গড় শ্রীখণ্ড | Garh Shrikhanda

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
অমিয়ভূষণ মজুমদার সহসা রজব আলির মনে হলো সত্যটার তলদেশও সে দেখতে পেয়েছে : এটা সুরতুনের অকারণ জ্ঞাতিবৈর সাধন। জ্ঞাতির মেয়ে কিনা তাই। প্রথম চড়টা CAT সুরতুন হাউমাউ করে কেঁদে উঠেছিলো, কিন্তু উপর্যুপরি চড় পড়তে “ লাগলো যখন, বোবা কান্নায় হাহাকার করতে লাগলো সে। পড়শির ভিড় জমে উঠলো রজব আলির উঠোনে। সুরতুনের গায়ের কাপ্ড়টুকু দড়ির মতো পাকিয়ে তার গলা টেনে ধরেছে রজব আলি। অস্পষ্ট আলোয় সুরতুনের পিঠের ও পাঁজরার হাড়গুলো চোখে পড়ছে, তার ধূলিমলিন বুকের মেদহীন আকুঞ্চিত স্তন দুটি ৷ মাধাই বায়েন বিষ দিতো গোরুকে। চামড়ার ব্যবসায়ী সানিকদিয়ারের কফিলুদ্দি সেখ। বারোখানা ছাল পৌছে দেবার বরাত নিয়ে মাধাই আযাঢ় মাসে পঁচিশ টাকা আগাম নিয়েছিলো তার কাছ থেকে। কিন্তু বরাত রাখা সহজ কথা নয়। সে ছাড়াও ছাল তুলবান লোক এঅঞ্চলে আছে, কেউ-কেউ আবার কফিলুদ্দির মাইনে-করা। তিনখানা ছাল পৌছে দেবার পর বিপদে পড়লো মাধাই, আর গোরু মরছে না এ অঞ্চলে | ওদিকে কফিলুদ্দির তাগাদা তাগাদা শুধু মুখেই নয়, হাটফেরা পথে গালমন্দও Ad | এই পথে নামলো মাধাই। দুমাসে চারটি গোরুকে বিষ দিয়েছিলো সে; কিন্তু সব Ba ছালই যে তার হাতে পৌছেছে এমন নয়, তিনটিই অন্যের হাতে পড়েছে। যত ঝুঁকিই সে নিয়ে থাক, যত কৌশলেই সে কাজটা করে থাক, তাব দাবির যুক্তিটা প্রতিপক্ষকে বলা যায় না। নীরব দর্শক হওয়া ছাড়া আর কী করতে পারে সে? কিন্তু কফিলুদ্দির কাছে সমব্যথা আশা করার চাইতে তার আত্মহত্যা আশা করা সহজ | সে ছাল চায়, যেমন চৈতন্য সাহা চায় দাদন-দেওয়া -পাট। অন্য কোনো কথা বোঝার ব্যাপারে অত্যন্ত নির্বোধ বলে মনে হয় তাদের দুজনকে। চিকন্দিতে গোরু PI | যাদের আছে তারা ছুঁশিয়ার হয়ে CHR বুধেড়াঙায় গোরুর সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু সান্দারদের ঘরে যেতে সাহস হয় না। সুরতুন যে মারটা খেয়েছিলো তাতেই মাধাই গুঁড়ো হয়ে যেতো। সব চাইতে মুশকিল করেছে রামচন্দ্র । যে-বিষ কফিলুদ্দি নিজে নারকেলডাঙা থেকে আনিয়ে দিয়েছিলো গো-বধের জন্য তার কাছে রামচন্দ্র ওস্তাদি হার মেনেছে। কিন্তু রামচন্দ্রর মণ্ডলগিরির প্্যাচে হার মানতে হলো কফিলুদ্দিকে । গোরু মরলে মাটিতে পুঁতে ফেলছে গ্রামবাসীরা | কয়েকদিন ধরে নানারকম উল্টোপাল্টা ভেবে আবার প্রথম যে-রাতে মাধাই কলাপাতায় মুড়ে বিষ-মাখানে! ভাত নিয়ে বেরিয়েছিল রামচন্দ্র মণ্ডলের হাতে ধরা ATS গেলো। ICIS আর চিকন্দির সীমায Ste দিলো রামচম্দ্র-কে যায়? ছুটে পালাতে গিয়ে মাধাই বুধেডাঙার পথ ধরেছিলো; কিন্তু বুধেডাঙায় রজব আলি সান্দার জেগে ছিলো। মনে হলো My গলায় খাকরি দিয়ে দাওয়ায় এসে দাঁড়ালো। সেও যেন হাক দিলো-কে যার? মাধাই আর পারলো না। দৌড়তে গিয়ে তার বুকের মধ্যে ঢিপটিপ করছে। পিছন থেকে রামচন্দ্র তার বিষসুদ্ধ হাতখানা চেপে ধরেছিলো। বৈদ্যর চোখে দেখামাত্রই ধরা পড়েছে। ২০



Leave a Comment