অমিয়ভূষণ রচনাসমগ্র [খণ্ড-১] | Amiyabhushan Rachanasamagra [Vol. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৪ অমিয়ভূষণ রচনাসমগ্র ১ কলের জল-আর বিশ টাকায় fa, দুধ, মাছে বাঙালির স্বর্গ । বাবা one পাঠিয়ে মাঝে মাঝেই বেটা- বউকে নিয়ে যান। আমি দু-চারদিন একা একা থেকে এক বিকেলে অফিস শেষ করে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটতে থাকি । আমার পাকসির বাসা থেকে পাকুড়িয়া গ্রামের বাড়ি তিন মাইলের কম। কোনো কোনো বিকেলে ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে সেই অভিমার। কোনো কোনো সমযে মা বেটা-বউকে পাঠিয়ে দেন পাকসির বাসায়। তখনো কুড়িতে না-পৌঁছনো সেই স্ত্রী এসব সত্ত্বেও আমি সুখী হতে পারছিলাম at কোচবিহারের কম্পিটিশনহীন লেখাপড়ার পৃথিবীর বাইরে একা তো ছিলামই, উপরন্তু আলোর বদলে, নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার বদলে, এ কী কালো আর নিদাঘ কঠোরতা! এখানে কমিপিটিশনই সার কথা, এখানে টাকা দিয়ে মানুষ মাপা হয়, চাকরি বড়ো হলে টাকা বেশি, সুতবাং সে বড়ো এবং বেশি মানুষ । ফলে তখনকার মনের সেই নিঃসঙ্গতার পাশে- পাশে একটা দারুণ চাপ পড়ছিলো, তাকে একরকমের inferiority complex বলে Cieza | নিজের অভাববোধ নেই, চারিদিকের অভাববোধ উত্তাল ঢেউ হয়ে গ্রাস করতে চায়। এই রকম অবস্থায় ইতিপূর্বেই কাগজকলম নিয়ে সন্ধ্যার দিকে বসা অভ্যাস হচ্ছিলো। লেখা আত্মস্থ হওয়ার স্বাদ দেয়, একটা ভরশূন্য অবস্থায় অন্য রকমের আলোয় চোখ মেলা যায়. আমার সেই কোচবিহারেব আমিত্বে থাকা যায়। এইভাবে টাকার oe দিয়ে মানুষকে মাপার পৃথিবীকে অস্বীকার করতে আমার সেই অভাবাবোধহীন আমি দুটো কাছ করে বসেছিলো। কাগজকলম নিযে বসা আব ট্রেড ইউনিয়ন say | আমার চাকরিজ্ীবনে ট্রেড ইউনিয়ন অনেকখানি জায়গা জুড়ে আছে। সেটা আদৌ বাড়তি জিনিস বাইরের ব্যাপার নয। wea ট্রেড ইউনিয়ন তো সব জায়গায় এক নয়। একদিকে ট্রেড ইউনিয়ন নেতার অনেকেই আমার সহকর্মী ও বদ্ধুস্থানীয় ছিলেন। অন্যদিকে তাদের সঙ্গে তফাতও ছিলো। ট্রেড ইউনিয়ন আমার জীবিকা ছিলো না, আমার মতে ট্রেড ইউনিযন অধিকার রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যও শেখায়, নেতা সবচাইতে দক্ষ ও কর্তব্যনিষ্ঠ শ্রমিক হবে। কারিগবের যেমন নিজের কাজে গর্ব থাকে শ্রমিকেরও তা থাকবে, কেননা শ্রম তো টাকা উপার্জনের উপায়ই নয, জীবনও বটে, ট্রেড ইউনিয়ন এমন নয় যে বুড়ি ছুঁয়ে থেকে রাজনীতি করার ACA | চাকরিজীবনে প্রথম দির্ক থেকেই শেষ পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে নেতৃত্ব দিলেও সেজন্যই বোধহয় প্রদেশ বা সর্বভারতীয় নেতৃত্বের দিকে ঝুঁকেনি। এবং ট্রেড ইউনিয়ন সম্বন্ধে এইরকম ধারণা থাকার ফলে লেচ ওয়ালেসাব কথা জানার আগেই এই কোচবিহার শহরে জনাপাঁচেক সহকমী নিয়ে নতুন ট্রেড ইউনিয়ন স্থাপন করেছিলাম, পুরনো সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ক্ষমতার শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে ATH | এখনই সেই ট্রেড ইউনিয়ন কলকাতাসমেও পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই রাজনৈতিক অসুবিধা Aree স্থান করে নিচ্ছে । আমার ট্রেড ইউনিমনে ভালোবাসা ছিলো, প্রতিবাদ ছিলো, তেজ ছিলো, ক্রোধ ও বিদ্বেষ ছিলো না। আবার পাবনা জেলার সেই নীলকুঠিতে ফিবে তখন তো বাস্তবেব দৃষ্টিতে সব দেখছি। তখন তো তা মনের মধ্যে এক সিপিয়া রঙে আঁকা দুর্গ নয়, বরং অনেক শরিকের দাবি -পাল্টা দাবিতে যার ক্ষয়ে যাওয়া জরাজীর্ণ ভিত কাপছে এমন এক স্বল্পবিত্ত গেঁয়ো জোতদারগোষ্ঠীর আশ্রয়স্থল i কিন্তু কৌতুকের এই, সেই বাড়ি যার উপরে Zorn এখন কাব কাজে লাগছে, তা কিন্তু শৈশবস্মৃতির ফলে এখনো মাঝে-মাঝে প্রভাবিত করে। যেমন কখনো-বা রাজা রাজবল্লভকে অথবা রাজা রামমোহনকে ভাইবেরাদরের মতো ভালো লাগে। যেমন সেই বাড়ির সেই লোহারপাতের দরজাগুলো যা হয়তো-বা নীল জালের অতিকায় কড়াইগুলো থেকে বাবার ঠাকুরদাদামশায় তৈরি করিয়েছিলেন, সেগুলো এখনো মাঝে মাঝে আমার মনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়--সমাভোর তৈরি অভাববোধ, ব্যবসায়ীদের বিজ্ঞাপনে তৈরি অভাববোধ, এবং যাবতীয় র্যাটরেসের মুখের উপরে। তো, এই বাড়িটার কথা আর-একটু বলতে avai আমি জানতাম না। কিন্তু দেখছি নীল তুঁইয়া, রাজনগর, গড় শ্রীথগু ওই বাড়িটার সঙ্গে কোনো-না-কোনোভাবে YH যেমন বাবা একবার মাকে



Leave a Comment