কালের কান্ডারী | Kaler Kandari

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৮ কালের কাণ্ডারী পরের দিন কৃষ্ণবল্লভ শ্রীনিবাসকে নিয়ে গেলেন। প্রথমদিন শ্রীনিবাস নির্বাক হয়ে ব্যাসাচার্যের ব্যাখ্যা শুনলেন। দ্বিতীয় দিন আর থাকতে পারলেন না। শ্রীনিবাস বললেন, 'আচার্যদেব! আপনি প্রশস্ত পথ ছেড়ে এ কি ব্যাখ্যা করছেন!" ব্যাসাচার্য একথার কোনও উত্তর দিলেন না। তৃতীয় দিনেও শ্রীনিবাস বললেন, “মাপনি ভাগবত ব্যাখ্যা করছেন অথচ শ্রীধরকে ত্যাগ করে নিজের মত স্থাপন করার চেষ্টা করছেন। শ্রীধর স্বামীর টাকা ছাড়া রাসপথঞ্চাধ্যায় বোঝা অসম্ভব ব্যাসাচার্য শ্রীনিবাসের কথা কানেই তুললেন না। নিজের মতো ব্যাখ্যা ACS লাগলেন। তখন রাজা সভাপণ্ডিতকে বললেন, “এই ব্রাহ্মণ আপনার ব্যাখ্যায় ABV হতে পারছেন না, আপনি কি ভুল ব্যাখ্যা করছেন?” ব্যাসাচার্যের অহঙ্কাবে লাগল। তিনি বিরক্তির সুরে বললেন, 'এই গৈরিকধারী যুবকের SPA দেখেছেন! আমার ব্যাখ্যায় ভূল ধরতে পারে এমন পণ্ডিত এই ভূভারতে দ্বিতীয় কে আছে! শ্রীনিবাসের দিকে তাকিয়ে ব্যাসাচার্য রূঢুকণ্ঠে বললেন, 'আসুন, আপনি ভাগবত ব্যাখ্যা করুন, দেখি আপনি কত বড় afew? এই বলে তিনি বেদী পরিত্যাগ করলেন। শ্রীনিবাসের সামান্যতম FI নেই। জড়তা নেই, ভয় নেই। ধীর, স্থির। বেদীর আসনে বসে ব্যাখ্যা শুরু করলেন। সে কি কণ্ঠ, পাণ্ডিত্য, ভাব, wie | সে ব্যাখ্যা যেন নৈবেদ্য, ভাবাশ্রুসিক্ত পুষ্পের ডালি, ভগবৎ চরণে ভক্তের নভ্র নিবেদন। যেন সপ্ততন্ত্রী বীণায় স্বয়ং নারদ সুরঝস্কার তুলছেন। রাজা ও শোতৃবৃন্দ মুগ্ধ। এমন ব্যাখ্যা তারা কখনো শোনেন নি। কে এই অলৌকিক সন্ন্যাসী! দেবলোক থেকে এলেন না কি? সকলে, এমন কি ব্যাসাচার্যও বুঝলেন — সত্যসত্যই বিষ্ণুপুর রাজ্যের প্রকৃত গুরু এলেন এতদিনে। পরের দিন রাজসভায় তিলধারণের জায়গা রইল না। শ্রীনিবাসের পাঠ শুনবেন। শ্রীনিবাস যখন পুঁথির বন্ধন উন্মোচন করছেন, বিপুল হরিধ্বনি। সেদিনের ব্যাখ্যা হল আরো অনবদ্য। প্রত্যেকের চোখে জল। ঘন ঘন দীর্ঘশ্বাস। পাষাণও গলে 'গেল। সবাই দেখছেন, পাঠক মানুষ নন, জ্যোতির্ময় এক দেবতা। স্বয়ং ভাগবত।



Leave a Comment