ঝাঁসীর রাণী | Jhansir Rani

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
সব জায়গায় যেতে হবে, সেই সব মানুষকে জানতে হবে, যারা আজে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে তাদের বাঈসাহেব মরেনি। কোথাও না কোথাও লুকিয়ে আছেন তিনি। তখন এই সব অশিক্ষিত, দরিদ্ব, কিষাণ-কিযাণী মানুষের মনের বিশ্বাস থেকে আস্তে আস্তে প্রতিভাত হবে এক অপুর্ব নারী, এই ভারতবর্ষের হারান দিনের এক আশ্চর্য মেয়ে | আমাদের দেশের অন্তরের সবটুকু সত্য নিঙড়ে যদি একটি আধারে ধরা যায় তো তিনি রাণী লক্ষ্মীবাঈ। একটি মেয়ের সম্পর্কে যদি শতবর্ষ ধরে জনসাধারণ জেনে থাকে, মাটি তার হাতে সংগ্রামী সৈনিক হয়ে উঠত, কাঠ তার হাতের স্পর্শে হয়ে যেত তরবারি, পাহাড় হয়ে যেত গতিচঞ্চল ঘোড়া, তবে সে মেয়ে কিরকম ? শক্তিরূপে দুর্গাকে আমরা আহ্বান করি বছরে একবার | কিন্তু গল্পে, গানে, গাথায়, বহু মানুষের মনে রাণী লক্ম্মীবাঈ-এর আজও frozen, নিত্য আরাধনা | এই যে মানুষের শ্রদ্ধা, এ কি শুধু ভাবপ্রবণ মনের উচ্ছ্বাস ? এর কি কোন ভিত্তি ছিল না ? সেই সব কথা জানতে হলে চলে যেতে হবে একশ” বছর আগেকার বুন্দেলখণ্ডে। জানতে হবে ঝালীকে । আর যেতে হবে তীর্থযাত্রীর মন নিয়ে। কেননা, রাণী লক্ষ্মীবাঈ তো একটি বিচ্ছিন্ন এবং একক চরিত্র নন। ছিয়ানব্বই বছর আগে ভারতবর্ষের বুকে বুটপরা পা রেখে মাড়িয়ে দিয়েছিল ইংরেজ । ভারতবর্ষের পাঁজর ভেঙে আর্তনাদ উঠেছিল সেদিন । সেই আর্তনাদই পরে মুখর হয়ে উঠেছিল একটি প্রতিবাদের সমুদ্রগর্জনে। কেঁপে গিয়েছিল তাতে শাসকের সিংহাসন। সমুদ্রপারের রাজপ্রাসাদে অর্ধপৃথিবীশ্বরী মহারাণীর মনে শাস্তি ছিল না, চোখে ছিল না ঘুম । সেই দিনের ভারতবর্ষের মনের কথা হচ্ছেন রাণী লক্ষ্মীবাই। সেদিনের অসংখ্য ভুল ত্রুটি অক্ষমতা পরাজয় সব ছাপিয়ে একটি কথা সত্যি ছিল। সেটি হচ্ছে বিদেশী নাগপাশের বিরুদ্ধে প্রথম সচেতন বিদ্রোহ | সেই চেতনা যতদিন থাকবে ততদিন রাণী লক্ষ্মীবাঈ-এর নাম অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে আমাদের দেশে । তাঁর যোগ্য কোন স্মৃতিসৌধ না থাকলেও রাণীকে কেউ ভুলবে না। !



Leave a Comment