পশ্চিমবঙ্গ : দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা | Pashchimbanga : Dakshin 24 Pargana Zela

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
বর্তমানে মজানদীর দেশ হলেও প্রাচীন ও মধ্যযুগে ২৪-পরগনা অঞ্চলে অসংখ্য বেগবান প্রসিদ্ধ নদ-নদী ছিল। মধ্যযুগেও আদিগঞঙ্গা. সরস্বতী, বিদ্যাধরী, যমুনা, ইছামতী, wa, সৃতী, পিয়ালী প্রভৃতি মিষ্টিজলের নদী এবং সুন্দরবনে বছ লোনা জলের নদী ছিল। এইসব নদীর মাছ জেলার প্রয়োজন মিটিয়েও বাইরে চালান cae! এইসব নদীর বুকের ওপর দিয়েই ২৪-পরগনার বাণিজ্য-তরী দিদ্বিদিকে বাণিজ্য যাত্রা করত। মঙ্গলকাব্যের ধনপতি, শ্রীমস্ত, টাদসদাগরের দূর- দূরাস্তরে বাণিজ্য-যাত্রার কাহিনী মিথ্যা নয়। Aes জেলায় চাদের চম্পাই বা চম্পকনগর এবং ধনপতিদের উজানিনগর এখনও বর্তমান। দিনে সূর্য ও রাতে ধ্রুবতারা লক্ষ্য করে বাঙ্গালী বণিক সাত সমুদ্দুর তেল নদী পাড়ি দিত। কিন্তু বাঙ্গালীর এই বহিবাণিজ্য মধ্যযুগে প্রথম আঘাত পেল আরব সাগরে আরব জলদস্যুদের বারংবার আক্রমণের ফলে। পরিণামে তারা পশ্চিমের দেশসমূহের সঙ্গে বাণিজ্য ত্যাগ কবতে বাধ্য হয় এবং শুধু সিংহল,-যবদ্বীপ, সুমাত্রা, মালয় প্রভৃতি পূর্বদেশের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখে । কিন্তু ১৬শ শতকে এ বাণিজ্যও বিস্নত হতে লাগলো বঙ্গোপসাগরে ও ভারত মহাসাগরে পর্তুগীজ ও মগ দস্যুদের আক্রমণের ফলে। শেষপর্যন্ত মধ্যযুগের বাঙ্গালী বণিক ১৬শ শতকের পর বৈদেশিক বাণিজ্য থেকে একেবারেই হটে গেল। এইসব দস্যুদের বন্দুক ও কামানের সঙ্গে মোকাবেলা করার ক্ষমতা বাঙ্গালী বণিকদের একেবারেই ছিল না। বংশীদাসের লেখায় আছে-_ “মগ ফিরিঙ্গি যত বন্দুক পলিতা হাত একেবারে দশগুলি ছোটে।” বৈদেশিক বাণিজ্য হারিয়ে বাঙ্গালীরা তখন আত্যস্তরীণ বাণিজ্যে মনোনিবেশ করলেন। তখন বাংলাদেশে অনেক বিদেশী বণিক এসে গেছে। এখানে প্রথম আসে পর্তুগীজরা তারপরে যথাক্রমে ওলম্দাজ, ইংরেজ, দিনেমার ও শেষকালে ফরাসীরা। দক্ষিণ ২৪-পরগনায় গড়িয়ার পূর্বে বিদ্যাধরীর তীরে বিখ্যাত তার্দা বন্দরে ১৫৯০ খৃষ্টাব্দে পর্তুগীজরা প্রথম ঘাঁটি গাড়ে। তার্দা তখন ২৪-পরগনার এক বিখ্যাত বন্দর। কালিন্দী ও মাতলা নদী হয়ে পূর্ববঙ্গের বরিশাল, খুলনা ও ২৪-পরগনার সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে বালাম চাল, কাঠ, গোলপাতা, মধু, মাছ প্রভৃতি বোঝাই হয়ে হাজার- Tal দেশী নৌকা OM বন্দর পর্যন্ত আসত। 28 পরগণা জেলায় বহু চাষের জমিও MENA অধিকার করেছিল। সেখানে তারা বিদেশ থেকে এনে আলু, তামাক, আনারস, আতা, আমড়া, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু প্রভৃতি অনেক বিদেশী ফসল OTS SAG | মনে হয় তখন থেকেই বারুইপুরে পেয়ারার চাষ প্রসিদ্ধি লাভ করে যা আজও অব্যাহত আছে। শায়েস্তা খার আমলে Sera ২৪-পরগনার ইছামতী নদীর তীরে প্রায় ১২ মাইল বিদত্বৃত এলাকায় ফিরিঙ্গি বাজার বসায়। এদের মধ্যে অনেকে দস্মবৃত্তিও করত। এই সব মগ-ফিরিঙ্গি দস্যুরা শুধু সমুদ্রে বাঙ্গালীর বাণিজ-তরী