সাগরজলে | Sagarjale

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
বাতাসে উড়ছে, ট্রপিটা পর্যস্ত। টুপিটাকে টেনে টুনে সে ভাল করে মাথার ভিতরে ঠেলে দিল। সে যখন হাটে তখন কেমন উম্মনা হয়ে যায়। দেশের কথা নিশ্চয়ই মনে হয়। নাবিক হয়েও সে সমুদ্রকে ভালবাসতে পারেনি। বন্দর পার হলে দু'-দুটো মদের দোকান পাশাপাশি। বন্দরের কাজ-করা সাহেব মানুষগুলো সেখানে লাইন দিয়ে মদ টানছে। যীবা সমুদ্রতীরে বেড়াতে এসেছেন তারা ইটছেন বেলাভূমিতে। কানিভ্যাল BS বসবে না। বিকালে ফ়্লাস্ক-ভর্তি কফি নিয়ে এক দঙ্গল মেয়ে-বউ এসে সমুদ্রে স্মান করে গেছে, মোবারক Corsa উপর দাড়িয়ে তাদের দেখছিল। এখন যাঁরা এসেছেন বেড়াতে, সান্ধ্যভ্রমণ ওঁদের বিলাস। মোবারক আবার ইাঁটছে। মদের দোকান পার হলে ডানদিকে সি-ম্যানস মিশন। মিশনের দরজা ঠেলে দু'-একজন নাবিক তখন থেকেই ভিতরে ঢুকতে শুরু করেছে। দু'-একটা লাল নীল আলো তখন থেকেই জ্বেলে দেওয়া হয়েছে অন্ধকারকে ঠেলে দেওয়া জন্যে। সামনের চত্বর পার হয়ে ট্রাম লাইনের শেষ গতিরেখা। তার পশ্টিমে পাহাড বনভূমি এবং সমুদ্র। সমুদ্র সেখানে প্রবল প্রাণবস্ত। পাহাড়টা সেখানে সোজা ওপরের দিকে উঠে গেছে, অতাস্ত খাড়া। Sp মাথায় আলোঘর। সমুদ্রের উপর এখন থেকেই আলো ফেলতে শুরু করেছে। মোবারকের একবার ইচ্ছা হল খাড়া পাহাড়টায় উঠতে। fay প্রবলভাবে মোড দেওয়া বলে পাহাড়টার পথ কোনপিক থেকে কোথায় গিয়ে মিশেছে সে হদিশ এখান থেকে সংগ্রহ করা মুশকিল। ট্রাম লাইনটা (গছে পশ্টিম হতে পুবে। বন্দরের মানুষগুলোই একমাত্র এখান থেকে ট্রামে ওঠে। ATA দু' WAL পথ একান্ত জনহীন। এর ভিতর কোনও স্টপেজ নেই। শুধু ঢেউখেলানো পাহাড, চড়াই আর উতরাই। নিউ-প্লাইমাউথ শহরটা পাহাড়ের কোলে ধাপে ধাপে গ্যালারির মতো গড়ে উঠেছে। প্রতিটি ঘর থেকে সমুদ্রের ঢেউ আর জাহাজ স্পষ্ট। জাহাজ থেকে ফানেলের ধোঁয়া ঘরবাড়ি হয়ে এগমন্ট পাহাড়ের দিকে ছোটে এবং নিঃশেষে পাহাড়ের আড়ালে গা ঢাকা দেয় একসময়। মোবারক এসে থামল এক ধূসর APG উপত্যকায়। সে ট্রাম লাইন অতিক্রম করে দুটো পাহাড়ের ফাকে এসে গেল। এখানে পথ সাপের মতো এঁকেবেঁকে গেছে। সে বাশিটা বের করে এই সংকীর্ণ উপতাকায় পা দুটো বিছিয়ে বসল। শুকনো কাঠের উপরে বসে সামনের এক-আকাশ তারা আর শহরের প্রতি দৃষ্টি ছড়িয়ে নিভৃতে ধাশিটা বাজাল। তারপর আবার পথ ধরে হেঁটে গেল সামনে। ইলেকট্রিকের তার মাঠের উপর দিয়ে ছায়া ফেলে ফেলে ক্রমশ বুঝি ওয়াইঙ্গানার দিকে চলে গেছে। সেই ছায়ায় ট্রাক্টর দিয়ে মাটিতে চাষ করছে চাষিরা। চাষির মেয়ে-বউ মাটি থেকে নুয়ে নুয়ে কিছু সংগ্রহ করছে। মোবারক সেখানেও ইাটছে বাঁশি বাজিয়ে। চাষি আর ওর মেয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে দীড়াল। একটি wees বিদেশি সুরে তন্ময় হয়ে শিস দিল মেয়েটি। এবং মোবারক যখন সামনের আপেল-বাগানটায় পিকাকোরা পার্কের পথ ধরার জন্য ঢুকে গেল, মেয়েটি তখন কাধে তার বেলচে ফেলে একটি ইংরাজি গান ভারতীয় সংগীতের অনুকরণ করে গাইবাব চেষ্টা করল। মোবারক শুনেও যেন শুনল না। সে শোনে না। সে এমন তো কত বন্দরে দেখে এল। পিকাকোরা পার্কে যেতে হলে দুটো পথে যাওয়া যায়। এক শহর ধরে, Paracas বুক মাড়িয়ে। আর-এক, এই চড়াই-উতরাই, গমখেত, আপেল্স বাগান এবং প্রেস-বিটেরিয়ান চার্চটা যে পাহাড়-ছাদে আছে, সেই পাহাড়-ছাদ অতিক্রম করে। এখন সেই পথ ধরেছে মোবারক। সে নুয়ে নুয়ে বাশি বাজিয়ে উঠছে পাহাড-ছাদে। পাহাড়-ছাদে ওঠার পথ ত্রিশ ডিগ্রি সমকোণী ত্রিভুজের অতিভূজের মতো। দু'দিকে ঢালু জমি। জমিতে মসৃণ সবুজ ঘাস। সারি সারি কৌরি-পাইনের বনভূমি। অনেক নীচে ঢালু জমির কোলে কৌরি-পাইনের গাছগুলো সেপাইসান্ত্রির মতো সমস্ত নগরীকে পাহারা দিচ্ছে যেন। উপরে উঠতে হলে ওদেব বলে কয়ে উঠতে হবে সেই বুঝি নিয়ম। যেহেতু বরফ ঝবে গেছে সেইহেতু কৌরি-পাইনের পাতাঝরা শাখায় শাখায় নূতন কিশলয় খেয়ালখুশি মতো ব্শার ফলকরেখায় প্রকাশ পাচ্ছে। পথ ধরে হেঁটে গেলে অদ্ভুত এক সবুজ গন্ধ। ১০



Leave a Comment