অবিস্মরণীয়া | Abismaraniya

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৬/অবিশ্মরণীয়া মহাগ্রন্থ Das Kapital (1867) যদিচ বিশুদ্ধ ইতিহাসকে সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা, কিন্তু আর. এইচ. টনি (Towney, 1886-1962)র Religion & the Rise of Capitalism (1926) কে লোকরঞ্জক xo) ইতিহাস বলা যায়। টনি অবশ্য মার্কসীয় দৃষ্টিতে সমস্যাটা দেখেননি। otfo cera (1874-1965) ছয় খণ্ডের দ্য সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ার। টয়েনবীর (1889- 27) অতি বিশাল বিশ্ব ইতিহাস একাধারে বিশুদ্ধ ইতিহাস এবং CPAs | অনুরূপভাবে বাঙলা ভাষাতেও সমান্তরালে একটি ধারা প্রবাহিত । এবারেও আমরা পূর্ণ তালিকা দাখিলের প্রয়াস না করে নমুনাস্বরূপ কয়েকটি দিকচিহ্নের উল্লেখ করছি : ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্তের (1880-1961) অপ্রকাশিত রাজনৈতিক ইতিহাস অথবা বাংলার ইতিহাস; ঈশান স্কলার বিনয়কুমার সরকারের (1887-1949) তেরটি খণ্ডে প্রকাশিত বিশালায়তন বর্তমান জগৎ; সুরেন্দ্রনাথ সেনের (1890-1962) অশোক; AANA বন্দ্যোপাধ্যায়ের (1891-1952) সাহিতা-সাধক চরিতমালা, সংবাদপত্রে সেকালের কথা কিংবা বঙ্গীয় নাটাশালার ইতিহাস; যোগেশচন্দ্র বাগলের (1886-1962) মুক্তির সন্ধানে ভারত বা স্ত্রীশিক্ষার কথা; নীহাররঞ্জন রায়ের বাঙালীর ইতিহাস, বিনয় ঘোষের একাধিক গ্রন্থ, প্রমোদরঞ্জন সেনগুপ্তের (1886-1962) ভারতীয় মহাবিদ্রোহ, নীলবিদ্রোহ ও তৎকালীন বাঙালী সমাজ; বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস। (6B) লোকরঞ্জক রম্য ইতিহাস : সদ্য-বর্ণিত ধ্রুপদী লোকরঞ্জক ইতিহাসের সঙ্গে এর মৌল পার্থক্য রম্যতাগুণ। এ জাতীয় রচনাতেও কাল্পনিক চরিত্র আমদানী করার রীতি নেই, তবে sae চরিত্র প্রায় এতিহাসিক উপন্যাসের ঢঙে আলাপচারীতে রত হলে আপত্তি করার রেওয়াজও নেই, শুধুমাত্র যদি দেখা যায় লেখক সেই কথোপকথনের মাধ্যমে ইতিহাসকেই পরিবেশন করছেন। কল্পিত কাহিনী নয়। সাল তারিখ সচরাচর বর্জিত, ফুটনোট বরদাস্ত করা হয় না। তবে গ্রন্থশেষে একটি গ্রন্থপঞ্জি দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়-_সহায়ক গ্রন্থের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা। এই ধারার প্রথম যুগের প্রচেষ্টা অক্ষয়কুমারের সিরাজদ্দৌলা (তিনি অবশ্য সাহিত্যের ‘APS গুণের চেয়ে এঁতিহাসিক “তথ্য 'কে ada প্রাধান্য দিয়েছিলেন) এবং নিখিলনাথ রায়ের মুশির্দাবাদ কাহিনী। ইদানীং শোনা যাচ্ছে এই ধারাটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবারেও নমুনা হিসাবে অসংখ্য সাম্প্রতিক প্রকাশনার ভিতর দু-একটি বইয়ের নাম করি, যথা সুকন্যার নুরজাহান, স্রীপারাবতের বাহাদুর শাহ, জাহানারা। অধম লেখকের বেগ আনন্দস্বরাপিনী লাডলিম, হংসেশ্বরী। উপন্যাসের অথবা কথাসাহিত্যের ঢঙে রচিত, সাহিত্য রসসিক্ত এই গ্রন্থগুলিতে কল্পনার বিন্দুমাত্র আশ্রয় নেওয়ার রেওয়াজ নেই, তবু রচনাগুণে সাধারণ পাঠককে এগুলি ইদানীংকালে যথেষ্ট আকৃষ্ট FAK! শুধু রচনার গুণে নয়, আরও একটি হেতু আছে। সাধারণ পাঠক ইতিহাসকে আজকাল বেশি করে জানতে চায় কিন্তু এতিহাসিকদের ধ্রুপদী রচনায় তারা দিশেহারা হয়ে ACG | ফলে এই জাতীয় বই লোকশিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। স্বীকার্য, লেখকের একদেশদর্শিতা দোষে, ‘CHR মজদুরী'র প্রবণতায় এতে কখনও কখনও ক্ষতিও হচ্ছে। ইতিহাসকে কিছু লেখক বিকৃত করছেন। তাঁরা পরিশ্রম করতে নারাজ! বিস্তারিত আলোচনার অবকাশ এখানে নেই। নমুনা হিসাবে একটি মাত্র জনপ্রিয় 'লোকরঞ্জক রম্য ইতিহাসকে বেছে নিচ্ছি : তপনমোহন চট্টোপাধ্যায়ের পলাশীর যুদ্ধ। গ্রন্থটি জনপ্রিয় হওয়ায় লেখক এর পর রচনা করেন: পলাশীর পর বক্সার। তপনমোহন প্রথমোক্ত গ্রন্থে লিখছেন : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার (সিরাজদ্দৌলার) গুদ্ধত্য-লাম্পট্য কাগুজ্ঞানের অভাব যেন আরও বেড়ে যেতে লাগল। বুনো স্বভাব যেন আরও বন্য হতে চলল। না হল তীর যুদ্ধবিদ্যা শেখা, না হল তার রাজকার্য চালানোর কোন জ্ঞানগম্যি। এক কাব্যকাহিনী ছাড়া আর কিছুতে তো সিরাজদ্দৌলাকে কোনক্রমে শহীদ বানাতে পারা যাচ্ছে না। কী হিন্দু, কী মুসলমান, কী ইংরেজ, কী ফ্রেঞ্চ, কী ডাচ একজনও কেউ তাকে একটা ভালো সার্টিফিকেট দিয়ে যাননি 6



Leave a Comment