আক্রমণ করত না, তারা দক্ষিণ ২৪-পরগনার পশ্চিম সুন্দরবনের আদিগঙ্গা তীরস্থ সমৃদ্ধিশালী প্রাম-নগর আক্রমণ করে লুটপাট করত, ঘর জ্বালিয়ে দিত, নারী-পুরুষদের ধরে নিয়ে গিয়ে বিদেশের হাটে বিক্রী করত। বিশেষ করে ১৬১২ যৃষ্টাব্দে যশোহরের রাজা প্রতীপাদিত্যের পতনের পরে দক্ষিণ ২৪-পরগনার এই সব অঞ্চল একেবারে অরক্ষিত হয়ে পড়ে। এখানকার মগরাহাট মনে হয় মগেদেরই হাট ছিল এবং সেদিন দক্ষিণ ২৪-পরগনা 'মগের পশ্চিমবঙ্গ রি হরিনারায়ণপুর থেকে আবিষ্কৃত তামার মুদ্রা রাজা Ae সংগ্রহশালার সৌজন্যে TAH কুখ্যাতি অর্জন করেছিল। এইভাবে সেদিন এই প্রচণ্ড দস্যুবৃত্তি ও লুঠপাটের ফলে দক্ষিণ ২৪-পরগনার এই সব সমৃদ্ধিশালী গ্রাম ও নগর থেকে লোক পালাতে লাগলো। সব ঘন অরণ্যে পরিণত Ra) ক্রমশঃ বন এগিয়ে এলো সেদিনের কলকাতা পর্যন্ত যেখানে ১৬৯০ সালে জোব চার্ণক এসে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ঘাঁটি গাড়লেন। এই প্রসঙ্গে স্মরণীয়-_মধ্যযুগে দক্ষিণ ২৪-পরগনার আদিগঙ্গা Cig ছত্রভোগ প্রসিদ্ধ বন্দর ও তীর্থস্থান ছিল যেখান থেকে গঙ্গা শতমুখী ধারায় বিভক্ত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছিল। নীলাচল যাত্রাকালে ১৫১০ খৃষ্টাব্দে ২৪ বৎসর বয়স্ক শ্রীচেতন্য এই, ছত্রভোগে এসে আদিগঙ্গাতীরস্থ এতদিনের হাঁটাপথ স্বারির জঙ্গল ত্যাগ করে নৌকাযোগে নীলাচলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সম্ভবত হিন্দুযুগ থেকেই aaa হিসেবে ছত্রভোগের প্রসিদ্ধি ছিল। এছাড়া ২৪-পরগনার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত বর্তমান হুগলী জেলার west (সরস্বতী তীরে) এবং পরবর্তী কালে সরস্বতী একেবারে মজে গেলে গঙ্গাতীরস্থ হুগলী বন্দর (১৫৮০ খৃষ্টাব্দে পর্তুগীজদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত) সেযুগে পূর্ব ভারতের বিখ্যাত বন্দর ছিল। ASNT তো প্রাচীন যুগ থেকেই প্রসিদ্ধ বন্দর। ১৬৩২ খৃষ্টাব্দে পর্তুগীজরা হুগলী থেকে মোগল সৈন্য কর্তৃক সম্পূর্ণ উৎখাত হলে তাদের শূন্যস্থান দখল করে ইংরেজরা। হুগলী শব্দটি সম্ভবত হোগলা আচ্ছাদিত স্থান থেকেই হয়েছে বলে অনুমান। পর্তু গীজরা উচ্চারণ করত SAN বা Ogle | ২৪-পরগনার এত কাছে দুটি বিখ্যাত বাণিজ্য বন্দরের সঙ্গে ২৪-পরগনার মানুষের বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল না একথা কল্পনা করা যায় না। উত্তর ২৪-পরগনার গঙ্গাতীরস্থ নৈহাটির অপর পারে ছগলী এবং কাচড়াপাড়ার গঙ্গাপারে কিছুটা দূরেই সপ্তগ্রাম বন্দরে ২৪-পরগনায় ক্রেতা-বিক্রেতারা সহজেই গঙ্গা পেরিয়ে যাতায়ত করত। ১৫৩৭ খৃষ্টাব্দে পর্তুগীজরা সপুপ্রামেই তাদের বাণিজ্যের মুলঘাটি স্থাপন কাবস্ছিল। এই সময় শেরশাহ সপ্তগ্রাম থেকে দিল্লী পর্যন্ত এক প্রশস্ত রাজপথ নির্মাণ করে দিয়েছিলেন যা পরবর্তী কালে উভয় দিকে আরও সম্প্রসারিত হয়ে হাওড়া থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত এই রাস্তার নাম হয় গ্রাগু ট্রাঙ্ক রোড। এই রাস্তা হবার ফলে উত্তর a? cq



Leave a Comment