ত্রিপুরার সেরা শিশুসাহিত্য | Tripurar Sera Shishusahitya

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৬ ত্রিপুরার সেরা শিশুসাহিত্য বি-এ পড়া GS হল। কৈশোর পেরিয়ে এবার যৌবনে পদার্পণ করছি তা উপলম্ধি করলাম। নতুন উদ্দীপনায় ঘুরে বেড়াতাম গ্রামে মাঠে ঘাটে। ভাসাতাম নদীর জলে নৌকা, চাষি, জেলেদের সঙ্গ-বাউল, বোষ্টম, ভাটিয়ালি গায়ক ও গাজন দলের সঙ্গে ছুটির ফাকে কলেজ ফাঁকি দিয়ে সময় কাটাতাম গান গেয়ে, শিখে, শুনে আর তামাক CUA আমরা সবাই যে এক SHA তামাক খেতাম, বাবা তা জানতেন না। পূর্ববঙ্গের ওই GH এমন কোনো গ্রাম নেই বা এমন কোনো নদী নেই, যেখানে আমি না ঘুরেছি। ছুটি ও পড়াশোনার ফাঁকে আমি গান সংগ্রহ করতাম। আমার এখনকার যা কিছু সংগ্রহ, যা কিছু পুঁজি সে সবই ওই সময়কার সংগ্রহেরই সম্পদ। আজ আমি শুধু ওই একটি সম্পদেই সমৃদ্ধ, যে সম্পদের আস্বাদন করে আমার মনপ্রাণ এখনও ভরে ওঠে। যে সম্পদের জোরে আমি সুরের সেবা করে চলেছি-__তার আদি হল আমার ওইসব দিনের সংগ্রহ ও স্মৃতি। সবরকম সুরই আমি রচনা করেছি, কিন্তু লোকসংগীতে আমার আত্মা যেন প্রাণ পায়। আমি যে মাটির মানুষের সঙ্গে তাদের AD প্রকাশিত হয়েছি, তাই তাদের সহজ সরল গ্রাম্য সুর আমার গলায় সহজে ফুটে ওঠে। সে FAS আমার কল্পনার রাজ্য, আপনা থেকেই তা জাগে, গলায় আপনা থেকেই তা বেজে ওঠে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা গলায় এসে যায়। এর জন্য কোনো রেওয়াজ এর প্রয়োজন হয় না-_-এ সুর নিজের জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। আমার মধ্যে রাজবাড়ির নিয়ম-কানুন আদব কায়দা বা ফরম্যালিটিজ কেউ খুঁজে পেত না। যে গ্রামের খোলা মাঠের সবুজ আমেজ পেয়েছে, যাকে বড় বড়ো প্রাচীন গাছগুলি ছায়ার আড়াল করে প্রকৃতির মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে, যে না জানি কিসের আকর্ষণে রাত্রেও গ্রামে গ্রামে কাটিয়েছে যেখানে দু-একটা কেরোসিনের পিদিম টিম্টিম্‌ করে সেই পরিবেশে যে নীল আকাশকে ভালোবেসেছে__যে গ্রামের সরল লোকেদের সঙ্গা মানিয়ে বসে মশগুল হয়ে গেছে__তাকে রাজবাড়ির আবহাওয়া বীধবে কি করে? হিন্দিতে এক প্রবন্ধ আছে, “রাগ, রসুই পাগড়ি--কভি কভি বন্‌ যায়।” (মানে গান-বাজনা, ভালো রান্না ও মাথায় ভালো পাগড়ি বাঁধা সব সময় সম্ভব নয়, কখনো কখনো তা হয়)। লোকসংগীতে এই প্রবাদ fra অচল। গ্রামের পরিবেশে বাউল বা ভাটিয়ালি সব সময়েই জমে যায়। কলেজ-জীবনে প্রতি বছরই আমাদের নাটক প্রযোজনা হত। এই সব নাট্যাভিনয়ে আমি হতাম সংগীত পরিচালক। যতদুর মনে পড়ে আমাদের ইতিহাসের অধ্যাপক হতেন নাট্য পরিচালক। তিনি নিজে গান লিখতেন আমি সঙ্গে সঙ্গে সুর বসিয়ে দিতাম। কলেজে ছাত্রমহলে আমার তখন জয় জয়কার। ১৯২৪ সালে বি-এ পাশ করলাম। বাবা আমাকে কলকাতাতে নিয়ে এসে ১৯২৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন এম-এ পড়ার জন্য। আমি কলকাতায় বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে “ত্রিপুরা প্যালেস”-এ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষায় এম-এ-পড়তে শুরু করলাম। আমার পারিপার্শ্বিক পরিবেশের পরিবর্তনে প্রথম দিকে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। ইংরেজ আমলের জমকালো DAR কলকাতা শহর ঝলমল করতে লাগল আমার চোখে। দেখে অবাক হলাম। নিজেকে বোকা বলেও মনে হল শহরে এসে। মানুষের হাতের তৈরি সব কিছু আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগল। সিমেন্ট ও পাথরের তৈরি কলকাতা পিচ ঢালা প্রশস্ত তার রাস্তাঘাট বিজলি বাতির রোশনাই-প্রথমটা এইসব দেখে কেমন. যেন কৃত্রিম মনে হয়েছিল সবকিছু, Lirica উঠেছিলাম। আরও অবাক হয়েছিলাম এই দেখে যে, কলকাতায় মাটি বিক্রি হয়। আমি যে মাটির মানুষ--সেই মাটি কলকাতা শহরে fA করা হয়--এবং তা লোকেও কেনে--এসব দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম। সমস্ত দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে কেটে যেত। বাড়ি ফিরেই আকাশ দেখতে ইচ্ছা



Leave a Comment