দশটি উপন্যাস | Dashti Upanyas

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
“এত রাতে কফি!” ঘরের আড়াল থেকেই জবাব দিল পৃথা, “ঘুমোবে কখন?” MS আর কোথায়! সাড়ে তিনটে বাজল বোধ হয়।” পৃথাকে ঘর থেকে বেরিয়ে আসার সময় দিয়ে আদিত্য বলল, “এমনিতেই পাঁচটায় মর্নিং-ওয়াকে যাই। আজ না হয় আগে বেরুব-_শরীরটাও ছাড়ানো যাবে।' তিন হাত দুরত্ব থেকে স্পষ্ট চোখে আদিত্যর দিকে তাকাল পৃথা। 'টায়ার্ড লাগছে?” 'না। বরং ঝরঝরে লাগছে অনেক। তবে, অনিশ্চয়তার একটা জের আছে তো, AA ওপর চাপ পড়ে।' 'মাঝে মাঝে তুমি তোমার চরিত্রদের ভাষায় কথা বলো!” বাবাকে দেখতে দেখতে হাল্কা হবার সুযোগটা ছাড়ল না YAN, 'তুমি বোসো। আমি কফি বানিয়ে আনছি।” কফি বানাবার জন্যে রান্নাঘরে ঢুকল পৃথা। আদিত্য চলে এল বসার ঘরে। আমি আমার চরিত্রদের ভাষায় কথা বলি না--পৃথাকে বলা যেত, চরিত্ররাই কথা বলে আমার SAT! আমারই অভিজ্ঞতা, অভিমান, আবেগ ও দুঃখ থেকে জন্ম নেয় তারা, ক্রমশ গড়ে ওঠে আমাবই ভালবাসা ও ঘৃণায়, গুপ্তঘাতকের চক্রান্তে-_যা আমি হতে পারতাম কিন্তু হইনি, যা আমি পেতে পারতাম কিন্তু পাইনি, এইভাবে। তার পর আলাদা হয়ে দাঁডিয়ে ওঠে নিজেদের পায়ে। ছোট্ট কাচের জারে জডাজড়ি করে বেঁচে থাকা মাছগুলোকে আ্যাকুইবিয়ামেব বড় জলে উপুড় করে ছেড়ে দিলেই ডানার জড়তা কাটিয়ে আত্মহারা, তারা ছুটতে থাকে নানা দিকে। ওইভাবেই পেয়ে যায় যে যার নিজের রঙ ও AS) তারপর আবার ফিরে আসে পরস্পরের দিকে-_-মেতে ওঠে আলাপ, পবিচয়, ভালবাসা ও আক্রমণে। যে যেমন সে তেমন রপ্ত করে নেয় ভাষা; একই জল থেকে টেনে নেয় বাঁচার বিভিন্ন উপকরণ। আলাদা হয়ে যায় রক্তের গ্রুপ। ব্যবহারও। তখনই গোলমাল হতে থাকে তাদের সামাজিক বিন্যাসে, গণতন্ত্রে। একজন ভয় দেখায় আর একজন ভয় পাবে বলে। একজন গুলি চালায় যাতে গুলি করার একই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় আর একজনকে। না, এসব বলা যাবে না। নিজেকে নিজেরই দুর্বোধ্য লাগে আদিত্যর। আজ, এখন বলে নয়; প্রায়ই। মাঝে মাঝে মনে হয় নিজেকে নিজের ব্যাখ্যার দ্বারা চালিত করার মধ্যে আবেগ যতটা আছে সততা ঠিক ততখানি নেই। কিংবা লেখা নিয়ে, দেশ, সমাজ, রাজনীতি ও মানুষ সম্পর্কে লেখকের প্রতিক্রিয়া নিয়ে সে যা যা ভাবে ও যে-ভাষায়, তার মধ্যেও অভিনবত্ব নেই কোনও। তার আগেও আরও অনেক লেখক ভেবে গেছে এসব, তার পরেও ভাববে আরও অনেকে। সমাজ ও মানুষ তাতে বদলাবে না এতটুকুও। বোধহয় এটাই সত্যি, ভাবনার ভাষা ও প্রতিক্রিয়ার ভাষা এক নয়; আর প্রতিক্রিয়া যতক্ষণ না হয়ে উঠছে শারীরিক ও প্রত্যক্ষ, ততক্ষণ শুধু অক্ষরে আবদ্ধ তার অস্তিত্ব নিয়ে নাড়াচাড়া করবে কিছু লোক, যাদের নাম দেওয়া হয়েছে পাঠক-পাঠিকা-_যারা ক্ষুধার বিবরণ পড়তে পড়তে নিজেরাও হয়ে ওঠে ক্ষুধার্ত, তার পরও যা গেলে সবই চোখ দিয়ে, শেখেনি মুখ কিংবা দাঁতের ব্যবহার; অক্ষরই তাদের তেল-নুন-লকড়ি। খুব সহজে চেনা যায় এদের-_-এরা তারই সগোত্র। এই যে কোথাও কিছু নেই খুন হয়ে গেল চারটে ছেলে, এদের কথা ভেবে খানিক আগেই মুঠো শক্ত ১৬



Leave a Comment