সমকালের প্রেক্ষাপটের অষ্টাদশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্য | Samakaler Prekshapate Ashtadash Satabdir Bangla Sahitya

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ঞে) প্রসঙ্গত বলতে হয় সাম্প্রদায়িক গুঁদার্য ও ধর্ম-সমম্বয়ের কথা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি বাতাবরণ এ যুগে সৃষ্টি হয়েছে। মুর্শিদকুলি থেকে আলিবর্দি সকলেই প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বছ হিন্দুকে উচ্চপদে নিযুক্ত করেছেন। ক্ষ্ঠব্যাধিগ্রস্ত মীরজাফর কিরীটেশ্বরীর চরণামৃত পান করেছেন রোগমুক্তির প্রত্যাশায়। হিন্দু জ্যোতিষ শাস্ত্রে সরফরাজ, আলিবর্দি ও মীরকাশিমের ছিল অগাধ আস্থা। হিন্দুদের দোলোৎসব মুসলমান আমীর-ওমরাহদের খুব প্রিয় ছিল। সমসের গাজী হিন্দু দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে ব্রাহ্মণ পুরোহিত সহাযতায় হিন্দুরীতিতে নিয়মিত দেবীর পুজোর ব্যবস্থা করেন। বছ মুসলমান কবি রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদ রচনা করেছেন। আবার মুসলমান পীর- ফকিরদের প্রতিও হিন্দুদের শ্রদ্ধা ছিল। সত্যপীরকে সত্যনারায়ণ জ্ঞানে তারা শিরনি দিয়েছে। AeA, ঘনরাম, ভারতচন্দ্র প্রমুখ কবি সত্যনারায়ণের পাঁচালি লিখেছেন। ভারতচন্দ্রের 'অশ্নদামঙ্গল' কাব্যের মানসিংহ অংশে ভবানন্দ মজুমদারের উক্তিতে ধর্ম-সমন্বয় ভাবনা প্রকাশিত: মজুন্দার কহে SAMA সেলামত। দেবতার নিন্দা কেন কর HTS || হিন্দু মুসলমান আদি জীবজন্তু যত। ঈশ্বর সবার এক নহে দুই WS! রামপ্রসাদ 'কালিকামঙ্গল'-এ লিখেছেন: অভেদে ভাবরে মন কালা আর কালী | মোহন মুরলীধারী চতুর্ভুজা Teme || আর তাঁর পদে ধর্ম-সহিষ্ণুতা ও ধর্ম-সমনম্বয়ের বাণী ভাষারূপ প্রাপ্ত: মগে বলে ফারাতারা, গড় বলে ফিরিঙ্গি যারা, খোদা বলে ডাকে তোমায় মোগল পাঠান সৈয়দ কাজি। এ শতাব্দীতেই বাউলগীতির আবির্ভাব। বাউলেরা লোকপ্রচলিত ধর্মের অনুসারী নন। তাঁদের ধর্ম মানুষের ধর্ম। দেহভাণ্ডেই ব্রহ্মাণ্ডের অনুসন্ধান তাঁদের । অর্থাৎ ধর্ম সম্বন্ধে নতুন একটি দৃষ্টিকোণ তাঁদের গীতিতে পাওয়া গেল৷ বাউল মতবাদ অবশ্য পুরনো i মৈমনসিংহ-গীতিকা' ও 'পূর্ববঙ্গ-গীতিকা'র পালাগুলি ধর্মনিরপেক্ষ রচনা। হিন্দু- মুসলমানের যৌথ সৃষ্টি । দেবদেবীর পরিবর্তে রক্ত-মাংসের মানব-মানবীর কাহিনী | সাহিত্যের বাঁক ফেরার ইঙ্গিত এ গুলিতে আছে। কবিগীতি ও টল্লাগীতিতেও সাহিত্য ধর্মের খোলস মুক্ত।



Leave a Comment