লীলারহস্য | Lilarahasya

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
২০/লীলারহস্য প্রসঙ্গকথা লক্ষ্মণবধূ উর্মিলার নীরব নিভৃত অশ্রুপাত একদিন বিচলিত করেছিল রবীন্দ্রনাথের স্পর্শকাতর কবিমানস। “কাব্যের উপেক্ষিতা"'র পাঠকমাত্রেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে একাত্ম হয়ে উর্মিলার ব্যথার সরোবরে একবিদ্দু হলেও সহানুভূতির অশ্রুবারি ঝরিয়ে দিয়েছেন। আমার কল্পনায় উর্মিলাকে আমি যে মূর্তিতে দেখেছি সেইভাবেই তাকে পাঠকসাধারণের সামনে উপস্থিত করেছি। যে সলজ্জ বধূ অযোধ্যার নিভৃত লীলানিকেতনে একদিন সৌমিত্রির চপল করস্পর্শে নিজেকে একান্তভাবে সংকুচিত রেখে সর্বোত্তম সমর্পণের ভাবটি প্রকাশ করত, সহসা প্রিয়তমের সঙ্গে নিদারুণ বিচ্ছেদে তার একান্তভাবে ভেঙে পড়ারই কথা। কিন্তু প্রথমে সে অসহায় নবোঢ়ার মতো নিরস্তর অশ্রুপাত করলেও দীর্ঘ চোদ্দোটি বছর নিশ্চয়ই তার মনে আরও অনেক রকমের ক্ষোভ আর আলোড়নের ক্রিয়া চলেছিল। ঝতুচক্রে অকৃপণা প্রকৃতি এই পরিত্যক্তা বধূটির কাছে তার বৈভবের জাদুবিস্তারে যে বিরত থাকেনি, একথা আমার মনে হয় সকল AVM জী স্বীকার করে নেবেন। উর্মিলার মন প্রকৃতির মায়া-শরক্ষেপে নিশ্চয়ই ক্ষতবিক্ষত হয়েছে; তার যৌবনবাসনা পীড়িত হয়েছে বারবার । কোমল পাতার মতো উর্মিলার যে মনটি একদিন থরথর করে Sirs, তা বিষাদ বিষণ্জতার পাষাণভারে দীর্ঘ সংক্ষোভ আর আলোড়নের ফলে আশ্চর্য এক ফসিলে পরিণত হয়ে গেছে। শুধু যার পরিচয়টুকু রয়ে গেছে পত্র হিসেবে, কিন্তু না আছে তার বর্ণ, না আছে তার কোমলতা আর না আছে তার PAT | দীর্ঘ চোদ্দো বছর পরে লক্ষ্মণ যে ফিরে এসেছিলেন সে কথার উল্লেখ নিষ্রয়োজন; কিন্তু তার প্রত্যাবর্তন আর একটি মনের ওপর কী প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল তা আমাদের একবার ভেবে দেখা প্রয়োজন। প্রতিটি তিথিতে তিলে তিলে সঞ্চিত বিরহবেদনা চতুর্দশী লগ্নটি পার হলেই নিজেকে একেবারে পূর্ণিমা অথবা অমাবস্যায় বিদীর্ণ করে দেয়। তখন সমস্ত সঞ্চিত ব্যথার উর্মি দুর্নিবার scence তটভূমিকে ভগ্ন ও প্লাবিত করে দিয়ে যায়। উর্মিলার দীর্ঘ চোদ্দোটি বছরের পুঞ্জিত ব্যথার উর্মি এমনি করে একদিন PRCT সঙ্গে পুনর্মিলনের লগ্নে যে উচ্ছ্বসিত আবেগে ভেঙে পড়েনি, এ কথা কে বলবে!



Leave a Comment