বনে যদি ফুটলো কুসুম | Bane Jadi Phutlo Kusum

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
সেটা তার শোবার ঘর। দারুকেশ্বর কী ক'রে টের পেলেন? তবে কি শৈশবের কোনো স্মৃতি তাঁকে নিয়ে গেছে সেখানে? ঠিক। তাই ঠিক! হয়তো শিশু বলে গ্রাহ্য না কারে কোনো একদিন দারুকেশ্বরের সামনে দাঁড়িয়েই তিনি লক্ষ্মীর পটটি সরিয়েছিলেন, বসে বসে দেখেছিলো সে। সেই পটটি। কিন্তু সে কবে? কবে? কবে এই পাপ করেছিলেন কেদারেশ্বর? সেই কুলাঙ্গারটাকে কবে তিনি এই স্বর্গের সিঁড়ি দেখিয়েছিলেন? ভাবতে ভাবতে কেদারেশ্বর চুল ছেঁড়েন। আর তার স্ত্রী, যার রং তপ্তকাঞ্চনের মতো. যিনি দুর্বল, নরম, ভীরু, তিনি এক পলকে তাকিয়ে থাকেন স্বামীর দিকে, তাকিয়ে থাকতে থাকতে স্বামীর বদলে ছেলের মুখটা ভেসে ওঠে চোখে, কতক্ষণ পরে স্বামী আর ছেলে একটা মানুষ হয়ে যায়। একটা দেহ. একটা আত্মা। বুকের মধ্যে কেমন ক'রে ওঠে তার। ধড়ফড়িয়ে শুয়ে পড়েন! পৃথিবী থেকে বাতাসটা কমে যায়। এই ক'রে করেই কাটতে লাগলো দিন। তারপর মাস তিনেকের মাথায় কোনো এক রাত্রে ঘুমের মধ্যেই মারা গেলেন দারুকেশ্বরের মা। নিঃসঙ্গ কেদারেশ্বর টাকার শোক ভূলে স্ত্রীর শোকে অভিভুত হ'লেন। জীবনে এই প্রথম অনুভব করলেন স্ত্রীকে তিনি টাকার চেয়েও বেশী ভালোবাসতেন। দুই এদিকে দারুকেশ্বর তার মাতৃভূমি নন্দন গ্রাম থেকে বেরিয়ে সোজা ট্রেনে চেপে কলকাতা চলে এলেন। পথে নালতা গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে এক বেলার জন্য উঠে বৌকে রেখে এলেন সেখানে। কথা থাকলো তিন মাস পরে বাচ্চা হ'য়ে গেলে, বাসাবাড়ি ঠিক ক'রে নিজের কাছে নিয়ে যাবেন। কলকাতা দারুকেশ্বরের অচেনা শহর নয়, ব্যবসা সংক্রান্ত ব্যাপারে অনেকবার তাকে আসতে হয়েছে এখানে, দোকানের জিনিসপত্র কিনে কেটে নিয়ে যেতে হ'য়েছে। কেদারেশ্বরের সঙ্গে টুকটাক ঝগড়া-ঝাটির শুরু থেকে আরো বেশী এসেছেন। বড়বাজারের গদিতে থেকেও গেছেন দু' চার ANS | খোঁজ খবর নিয়েছেন এখানে এলে তার কী রকম সুবিধে হাতে পারে। এই বড় ঝগড়ার দু' সপ্তাহ আগে এসে একেবারে আঁট ঘাট বেঁধে গিয়েছিলেন। সুতরাং গুছিয়ে বসতে অসুবিধে হ'লো না কিছু। আপাতত অন্যের দোকানেই কর্মচারী হ'লেন, ইচ্ছে রইলো সুবিধে মতো একটি ভালো ঘর পেলেই একা হ'য়ে আলাদা দোকান দেবেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বুঝতে পারলেন নন্দন গ্রামে ব্যবসা জমানো আর কলকাতা এসে ব্যবসা জমানো সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার গ্রাম আর শহর দুই বিপরীতগামী স্থান | একটার সঙ্গে আর একটার কোনো মিল নেই। এখানকার দুর্বাঘাস মাটি যেমন সিমেণ্ট কংক্রীটে - ১৬



Leave a Comment