মানুষের অধিকার | Manusher Adhikar

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
এবার সড়কের দু'পাশের লোকজনদের মধ্যে খানিকটা উত্তেজনা দেখা দেয়। নিজেদের ভিতর ফিস ফিস করে তারা কিছু একটা পরামর্শ করতে থাকে। বট়িয়া ভোজন অর্থাৎ উত্তম আহারের ব্যাপারটা তাদের রীতিমতো চঞ্চল করে তুলেছে। ধুরসন্ধর দুমরলাল জনতার প্রতিক্রিয়া ops করছিল। সে বার বার উৎকৃষ্ট “ভোজন*-এর কথা বলে তাদের ফুসলাতে থাকে, 'আইয়ে আইয়ে, চিত্তাকি কোঈ বাত নেহী। জুলুসে সামিল হলে “পুণ'ও হবে, লাভও হবে।' দ্বিধা যেটুকু ছিল, দ্রুত কেটে যায়। দু'পাশ থেকে নানা বয়সের বেশ কিছু মেয়েমানুষ এবং পুরুষ হাইওয়েতে নেমে আসে। মুহূর্তে মিছিলটা আরও খানিকটা লম্বা হয়ে যায়। 'ভোজন”-এর কথায় নাটোয়ার এবং ফকিরা কিঞ্চিৎ বিচলিত হয়ে পড়েছিল। নাটোয়ার জিজ্ঞেস করে, 'কী করবে চাচা? এরা তো খিলাতে পিলাতে চাইছে ।' ফকিরা বলে, 'পাইসা তো আর দেবে না, সিরিফ খিলাবে। লেকেন নিজের পেটটা ভরলেই চলবে! ঘরে তোর চাচি আর আমিনা রয়েছে। তাদের জন্যে কিছু নিয়ে যেতে হবে না?” একটু থেমে বলে, “তোর শর কী। একেলা আদমি, ঘরে বালবাচ্চা, জরু উরু নেই। নিজের একটা পেট নিয়েই তোর fowl! আমাকে তিন তিনগো পেটের কথা ভাবতে Ba’ আস্তে আস্তে মাথা নাড়ে নাটোয়ার। জোহরা বিবি এবং আমিনার কথা একটু আগে তার মাথায় ছিল না। ঠিকই তো, ফকিরা নিজে খাবে অথচ ঘরে বিবি আর মেয়ে উপোস দিয়ে থাকবে, তা তো হয় না। তা ছাড়া দুপুরে না হয় ভারতমাতাওলারা একবার তাদের খাওয়াবে কিন্তু রাস্তিরে কী খাবে তারা? আজকের পর কাল আছে, কালের পর পরশু তরশু এবং তারপরও অনেকগুলো দিন। এ বছর চাষের মরশুম শুরু হওয়া পর্যন্ত টিকে তো থাকতে ACA সে জন্য টাকা দরকার। সে টাকাটা একমাত্র মিলিটারি সিং-এর কাছে গেলেই পাওয়ার সম্ভাবনা। নাটোয়ার ফকিরার কানের কাছে মুখ এনে বলে, 'আও চাচা” দু'জনে পায়ে পায়ে হাইওয়ের একধারে চলে যায়। কিন্তু যেই তারা মিছিল থেকে বেরিয়ে নিচের কঁাকুরে ডাঙায় নামতে যাবে সেই সময় বাঘের মতো হাঁকরে ওঠে দুমরলাল, “এ শালে ভূচ্চরের ছোয়ারা, ওদিকে কোথায় যাচ্ছিস? মিছিলে তিন কদম যেতে না যেতেই COTA পড়ার ধান্দা! লোকটার চিলের নজর। তার চোখ এড়িয়ে বুঝিবা কিছুই হওয়ার জো নেই। নাটোয়ার এবং ফকিরা ভয়ানক চমকে GTS | বুঝতে পারে নিজেদের অজান্তে মিছিলে পা দিয়ে মারাত্মক ফাঁদে আটকে গেছে। দুমরলালেরা না ছাড়লে এখান থেকে বেরুবার আর উপায় নেই | আজকের দিনটা পুরা বরবাদই হয়ে গেল। মিলিটারি সিং-এর বাড়িতে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ফকিরা বহুদর্শী লোক। পঞ্চাশ পঞ্চানন বছর বেঁচে থেকে এই দুনিয়ার অনেক কিছু দেখেছে সে। মানুষ সম্পর্কে তার বিপুল অভিজ্ঞতা। ফকিরা জানে, দুমরলালদের চটাতে CAB | শশব্যস্তে বলে, 'ভাগব কেন? অয়সা ধান্দাই নেই। মাঝখানে ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে, তাই সড়কের কিনার দিয়ে যাব, ভেবেছিলাম |’ একটা চোখ (ছোটো করে দাঁতে দাত চেপে নিঃশব্দে একটি চতুর হাসি ফুটিয়ে তোলে দুমরলাল। বুঝিয়ে দেয়, ফকিরাদের মতলবটা সে ধরে ফেলেছে। আস্তে আস্তে মাথা নেড়ে বলে, “Pal SVs! কিনার দিয়ে যেতে হবে না, বীচমে (মাঝখানে) ঘুসে যা শালেরা। অগত্যা নিরুপায় হয়ে তা-ই করতে হয় ফকিরা এবং নাটোয়ারকে। দুমরলাল এবার গলায় লহর তুলে ধিক্কার দিয়ে বলতে থাকে, ‘fem ছিয়া ছিয়া! তারানাথজি তোদের ভালাই-এর জন্যে, ভারতবর্ষের ভালাই-এর জন্যে এত কষ্ট করে বেরিয়ে পড়েছেন, তোদের জন্যে ভোজন-উজন বন্ধু করে দিয়েছেন, রাতের পর রাত এক মিনিটকে লিয়ে ঘুমোন না, আর শালেরা-_তোরা কিনা তার মিছিলে দশ কদম হাঁটতে পারিস না! দেহ্‌ শেরীর) একেবারে মাখ্খন দিয়ে তৈরি! নিমকহারাম, বিশ্বাসঘাতী fst!’ oe



Leave a Comment