা BIG! কী সেই স্তবস্তুতি? দেবতাদের বর্ণনা আর পূর্বে তারা ভক্তদের যা যা দিয়েছেন তার উল্লেখ করে প্রশংসা। আর প্রার্থনা হল: APSA, দীর্ঘজীবন, আরোগ্য, স্বাস্থ্য, APTA, ধনসম্পত্তি প্রধানত গোধন) এবং সর্বোপরি খাদ্য। ইতিহাসের প্রথম পর্বে মানুষ ফলমূল সংগ্রহ করত; তার পরে শিকার করে মাংস সংগ্রহ করত। তার পরের পর্যায়ে সে পশুপালন করত। শিকার পাওয়া খানিকটা অনিশ্চিত ছিল, কিন্তু পশগুপালনে খাদ্যসংস্থান অনেক বেশি নিশ্চিত ছিল। ভারতবর্ষে আসবার সময়েও আর্যরা যাযাবর পশুচারীই ছিল, অনেক পরে প্রাগার্যদের কাছে চাষ করতে শিখেছিল। এ দেশে এসে তারা প্রাগার্যদের হারিয়ে দেয়। পরাজিতদের একটি অংশ আর্যদের দাসে পরিণত হয়, বাকিরা fray পর্বতমালার কাছের অরণ্য অঞ্চলে পালিয়ে যায়। আর্যরা ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ থেকে পঞ্জাবে ও পরে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ দখল করে বসবাস করতে থাকে। বনজঙ্গল পুড়িয়ে চাষের জমির পরিমাণ বাড়াতে থাকে, তত দিনে তারা প্রাগার্যদের কাছ থেকে চাষ করতে শিখেছে। তার আগে প্রথম যখন প্রাগার্যদের সঙ্গে সংঘাত হয়, তখনো আর্যরা পশুপালকই ছিল এবং প্লাগার্যদের সম্পত্তি ও খাদ্য লুটপাট করে খাবার সংগ্রহ করত, শিকারও করত, বনে ফলমূল সংগ্রহও করত। কিন্তু এ সব মিলিয়েও যা খাবার জুটত তা তাদের প্রয়োজনের ১৮



Leave a Comment