ঠিকানা | Thikana

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১২ ঠিকানা -__তা যুদ্ধ কি আমাগো সাথে হইছিল? -_উঃ! বাংলাদেশের স্কুলে কি কিছুই পড়ানো হয় না। আমাদের সঙ্গে ইংল্যান্ডের যুদ্ধ হবে কী করে! আমরা তো তখন ইংরেজদের অধীন | একটা গরিব পিছিয়ে-পড়া উপনিবেশ | আমাদের অত মুরোদ হবে কোথা থেকে? সে সময়ে পৃথিবী জুড়ে বিশাল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এশিয়া আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়া সর্বত্র ছায়ার কথাবার্তা ভাবভঙ্গিতে মনে হয় পৃথিবীটা চিরকাল ঠিক এখনকার মতো ছিল। বাংলাদেশ, জগতের সবচেয়ে মার-খাওয়া ভূখণ্ড, ভারত পাকিস্তান ইংরেজ হিন্দু পঞ্জাবি সবাই তাকে শোষণ করেছে, সবাই তার দুশমন। পৃথিবীর শুরু ১৯৪৭ সালে | তার আগে সব APA | প্রথম প্রথম অমল চেষ্টা করত বোঝাতে বাংলাদেশ পাকিস্তান সব নিয়ে ছিল ভারতবর্ষ শুনলেই ছায়ার হাসিহাসি মুখ আর হাসিহাসি থাকে না। কথাগুলো যেন শুনতেই পায় না। অমল আর ছায়ার মধ্যে কেমন যেন একটা দেওয়াল গজিয়ে ওঠে | তাই এখন আর ইতিহাস-টিতিহাসের সূত্র অমল টানে না। এমনভাবে কথাবার্তা বলে যেন কোনও সময়ে বাংলাদেশ ভারতবর্ষের অংশ ছিল কি ছিল না তাতে কিছু যায় আসে না। নিজেকে মাঝে মাঝে বোঝায় কথাটতো মিথ্যে নয়। ভারতবর্ষই তো নেই। সে যে দেশের নাগরিক তার নাম ইন্ডিয়া, ব্রিটিশের সৃষ্টি । তাছাড়া সে নিজে তো পাক্কা ঘটি, ACH পারসেন্ট। পশ্চিমবঙ্গে চোদ্দোপুরুষের ভিটে। খাস কলকাতায় তিন পুরুষ। বাবা জ্যাঠারা বর্ধমান বা হাট গোবিন্দপুরের নাম পারতপক্ষে মুখে আনতেন না। তাদের কাছে পরিবারের উৎপত্তি ঠাকুরদার কলকাতায় বাস অর্থাৎ ১৯১৩ সাল থেকে | তার আগে কিছু নেই। যেমন ছায়ার কাছে ১৯৪৭-এর আগে বাংলা GIS অমলের নিজের জন্ম ১৯৪৭ সালের কাছাকাছি, আগের বছরেই, তবু প্রাকৃ্‌-স্বাধীনতাযুগ শ্রুতি হয়ে তার স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে আজও | '৪8৭ সালের আগের বাস্তব তার কাছে দোতলার সবচেয়ে ভাল শোওয়ার ঘরটি | সেখানে মধ্যেখানে বিরাট পালঙ্ক। বাংলা সিরিয়ালে ঠিক যেমনটি দেখা যায়, চকচকে পালিশ কালো আবলুস কাঠের | প্যাচানো প্যাচানো খোদাই করা কাজের পায়াছত্রি। মাথার দিকটা কাঠের জালি, মুকুটের আকৃতি | শক্ত ছোবড়ার তোষক। পরিপাটি টানটান সাদা ধবধবে চাদর। মাঝখানে একটার ওপর একটা সাজানো দুটি শক্ত বালিশ। তাতে আঁট করে পরানো ফ্রিল দেওয়া ধবধবে ওয়াড় | মস্ত মোটা সাদা পাশ বালিশ | খাটের ধারে আটকোনা টেবিল। তার পাশে একটি বড় হেলান দেওয়া নিচু চেয়ার। সেই কালো আবলুস কাঠের। গোল গোল হাতল AA | বেতেবোনা পিঠে হেলান দিয়ে পা মেলে বসে ঠাকুরদা FAQ দাস। পরনে লুঙ্গির মতো করে ধুতি, গায়ে ফতুয়া। দুই ধোপদুরস্ত। হাতে গড়গড়ার নল, মাঝে মাঝে টানছেন। অমলের স্মৃতিতে ব্রিটিশ ভারতের রেশ। তার তখন বয়স কত? বছর ছয়েক বোধহয়। আধ বোজা চোখ খুলে ঠাকুরদা অমলকে বলছেন,



Leave a Comment