ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি [সংস্করণ-১] | Bharater Swadhinata Sangram O Sampradayik Rajniti [Ed. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ৩ সন্ধানে তখন ইংলকীয় বণিকেরা পৃথিবীর দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। “টাকা চাই”, টাকা চাই” বলে উচ্চরবে আর্তনাদ সুরু করেছে ইংলন্ডের হবু বুর্জোয়া নায়কেরা। উইলিয়াম ডিগবী তার Prosperous British India ABS শিল্পোদ্যোগ সম্প্রসারণকামী ইংলন্ডের পৃথিবী- ব্যাপী অর্থাস্বেষণ অভিযানের বর্ণনা দিয়ে বলেছেনঃ at last money was found in India!’ সুতরাং নিজ দেশের পুঁজিবাদী শিল্পোদ্যোগের সমৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের স্বার্থেই ইংরেজদের ভারত বিজয় অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। হার্বার্ট স্পেন্সার তার Social Statics নামক পুস্তকে লিখেছেন যে, পলাশীর যুদ্ধের পরে অনেকগুলি জাহাজ বোঝাই স্বণ ও মণিমাণিক্য (ship loads of gold and gems) বাংলা ও কর্ণাটক থেকে সমুদ্রপথে ইংলন্ডে পৌঁছোয়। তারই ফলে পলাশীর যুদ্ধের পরে তিন বছরের মধ্যে ইংলন্ডের শিল্প বিপ্লব” (Industrial Revolution) শুরু হয়। নগদ পুঁজির সমস্যা মিটলেই পুঁজিবাদী উৎপাদনের সকল সমস্যা মেটে না। একটা দেশে পুঁজিবাদের জয় সম্পূর্ণ করতে সেই দেশের দখলে আর পাঁচটা অনুন্নত (অর্থাৎ পুঁজিবাদী উৎপাদন SVS) দেশ থাকা চাই | তাই ইংরেজের ভারত বিজয় অভিযানের লক্ষ্য ছিল-লুষ্ঠনের দ্বারা নগদ পুঁজি সংগ্রহ, সুবিধায় কাচামাল ক্রয় ও শিল্পজাত মাল বিক্রয়ের জন্য একটি একচেটিয়া বাজার সৃষ্টি এবং পুঁজি রপ্তানীর একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র অধিকার Sat | ভারতবর্ষ জয়ের পরে বিজিত দেশে স্থায়ী বসতি স্থাপন করে, ভারতীয়ত্ব বরণ করে রাজ্য শাসন করবার কোন লক্ষ্য ইংরাজ বিজেতাগণের ছিল না। নিজ দেশের অর্থিক সমৃদ্ধিবর্ধনের জন্য পরদেশ লুষ্ঠন-এই ছিল ব্রিটিশ সাম্বাজ্যবাদের মৌলিক লক্ষ্য এবং পুঁজিবাদী যুগে দিগ্বিজয়ের এটাই স্বাভাবিক লক্ষ্য। পদ্ষাত্তরে, ভারতে মুসলিম সমরনায়কগণের বিজয় অভিযানের লক্ষ্য ও চরিত্র ছিল ভিন্নতর। গোড়ার দিকে আরবীয় ও তুর্কী অভিযাত্রীদের পৌনঃপুনিক আক্রমণের মধ্যে সাম্রাজ্য স্থাপনের কোন অভিপ্রায় পরিলক্ষিত হয় না। অর্থ ও সম্পদ লুষ্ঠনই আরব ও তুকী আক্রমণকারিগণের মৌলিক লক্ষ্য ছিল---একথা অবশ্য স্বীকার্য। কিন্তু খৃস্টীয় ত্রয়োদশ শতকের সূচনাকাল থেকে অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। ' কুতুবউদ্দিন আইবেক দিল্লীর সিংহাসনে আরোহন করেন ১২০২ foie | সেই সময় থেকে ভারতবর্ষের মুসলিম শাসকেরা কোন বিদেশীয় রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতিনিধিরূপে এ দেশে শাসনক্ষমতা পরিচালনা করেন নাই। তারা ভারতে স্থায়ী বসতি স্থাপন করে নিজেদেরকে ভারতীয়রাপে পরিচিত করতে যত্নবান হয়েছেন শাসনতান্ত্রিক শোষণ পদ্ধতির প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে এটা বুঝতে পারা যাবে যে ভূমিনির্ভর অর্থনীতির অধীনে শাসক যদি অধিকতর লাভবান হতে ইচ্ছা করেন তা হলে তিনি যে দেশের শাসক সেই দেশের অভ্যস্তরে বসতি করা তার পক্ষে একান্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। সামস্ততান্ত্রিক আর্থিক ব্যবস্থায় সম্পদ উৎপাদনের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে 'ভূমি'-যার স্থানাস্তরীকরণ সম্ভব TH | উৎপাদন কর্ম যেখানে পরিচালিত হচ্ছে তার যত কাছে সামস্ততান্ত্রিক শাসক বাস করবেন, রাজকর আহরণ তার পক্ষে তত বেশী সুবিধাজনক হবে। পুঁজিবাদী উৎপাদনকলার সাথে যেহেতু সামস্ততান্ত্রিক উৎপাদনকলার চরিত্রগত পার্থক্য TA, সেইহেতু সামস্ততান্ত্রিক শোষণ পদ্ধতি থেকে পুঁজিবাদী শোষণ পদ্ধতি ভিন্নতর হতে বাধ্য | পুঁজিবাদী আর্থিক ব্যবস্থায় পৃথিবীর কোন এক ক্ষুদ্র অংশে পুঁজি নিয়োগ



Leave a Comment