সমর্থপঞ্চম : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাঁসুলীবাঁকের উপকথা | Samarthapancham Tarashankar Bandhopadhyayer Hansulibanker Upakatha

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
২০ সমর্থপঞ্চম : তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের হীসুলীবীকের উপকথা হত্যা করতে বাধ্য হল। অন্যথায় সে নিজেই মারা AS! তারাশঙ্করের sense of tragedy এই গল্পে লক্ষ করা যায়। অধ্যাপক ক্ষেত্র গুপ্ত লিখেছেন তারিণী যে সুখীকে জলতলে হত্যা করে উঠে এল তার মধ্যে বিশেষ এক রকম জীবনসত্যই নাকি ব্যক্ত হয়েছে : 'যেন এই জড় বিশ্বে মন বলে কিছু নেই-_আছ শুধু প্রাণ নিয়ত সংগ্রাম শুধু তাকে বাঁচিয়ে রাখার।' (“তারাশঙ্করের গল্প : শিল্প চেতনা।”-ক্ষেত্রগুপ্ত; গল্পকার তারাশঙ্কর : প্রতিভা ও মূল্যায়ন-_গ্রদ্থভুক্ত; সম্পাদক--তরুণকান্তি রায় : মনন প্রকাশন; নৈহাটি; ডিসেম্বর ১৯৮৫; পৃ. ৮)। আমরা এখানে ক্ষেত্রবাবুর ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ স্বীকার করতে পারছি না। বস্তুত, জড় প্রকৃতির মতো বেঁচে থাকার আকুলতাই এ-গল্পে একমাত্র সত্য নয়, এ-গল্পে রয়েছে একটি মানুষের অনিশ্চিত পেশা আর সুখের প্রত্যাশার বিপ্রতীপতা। সে যা চায় আর সে যা পায় শুধু তার বিপ্রতীপতাই নয়, এখানে আছে যার জন্য চাওয়া তাকেই ধ্বংস করার বাধ্যতা। আ্যারিস্টটল-ব্যাখ্যাত Peripety-F এ এক চূড়াস্ত উদাহরণ। 'আখড়াইয়ের দীঘি'-তেও এই রকম বিপ্রতীপতা উপস্থিত । কালী বাগ্‌দির পেশা (বৃত্তি নয় দুর্বৃত্তি) পুত্রহত্যার মতো অপরাধের দিকে চলে গেল। কিন্তু সেখানেই কাহিনী শেষ হয় না। মেয়াদ কেটে যাবার পর কালী ফিরে এল পুত্রের মৃতদেহ খুঁজতে-_ আখড়াইয়ের দীঘিতে পড়ে ঘাড় ভেঙে মরল সে। এই হত্যার আর হত্যার চক্রে একটি পেশার বৃত্ত সম্পূর্ণ হল কিনা বিবেচ্য। যদি তাই হয় doing আর মৃত্যু ১৪1 118-এর Pwr হয়েছে কালী চরিত্রে। সেজনাই এই কাহিনী অত্যস্ত উচ্চস্তরের বলেছি। 'অগ্রদানী' গল্পের পূর্ণ চক্রবর্তী লোভ আর Fou প্রতীক। তার নিজের পুত্রের fore ভক্ষণ করেছে সে, এ-ঘটনার সঙ্গে আরোগ্য নিকেতন-এর জীবন মশায়ের পুত্রের মৃত্যুর ক্ষণ ঘোষণার সামান্য মিল আছে। মোট কথা আমাদের মতে, তারাশঙ্করের কিছু ছোটগল্প জীবনের গভীর রহস্যময়তা আশ্চর্য লিপিকুশলতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। শৈলজানন্দ ও প্রেমেন্দ্র মিত্রের রচনার দ্বারা অনেকটাই প্রাণিত হয়েছিলেন তারাশঙ্কুর। এই দুই আঞ্চলিক প্রান্তিক জীবন পরিধির সার্থক রূপকারের রচনা পড়ে তার মনে হয়েছিল, তার জীবনাভিজ্ঞতার সঙ্গে আঞ্চলিক উপাদান সংযোজন করলে তিনিও সার্থক সাহিত্যিক হতে পারেন। তেমন চেষ্টাই ঘটেছে তারাশঙ্করের গল্পে। তার গল্প হয়েছে চরিত্রের চিত্রশালা। অধ্যাপক অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, তারাশঙ্করের হাতে পুতুল নয় প্রতিমাই খেলে ভালো--তিনি সেই প্রতিমার শিল্পী। তারাশঙ্করের চরিত্রগুলি পুতুলের মতো অন্য-নিয়ন্ত্রিত নয়--স্বনিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় উজ্জ্বল। সবাই অবশ্য প্রবৃত্তির চিরাচরিত বৃত্তটি ভাঙতে পারেনি। 'বাজীকর' বা 'ডাইনী”, 'যাদুকরী' বা 'চোর' প্রভৃতি গল্পে গোষ্ঠী বা বর্গের কথা পাই। একইরকম উপাদান পাই 'খাজাঞ্চিবাবু' গল্পেও এর বেশিরভাগই আঞ্চলিক পটভূমির কাহিনী! 'যাদুকরী' বা 'বাজীকরী” গল্পে a বাংলার নান্দনিক কাজকর্মে যুক্ত লোকায়ত জনগোষ্ঠীর সমগ্রতার রূপটি পাই। 'ডাইনী'-তে পাই ভাগ্যবিড়ম্বিত ডাইনি অপবাদ পাওয়া এক ASA মেয়ের কথা। একদিকে সমাজ তাকে ডাইনি বানচ্ছে, অন্যদিকে সে নিজেও সেই কুসংস্কারের তেরাটোপে বন্দি aa পড়েছে। নিহ্বর্গের মানুষের তথাকথিত অপরাধ- প্রবণতার ছবিটি একটু উল্টো দিক থেকে ধরেছেন তারাশঙ্কর তার 'ব্যাম্রচর্ম' গল্পে। রতন হাড়ি অপরাধ করে না--আসপাশের অপরাধের ঘটনার সঙ্গে নিজে যুক্ত সে কথা বলে লোকের মনে. ভয় ও aos সঞ্চার করে নিজেকে একটু ব্যতিক্রমী বলে জাহির করতে চায়। ‘Cota’ গল্পের মূল চরিত্র গৌর কবি উপন্যাসে নিতাই-য়ে কতকটা যেন বিস্তৃত রূপ



Leave a Comment