For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)দেবার মতো বুদ্ধি আমার মগজে নেই বলেই আমার বিশ্বাস। অবশ্য সত্যিই আমার মগজে তেমন বুদ্ধি
ছিল কিনা, যাচাই করবারও সুযোগ পাইনি। সেই শিশুকাল থেকে পুরো কৈশোর, যৌবন এমন
বিষগ্জভাবে কেটে গেল আমার, মানসিকভাবে সারাক্ষণ এতখানি বিপর্যগু রইলাম আমি, এত লজ্জা আর
অপমানে তিলতিল পুড়তে থাকল বুক, বিনা অপরাধেও এমন আসামীর জীবন কাটাতে হল
আজীবনকাল, মগজের মধ্যে AMPS এমন দাউ দাউ জ্বলতে থাকল দাবানল, প্রতিটি বইয়ের পাতায়
পাতায় এমন আঁকা হয়ে রইল শুকিয়ে আসা কুমড়োর ফুলগুলি, মন দিয়ে পড়াশুনো করে সম্মানীয়
মানুষ হয়ে ওঠার বিষয়টি এতখানি হাস্যকর লাগল, কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা, 'মানুষ” হওয়ার স্বপ্ন কোনোদিন
তৈরিই হল না আমার মধ্যে। পড়াশুনোয় তেমন করে মনই বসাতে পারলাম না কোনোদিন।
কোনোরকমে বি-এটা পাশ করে যে কোনো ধরনের একটা চাকরির জন্য পাগলের মতো ঘুরতে লাগলাম
চতুর্দিকে। ততদিনে বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন ওপারে । আর, আমার সেই হারিয়ে যাওয়া
ছোটপিসি, বিলাসীপিসি নামে একটা বিমূর্ত অবয়ব নিয়ে যে আশৈশব বেঁচে ছিল আমাদের মনে,
ততদিনে ACTA উদয় হয়েছে আমাদের সংসারে | যদিও তার বাস রাজধানী কলকাতায়, কিন্তু স্পষ্ট
টের পেতাম, আমাদের পুরো সংসারটা জুড়ে রয়েছে সে। খুব অল্প বয়সেই চলে গেলেন বাবা। দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, কাউকে জানান দেননি
কখনোই | শেকড-বাকড় দিযে নিজেই নিজের চিকিৎসা করতেন। যখন আগাগোড়া ফুলতে শুরু
করলেন, সদরের ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন COPA, ততদিনে খুবই দেরি হয়ে গিয়েছে। বাবা অকস্মাৎ চলে যাওয়ায় মায়ের শেষ আশ্রয়টুকুও গেল। একেবারেই নিরাশ্রয় হয়ে গেল সে! অবশ্য বাবার কাছে তেমন আশ্রয় কবেই বা পেয়েছে মা! আশ্রয় দেবার মতো ডালপালা তেমন
একটা ছিল না বাবার শরীরে | চিরকালের মুখচোরা, ভোলেভালা, ছন্নছাড়া মানুষটি নিজেই মনে মনে
অবলম্বন খুঁজে AMSA | মাকে নিয়ে, এমন কি, নিজেকে নিয়েও কারোর সঙ্গে ঝগড়া-বিসম্বাদে
জড়িয়ে পড়তে চাইতেন না, বলা ভালো, পারতেন না। ততখানি cae কিংবা অসূয়া ধাবণ করতেই
পারতেন না শরীরে কিংবা মনে | এ সংসারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের জীবনে অপ্রত্যাশিতভাবে নেমে
আসা অপমান ও গ্লানি তাকে হয়তো-বা কষ্ট দিয়ে থাকবে মনে মনে, কিন্তু একাত্ম করে তুলতে পারেনি।
কারোর বেদনার সঙ্গে একাত্ম হওয়ার অন্য যে একটি সংবেদনশীল মনকে ক্রিয়াশীল করে তুলতে হয়,
বাবার বুকের মধ্যে মায়ের জন্য যদি সেই সংবেদনশীলতার কোনো লেশ থেকেও থাকে, কিন্তু তা
ক্রিয়াশীল ছিল না ACE NAS | ফলে, মা, তার চরম দুর্যোগের দিনগুলোতে বাবার ছায়ায আশ্রয় পায়নি
তিলেকের Oras | মাকেও দেখিনি বাবাব সামনে তার বেদনার জায়গাটিকে একবারের তরেও মেলে
ধরতে | বিবাহিত জীবনের একেবারে প্রথম পর্বে মা হয়তো বা একটুখানি আশ্রয়ের জন্য বাবার দুয়োরে
টোকা মেরে থাকবেন, কিন্তু বারংবার টোকা মেরেও সাড়া না পাওয়ায় ধীবে ধীরে হয়তো বা নিজেকে
গুটিয়ে নিয়েছিলেন একেবারেই | অন্তত আমার জ্ঞানবৃদ্ধি হওয়ার পর যে VaR বেঁচে ছিলেন বাবা,
চরম ঝড়-ঝঞ্জাব মুহূর্তে I চিলতে আশ্রয়ের জন্য বাবার দুয়োরে মাকে এক দিনের জন্যও টোকা
মারতে দেখিনি আমি। এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করলেই তাৎক্ষণিক জবাব পেয়েছি. কী হবে বলে!
তবুও, নেহাতই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কজনিত সংস্কারবশত, হয়তো বা, মায়ের মনের এক্কেবারে
পাতালপ্রদেশে বাবা এক ধরনের প্রতীকী আশ্রয় হিসেবে টিকে ছিলেন, ঠিক যেমন করে পাড়ার বটতলায়
সিঁদুর মাখানো পাষাণ খণ্ডটি, কোনোদিন সুস্পষ্টভাবে কাউকে কোনো সঙ্কট থেকে উদ্ধার না করলেও
মানুষজন নেহাতই সংস্কারবশে তার সামনে মাথা নোয়ায়, ‘MAP’ করে, অনেক কিছু আশা করে তার
কাছে। « মায়ের সেই প্রতীকী আশ্রয়টুকুও একদিন ভেঙে গুঁড়িয়ে গেল। এই বিশাল, জটিল, wa
জগংৎসংসারে মা একেবারেই অনাথিনী হয়ে গেল। সেই থেকে, সেন্ট্রাল জেলের লোহার গরাদের আশ্রয়ে চলে যাওয়া অবধি মায়ের প্রতি মুহূর্তের
যাপনের প্রত্যক্ষদর্শী এবং অংশীদার ছিলাম আমি ২০