অমিয়ভূষণ রচনাসমগ্র [খণ্ড-৫] | Amiyabhushan Rachanasamagra [Vol. 5]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১২ অমিয়ভূষণরচনাসমগ্র ৫ ইয়া মরেঙ্গে। ASR শরতের আকাশে সে যেন এক আশ্বিনের WO! এখন এই করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে সম্বন্ধে আমার চাইতে আর সকলেই ভালো বলতে পারেন। যথেষ্ট উত্তেজিত হলেও, গান্ধিজীর আকাশ থেকে ভয় সংগ্রহ করা অনিবার্য নয় এটা প্রমাণ হলে, আমার এমন অনুভব হল, করেঙ্গে বলতে তিনি কী বুঝেছিলেন, বোঝা গেলো ati টেলিগ্রাফের খোঁটা উপড়ানো, রেলের কিশপ্লেট সরানো ইত্যাদি ইত্যাদি কি গান্ধিজীর করেঙ্গে? না, সেই শীর্ণ কটিবস্্র-সম্বল মানুষটি ভারতের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রাপ্ত হেঁটে যেতে পারেন নি। তা পারলেই তার করেঙ্গে হতো। গোটা মহাদেশ গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসতো । যুদ্ধ হতো না। এ অঞ্চলে যুদ্ধ থেমে যেতো। আর তা হয়নি বলেই চেইন রিআ্যাকশনে ১৯৪৭ এল । গান্ধিজীর পরাজয় হল। ভারতবর্ষের কিছুটা স্বাধীন হল। এ সবই পরে বুঝতে পারা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে আর একবার গান্ধিজীকে যেন নিজের পরিবাবের মধ্যে দেখতে পেলুম। দ্বিতীয়বার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ভারি অবাক লেগে গেল। দেখলুম, শ্বশুরমশায় দুপুরের গরমে বসে চরকা কাটছেন। কী কাণ্ড! খোঁজ নিলুম। কংগ্রেসেব crea? না। অভযাশ্রম নাকি? দূর করো। অনুসন্ধানে জানা গেল, ১৯১৯-২০তে কলেজ ছেড়ে বাইরে এসেছিলেন, ফলে কেরানী। তবে চরকা কেন? নিজের কাপড়েব সূতো, নিজে কাটেন। লাভ? সেই থেকে, ১৯১৯-২০ থেকেই, কিন্তু তাতে লাভ কী? সে সূতোর লোহিত মালায় সাবিত্রী দিদির, আর দিদিমায়ের মন-কাটা চব্কার কথা মনে পড়ল। কিন্তু এখন ইংরেজি জানি বলে মনে হল--ওয়ে অব লাইফ নাকি? আবার যেন কর্পূরেব সুবাসেব স্মৃতি দেখা দিল মনে। কিন্তু তখনও গান্ধিজীর সম্পূর্ণ পবাজয় হয় নি। অর্থাৎ ১৯৪৭ আসে নি। ১৯৪৬-এ একটা কনট্র্যাষ্ট, গান্ধিজীর এবং আমার । নবমী পুজোর রাত আততায়ীব সংঘবদ্ধ শক্তির মুখোমুখি বন্দুক এবং বুলেট নিযে কাটিয়ে দিয়ে পাবনা ছাড়লুম। পাবনা হারালুম আমি চিরকালের জন্য। পাবনা হারালুম, পল্মা হারালুম। আর গান্ধিজী হেঁটে গেলেন নোয়াখালি। আর কে পারে? কিন্তু এই ভালো হল। রাজনৈতিক পরাজয় হল, তিনি ভারতবর্ষের নীলাকাশ হয়ে রইলেন। কত গভীর সেই নীল! নতুবা, হয়তো আমরা তাঁকে মন্ত্রীটট্রী করে বসতুম। আর এখনও সেই নীলাকাশ তেমনি নীল। মেলোভ্যান ডেইলাস সেদিন বলছিলেন: আমাদের ভেবে দেখা দরকার প্রেডাকশান ও মিনস অব প্রেডাকশানের কথা শেষ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান করে কি না। গান্ধিজীর জন্মশতবার্ষিকী পালন কবার কথাতেই এই OS | যখন সব দেশেই এমন কি আফ্রিকার দেশগুলিও যথেষ্ট পণ্য উৎপাদন করবে, সবদেশের বহির্বাণিজাই যখন বেকায়দা হবে, তখন আমরা চরকা কাটার মন ফিরে পাবো। কারিগরকে শ্রমিক করার লজ্জা থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ, মানুষকে তার ডিগনিটি ফিরিয়ে দেয়ার এক উপায়, চরকা কাটা, এ রকম উপলব্ধি হবে।



Leave a Comment