মৃগয়া [খণ্ড-২] | Mrigaya [Vol. 2]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
১৬- মৃগয়া রক্তকুগুলি পাকিয়ে ডুবছে। কেমন যেন ফ্যাকাসে লাগছে সূর্যটাকে। সস্তা কাগজে ছাপানো মনীষীদের ছবিতে, মাথার ঠিক পেছনে যেমন কমলা-হলুদ রঙের চাকতি আঁকা থাকে...। পেছনে থালার মতো চাকতি ধারণ করে মুূর্তিটির নিমীলিত চক্ষুদুটি, ধ্যানে মগ্ন, কিংবা অন্য এক স্বর্গধামের স্বপ্নে বিভোর। তালগাছের উসকোখুসকো মাথাটিকে, পেছনে কমলাটে হলুদ থালা সহকারে, মনে হচ্ছিল কোনও বিকারগ্রস্ত, স্বপ্নে বিভোর কাপালিক। মরণ-গাছ! মরণ-* গাছও কী স্বপ্ন দেখে! বিশেষ করে যে গাছের তলায় বসলে আত্মঘাতী হতে চায় মানুষ, তেমন গাছের পক্ষে কি স্বপ্ন দেখা সম্ভব! পাগল শিকারি সম্ভবত তাব নতুন স্বপ্নটা বলবার জন্য উশখুশ করছে। মরণ-গাছের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয় বুদ্ধদেব। বলে, তুমি যাও পাগলদা। ওদের বল, আমি আসছি। পাগল শিকারি চলে যায়। বুদ্ধদেব পেছন থেকে ওর চলে যাওয়া দেখে। দু'পা এগিয়েই থমকে থেমে যায় পাগলের পা। ঘাড় ঘুরিয়ে বুদ্ধদেবকে CHATS থাকে অপলক | সারা মুখে এক ধরনের ব্যাকুলতা। বুদ্ধদেব জানে, এমন রমনযোগ্য নির্জনতায় বুদ্ধদেবকে একলাটি পেয়ে পাগলের হৃৎপিণ্ডের ভেতর থেকে নিঃশব্দে উঠে এসেছে সুধন্য নামের এক মানুষ। সেই মানুষ এখন তাব পরিচয় জানতে চায়, অর্থও | পাগলের হৃদপিণ্ডের শুহায় আজ্জীবনকাল বসবাসকাবী Hey’ নামের মানুষটি নিজের পরিচয় বাসনায় মাঝে মাঝে হিংস্র হয়ে ওঠে। পাগল শিকারি। লোকটাকে ভারি আশ্চর্য লাগে বুদ্ধদেবের। বড়ই রহস্যময়। প্রথম যেদিন আলাপ হয়েছিল ওর সঙ্গে, সেদিনটার কথা মনে ANG | তখন সবেমাত্র লায়েকবীধ ইউনিয়নে পোস্টিং হয়েছে বুদ্ধদেবের। চুয়ামসিনার সিংহগড়ে থাকবার ব্যবস্থা। সিংহবাবুরা গরুর গাড়ি পাঠিয়েছেন বুদ্ধদেবের জন্য। গাড়ি নিয়ে গিয়েছে পাগল শিকারি। অযোধ্যার গ্রামসেবক FIAT পুরকায়েতও সঙ্গে এসেছিল, জয়কৃষ্ণপুরের মোড়ে নেমে চলে গিয়েছে অযোধ্যা। গাড়িতে কেবল বুদ্ধদেব আর পাগল শিকারি। দুপুর ছুঁই ছুঁই। রাঢ়ের গ্রীষ্মের দুপুর মানে আকাশ থেকে অগ্নিবর্ষণ, চাবপাশে ঝলা বাতাসের হস্কা, রুখা-শুখা ডাঙা নিঃসাড়ে আগুন গিলছে, মাঝে মাঝে যখন দম ছেড়ে দিচ্ছে, আকাশে উঠে যাচ্ছে ধুলোর por) বুদ্ধদেব দরদরিয়ে ঘামছিল। পাগল শিকারি এমনিতেই কথা কয় কম, সেদিন আরও চুপচাপ ছিল। বুদ্ধদেবই এটা ওটা শুধোচ্ছিল হরেক বিষয়ে। পাগল শিকারির চোখ দিয়ে রাঢ়কে একটু একটু কবে চিনছিল। আচমকা পাগল শিকারি বলে ওঠে, একটা কথা জিগাবো রামসেবকবাবু? --কী কথা? . FRETS পার, সুধনা নামের মানে কি? বুদ্ধদেব হকচকিয়ে যায়, সুধন্য? কোন্‌ সুধন্য? -_হাই দ্যাখ, আমি জিগালাম্‌ তুমাকে, তুমি জিগালে আমাকে। ত, জবাব কে দিবেক বটে? ভূতে? পাগল শিকারি বুঝি সামান্য ক্ষুব্ধ। বুদ্ধদেবের গলা শুনেই সে বুঝে নিয়েছে সুধন্য নামটাব মানে লৈতন রামসেবকবাবুটির ঠিক ঠিক জানা নেই। বলে, হায় বাবুগ, কত জনকে জিগালাম, কোউ নাই জানে একটা নামের মানে! বুদ্ধদেব উঠে দীড়ায়। পায়ে পায়ে হাঁটা দেয় হরিণমুড়ির দিকে। সবুজ ক্ষেতের মধ্য দিয়ে, আলপথ ধরে ধরে সে হাজির হয হরিণমুড়ির বীকে। বাজে-পোড়া তালগাছখানা, যার



Leave a Comment