অমিয়ভূষণ রচনাসমগ্র [খণ্ড-২] | Amiyabhushan Rachanasamagra [Vol. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৪ অমিয়ভূযণ রচনাসমগ্র ২ তো ছিলই না এবং সেগুলো খাতাখানার নতুনত্বকেই নষ্ট করেছে। হ...র জীবন ভালো হয়নি। শুনেছি যে সমাজবিরোধী কার্যকলাপের জন্য সে জেলও খেটেছে। পরেশবাবুর কথা বলতে গিয়ে খবির কথা মনে হয়। অপূর্ব এক আধুনিক খবি ৷ সারা জীবন ক্রিকেট সম্বন্ধে উপদেশ দিয়ে পেনশন নিয়ে সন্ন্যাসী হয়ে গেলেন। কিন্তু খযিকল্প এই শিক্ষক ব্রহ্মাবিদ্যার চর্চায় ব্যাপৃত থেকেও বালখিল্যদের কথা ভুলে যেতেন না। আমার “র” এবং ডু য়ে খুব ভুল হতো | একবার বাংলা পরীক্ষার খাতার উপরে তিনি আমার জন্যে একটা ফরমুলা লিখে দেন। তারপর থেকে ও-ভুলটা আর হয় না। দ্বিতীয়বার বাংলা পরীক্ষার খাতার উপরে তিনি লিখে দিলেন--%০৮ should not copy the Hooghly Valley dialect ; এর আগে আমি ক্রিয়াপদে তুম, লুম প্রভৃতি ব্যবহার করতাম। সেই থেকে ছেড়ে দিয়েছি। বুঝতে পেরেছিলাম চলতি বাংলা বলে যে-ভাষা আমাদের ব্যবহার করতে হবে সেটা ছগলি ভ্যালির কথ্য ভাষা TH | যারা পরেশবাবুর কাছে পড়েছেন তাদের অবশ্যই মনে পড়বে সংস্কৃত ব্যাকরণের সূত্রগুলি পড়াতে তিনি কী করে বিমল হাস্যরস সৃষ্টি করতে পারতেন। বোর্ডে লিখলেন- তোঃ শ্চুনাশ্চুঃ। আমরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছি। তখন সেটা তিনি এমনভাবে উচ্চারণ করলেন যে ধমক খেয়ে হকচকিয়ে গেলাম আমরা। তখন তিনি বোর্ডে লিখলেন-ষ্ট্নাষ্টুঃ। সম্পূর্ণ অন্যগ্রামে উচ্চারণ করলেন সূত্রটি। মৃদু-মৃদু হাসলেন। বললেন-কী মধুর, কী মধুর Cots শ্চুনাশ্চুঃ ষ্টুনাষ্টুঃ। সমস্ত ক্লাস তখন হাসিতে ফেটে পড়ছে। তিনি বললেন--হাসবে না, হাসবে না, দেবভাষযা। বলেই পিছন ফিরে বোর্ডে লিখলেন-তোর্লিঃ | সংস্কৃত ব্যাকরণ থেকে বিমল আনন্দ আদায় করার এ-কৌশল তীর পূর্ব অভ্যাসের ফল কিনা জানি না। কিন্তু কোনো বিষয়ে তাঁর পূর্ব অভ্যাসের পরিচয় আমরা পেয়েছিলাম। কালী আমার বন্ধু ছিল। আমার স্বর্গগত বন্ধু মেজর বিজয়রতন সেনগুপুকে তার খেলার জন্য আমি ভালবাসতাম। ক্লাস নাইনে পড়বার সময়ে সে আমাদের ত্রীড়াশিক্ষক ছানাবাবুকে টেনিসে CYS সেটে হারিয়ে দিয়েছিল। ছানাবাবুর সে কী আননদ্দ। হেডমাস্টারের ঘরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ছিল টেনিস মাঠ। সেখানে দাড়িয়ে তিনি কালীর ফোরহ্যান্ড ড্রাইভের প্রশংসা করতে লাগলেন। খেলার মাঠে কালীকে আর-একবার বিজয়ীর ভঙ্গিতে দেখেছিলাম মহারাজা বাহাদুরের টিমের সঙ্গে ছাত্রদের ক্রিকেট ম্যাচ। কলকাতা থেকে কয়েকজন খেলোয়াড় এসেছিল। কলেজের রবি কর (তার নাম বোধ হয় রবি ছিল) আর নির্মল দাস মহারাজা টিমের চারটি উইকেট নামিয়ে দিয়েছে, কিন্তু রানও উঠেছে প্রায় দুশো। তখন এল বিজয়রতন বল করতে | তার প্রথম তিনটি বলেই রান Goer | বিজয় বল নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দৌড়ের সীমায়, মনে হল তার মাথা নিচু হয়ে আছে লজ্জায়। কিন্তু তারপর বিজ্য়রতন যেন লেংথ খুঁজে পেল। ওদিক থেকে রবি কর আর এদিকে বিজয়রতন। সত্যি বিজয়ের বল দেখা যাচ্ছিল না। ছাঁটি উইকেট আধঘন্টায় পড়ে গেল। আমাদের দল ব্যাট করতে নামল, খেলার তখনও দু'ঘণ্টা সময় আছে । দু'ঘণ্টায় কি আড়াইশো রান উঠবে : আমার মনে হয় সর্বকালের এই অসম্ভব চেষ্টা করেছিল বিজয়। তৃতীয় উইকেটে গিয়ে সে দাঁড়াল, আম্পায়ারের কাছে মার্কিং নিল, তারপর শুরু হল তার ব্যাট থেকে ফুলঝুরি। এক রান-দু রান-বাউন্ডারি-বাউন্ডারি-এক রান-বাউন্ডারি। যখন সে চার ওভারে fart রাঁন করে আউট হল, দর্শকরা বলল আনাড়ি। আমি অন্য মত পোষণ করি। আনাড়ির অমন Pow থাকে at এই কালীর সঙ্গে একদিন আমার তর্ক বাধল। তখন অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের টেস্ট aie চলছে। পথ দিয়ে চলতে-চলতে আমরা তর্ক ফরছিলাম। পর্থটা ছিল পরেশবাবুর বাড়ির সামনে ছদ্নিয়ে। আমাদের চিৎকারে পরেশবাবুর ধ্যানে fay হয়েছিল। জ্বানলা দিয়ে ইশারায় ডাকলেন। কাছে গিট দাঁড়ালে পথে তর্ক করতে নিষেধ করলেন। লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে গেল। তারপর তর্কের কারণ করলেন। আমরা বললাম গত দু-টেস্টে কে কত রান করেছে, কে কার বলে আউট হয়েছে তাই তর্কের বিষয়। তিনি বিজয়কে পাশের ঘর থেকে এক মাসের অমৃতবাজার আনতে বললেন। তারপর কালীকে বললেন- তুমি দ্যাথো আমি বলি। তিনি ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার স্কোর বোর্ড বলে গেলেন। অমুক এত রান,



Leave a Comment