শঙ্খচিলের ডানা | Shankhachiler Dana

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
পেরিয়ে এক-এক ঝলক কনকনে ঠান্ডা বাতাস এসে হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে ক্লাসরমের ভেতর। যতটা পারছে, সে গোটোসোটো হয়ে বসছে। কিছুটা ঠান্ডায়, কিছুটা নিজেকে লুকিয়ে রাখার একটা দুর্বোধ্য প্রয়াসে ক্রমে মাস্টারমশাইরা একে-একে ঢুকতে লাগলেন হলঘরের মধ্যে । প্রথমে STUNTS টিচার নৃপতিবাবু। তারপর মণিবাবু। মণিবাবু নীচের ক্লাসে ইংরেজি পড়ান। ভীষণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বাতিক | অভ্যাসমতো বারবার ধুতির YO তুলে ধরে মুখ মুছছেন। ইতিহাসের টিচার অমিয়বাবু ঢুকলেন খুব ধীরগতিতে i খুব ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে তাঁর চোখমুখ। তারপর Hersey আর বিজ্ঞানের টিচার জীবেশবাবু একসঙ্গে । একটু পরেই শঙ্খদের ক্লাসটিচার একলব্যবাবু। তাঁর লিকলিকে শরীরে একটা মোটা চাদর জড়িয়ে রেখেছেন, হাতে অবশ্য RAT নেই আজ। একলব্যবাবুর হাতে ছপটি বেত যাই থাকুক, দেখলেই TAA গায়ে Ra আসে। কিছুক্ষণ পর ধুতি-পাঞ্জাবি পরা একজন অচেনা ভদ্রলোককে নিয়ে ঢুকলেন হেডস্যার। তাদের পেছন-পেছন হরিসাধনবাবু। অচেনা ভদ্রলোক একেবারে মাঝখানের চেয়ারে বসতেই শঙ্খ বুঝে নিল, ইনিই ইস্কুলের প্রেসিডেন্ট ভোলানাথ PART | কলকাতার কলেজের প্রফেসর। খুব বিখ্যাত মানুষ৷ তারা ঢুকতেই ছাত্ররা সবাই ছড়মুড় করে উঠে দাঁড়াল। ততক্ষণে AIS বেঞ্চিগুলো ভরে উঠেছে। তাদের কথায়, গল্পে গমগম করছিল হলঘর। প্রেসিডেন্টকে নিয়ে হেড্মাস্টার সুরেশবাবু ঢুকতেই মুহূর্তে চুপ হয়ে গেল HANS! সে বোধহয় কয়েক মুহূর্ত। তারপর ক্রমে ফিসফাস, oe | শঙ্খর পাশে ব-খন যেন গুটিগুটি এসে বসে পড়েছে পার্থ । পার্থর সঙ্গে শঙ্খর একটা আলাদা রকমের THY | ক্লাসের ফার্স্টবেঞ্চিতে পাশাপাশি বসে eat | আজও পার্থ ঠিক খুঁজে-খুঁজে তার পাশে এসে বসেছে। তবে ফার্স্ট বেঞ্চে নয়, তারা মাঝখানের দিকে বসেছে আজ। বসেই ফিসফিস করে বলল, আমার খুব ভয় করছে। শঙ্খ বলতে চাইল, তারও ভয় করছে। কিন্তু তার গলা দিয়ে কোনও WAS বেরুল না। তার ঝাপসা চোখের সামনে তখন নড়াচড়া করছে চেয়ারে বসা মানুষজন চেয়ারের পেছনেও ভিড় করে আছে অনেক লোক। নিশ্চয় গার্জেনই হবেন SAT! কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে। পার্থর ওপাশে হঠাৎ কোথেকে টুক করে এসে বসল ভবানী। বসেই চোখ নেড়ে বলল, এই, ক্লাস ফাইভ তো জলের পাইপ ছিল, ক্লাস সিক্স কী হবে রে? শঙ্খ অবাক হয়ে তাকালো ভবানীর দিকে। ভবানী বরাবরই খুব ডেকোহেঁকো ধরনের ছেলে ক্লাস পালিয়ে টো-টো কবে ঘুরে বেড়ায় আগানবাগান। পড়াশুনোর তোয়াক্কা করে না, তবু আজ রেজাপ্ট-আউটের দিন তার মাথায় এই সব ঘুরছে! পার্থ মাথা নাড়ল, ফিসফিস করে বলল, জানি নে-_ -_-এই শঙ্খ, তুই জানিস? শঙ্খও মাথা ঝাঁকায়, সে এখন এসব কিছু ভাবতেই পারছে না। তার সামনে গোটা পৃথিবীটা এখন দুলছে। ভবানী বলে চলেছে, ক্লাস ওয়ান-__ইস্কুলের দারোয়ান, ক্লাস টু--ভগবানের বন্ধু, ক্লাস fa—ara বিড়ি, ক্লাস ফোর-_জুতো চোর, ক্লাস ফাইভ- জলের পাইপ, ক্লাস সিন্স তাহলে কী? সেই মুহূর্তে অগনিত গুনগুন, কানাকানি, ফিসফাসের ভেতর গমগম করে উঠল হেডমাস্টার মশাইএর গম্ভীর কন্ঠস্বর, সাইলেক্স প্লিজ-- ১৮



Leave a Comment