সুবোধ ঘোষ রচনা সমগ্র [পর্ব-৫] | Subodh Ghosh Rachana Samagra [Part- 5]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
কথা বললেই হিমুর মুখের ভাষার সেই ব্যক্তি সেই মুহূর্তে একটা না একটা আপনজন গোছের মানুষ হয়ে যায়। হয় কাকাবাবু, মেশোমশাই, জেঠামশাই আর পিসেমশাই, কিংবা মামাবাবু। নয় বড়দা মেজদা সেজদা ও ছোড়দা। ঠাকুমা ও দিদিমা পাতিয়ে ফেলতেও একটুও দেরি হয় না হিমু দত্তের। ওভার্সিয়ার বাবুর মা হিমু দত্তকে চিনতেন না। পথে দেখা হতে তিনিই একদিন ভুল করে ডাক দিয়ে বলেছিলেন-তুমি তো আমাদের টুনকির ভাসুরপো? সেই মুহূর্তে উত্তর দিয়েছিল হিমু দত্ত-না পিসিমা, আমি হিমাদ্রি। _তুমি বারগণ্ডায় থাক? -না। আমি ওদিকের এ লোহারপুলের দিকে থাকি। -বলি, তুমি কি গিরিডির ছেলে? -হ্্যা, এখন তো তাই। -কি আশ্চর্য, হিমাদ্রি টিমাদ্রি নাম তো কখনো শুনিনি। হিমু দত্ত হাসে-আমি হিমু। চোখ বড়ো ক'রে হেসে ওঠেন দিদিমা-তাই বল। তুমিই হিমু? -হ্থ্যা দিদিমা। _তা হলে আমার একটু কাজ করে দে না SIZ! Ae | আজ AHA একবারটি এসে আমাকে মকতপুরে সান্যালদের বাড়িতে কীর্তন শুনিয়ে নিয়ে আসবি? রাত্রিবেলা আমি চোখে বড়ো ঝাপ্‌সা দেখি রে ভাই, একা পথ চিনে বাড়ি ফিরতে oft at) -বেশ, কিন্তু আপনি কোথায় থাকেন দিদিমা? Sta আমি যে হাবুল ওভার্সিয়ারের মা। -ঠিক আছে। an, ঠিক যেমন স্পষ্ট-করে কথা দিয়েছিল হিমু, তেমন একেবারে ঠিক সময়ে এসে প্রতিশ্রুতি পালন করে চলে গিয়েছিল। মকতপুরে সান্যালদের বাড়ি থেকে কীর্তন শুনে বাড়ি ফেরবার পথে দিদিমা অনেক গল্প করলেন।-হাবুলের বাবা বেঁচে থাকলে আজ আর আমাকে হেঁটে চলতে হতো না ভাই। তিনি ছিলেন ঝুমরা রাজ এস্টেটের ম্যানেজার। কত টাকা রোজগার করলেন, আর দান ক'রে ক'রে ফতুর হলেন। মোটর গাড়িটাকে পর্যন্ত বেচে দিয়ে বাংলাদেশের বন্যার টাদা পাঠিয়ে দিলেন। Sl, তবে, এমন কিছু দুঃখের মধ্যে রেখে যাননি। মেয়েদের বড়ো বড়ো ঘরে বিয়ে দিয়েছেন। মেয়েরা আমাকে সাহায্য করে। সুষমা আছে কলকাতায়, ধীরা কানপুরে আর অনিলা এখন পোয়াতি; এদিকে জামাই-এর বদলির অর্ডার হয়েছে। বল দেখি কি বিপত্তি! দিদিমা তার ঘরোয়া জীবনের কাহিনী শেষ করলেন, যখন ঘরের দরজার কাছে পৌঁছালেন। কিন্তু জিজ্ঞাসা করতে ভুলেই গেলেন, হিমু নামে এই মানুষটার ঘরোয়া সুখ দুঃখের কোনো সংবাদ, কোনো পরিচয়। মনেই পড়ে না কারও, হিমু দত্তেরও কোনো দুঃখ থাকতে পারে কিংবা হিমু দত্তেরও জীবনের হয়তো একটা সুখের ইতিহাস আছে। আশ্চর্যের ব্যাপার, হিমু wert কি সত্যিই একেবারে সুখ-দুঃখের অতীত একটা স্বয়স্তু সত্তা বলে মনে করে সবাই? শহরের জীবনে সারা বছরের মধ্যে অনেক Cems দেখা দেয়। পারিবারিক উৎসব। অমুকের মেয়ের বিয়ে। অমুকের ছেলের বৌ-ভাত কিংবা অমুকের বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান উপলক্ষ্যে ভোজের নিমন্ত্রণ। কিন্তু হিমু দত্ত সবারই এত পরিচিত হয়েও কি সব উৎসবে ১৮



Leave a Comment