মৃগয়া [খণ্ড-১] | Mrigaya [Vol. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
Waray ১৯ ইদানিং খুব অপ্রাসঙ্গিকভাবে বেজে যায়। আর সুদর্শন, দিন-রাত, Se, মাস, বছর, নিরস্তর তাঁর নিজস্ব স্মৃতির প্যাঁচে কাবু হয়ে হাঁসফাঁস করেন। স্থবির পাথবের গায়ে যেমন একটু একটু করে শ্যাওলা জমে, সুদর্শন সিংহবালুর অচল জীবনেব খাঁজে খাঁজেও তেমনি ওই বজ্জাতরা জাঁকিয়ে বসেছে সুযোগ CoA) এবং তাদেরই তিলতিল প্যাঁচে জড়ানো তিনি, দম আটকানো এক মৃত্যুমুখী গাছ। গাছ, গাছ, গাছ। ৪. পরীক্ষিত বাউরির উত্তরাধিকার বাঘের মুখ থেকে শিকার ফসকে গেল, অথচ বাঘ নির্বিকার, এমনটা যেমন ভাবা যায় না, তেমনই,হাতের মুঠো থেকে আস্ত যুবতী মেয়েমানুষ ফসকে পালিযে গেলে সুদর্শন সিংহবাবু চুপচাপ বসে থাকবেন এও যেন এক অসম্ভব ব্যাপার | অথচ, যে মানুষটা এক প্রবল ঝড়জলের রাতে কাঁধে দোনলা বন্দুক ঝুলিযে বেরিয়ে পড়েছিলেন তাঁর পছন্দের মেযেমানুষটির প্রেমিকের সঙ্গে মোকাবিলা TAG, সেই সুদর্শন সিংহবাবু এত বড় একটা অঘটন ঘটে যাওয়ার পরও অনুদ্বিগ্ন, অচঞ্চল AVA | ডান হাতখানি খুব শীতল অনুত্তেজক ভঙ্গিতে ওপরে তুলে থামিয়ে দিলেন রুদ্র শিকারিকে | বললেন, ‘HOST দে। যে গেছে, উয়াকে যেত্যে দে। উ উড়া পাইখ। ধরা দিবার লয়। তুই বরং ঝারমনিয়ার বউটাকে দেখ্‌। রাধালগরের রাধাটিকে।” বাধালগরের গগন ঝারমনিয়ার বউটাকে অনেকদিন আগে থেকেই পছন্দের তালিকায় রেখেছেন সুদর্শন । গেল বছর দুর্গাপূজায় সে মেয়ে যাত্রাগান শুনতে এসেছিল সিংহগড্ে নামক দৃশ্যগুলোতে হেসে লুটিয়ে পড়ছিল বারংবাব | দোতলাব বারান্দা থেকে সেই হাসিমাখা মুখখানি দেখেছিলেন সুদর্শন। তৎক্ষণাৎ ওকে নির্বাচন করে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। মনিবের আদেশ পেয়ে রুদ্র শিকাবি ঝাঁপ মারল রাধালগরের দিকে। পাক্কা তিনদিন তিনরাঙি নিশান বাউরির বউ বসত করেছিল বত্রিশভাগীর জঙ্গলে | নিশান বাউরি খুঁজে খুঁজে আলা | চারপাশে কান পাতলেই কত গুজব | অধিকাংশের ধারণা, ভোগ-টোগ করে নিয়ে কর্তাবাবু মেয়েটাকে খুন করে মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন দু'দিন বাদে কে যেন খবর নিয়ে এল, হরিণমুড়ির পাড়ে কুকুরের দল মাটি আঁচড়িয়ে গর্ত করছে নির্ঘাৎ পচা লাশের গন্ধ পেয়েছে ওরা | কেউ বলে, তাবা শেষরাতে হরিণমুড়ির দিকে Seas বসতে গিয়ে রুদ্র শিকারিদের একটা ভারি কিছু বযে নিয়ে যেতে দেখেছে। এইভাবে, বউকে নিয়ে তল্লাটে গুজব যখন পাখনা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে অণ্ডনতি, বর্ষার বাদলা-পোকার মতো, ঠিক তখনি খুঁজতে খুঁজতে, বত্রিশভাগীর জঙ্গলের পোড়া মহুলের মগডালে বউকে খুঁজে পেয়েছিল নিশান বাউরি | বাজ পড়ে এঁ প্রাচীন মহলের চুড়োখানা পুড়ে গিয়েছিল সেই কোন্‌ আন্দিকালে। আজও এলাকার তাবৎ মানুষ বত্রিশভাগীর জঙ্গলের 'পোড়া TT বলতে একডাকে চেনে | মাটির হাতি-ঘোড়া সাজিয়ে ভৈরবের থান হয়েছে সেখানে | পৌষ মাসের শনিবারে সেখানে জমজমাট পূজা হয়। মোরগ বলি দিয়ে মানত শোধ করে চারপাশের বাউরি-বাগদি, সজ্জন-চণ্ডাল। সেই গাছের মগডালে ঝাপুড়ঝুপা ডালপালার আড়ালে শরীব লুকিয়ে তিনদিন-তিনরাত বসে ছিল নিশানের বউ। যে শোনে সে আকাশে আড় কাটে বিস্ময়ে । আরে, ঠাকুর-গাছে পা লাগিয়ে উঠলি তুই? ঠাকুর সইল্যাক ? নিশানের বউ বলে, তখন কি অতশত বোধ-বৃুদ্ধি ছিল্যাক গ খুড়ি!তখন হল্যাক আমার 'জীবন যায় রে COMA বেরা” আবেস্তা। শুধুঠাগ্রের সুমুখে খাঁড়া হইরে বলল্যম,ঠাকুর,ইখন আমি তুমার আশ্রিত্‌।বাঁচালে বাঁচাও, মাইর্লে মার। বলেই তরতরাঁই উঠে গেল্যম গাছে।



Leave a Comment