For Complaints/Suggesstions related to this material, please clickHere
বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)
(Click to expand)মোহিতলালের জীবন ও কবিতা ১৩ চরুণানিধান, কুমুদরঞ্জন মল্লিক, কালিদাস রায়। এঁরা মোহিতলালের সামান্য বড়ো অথবা প্রায়
দমবয়সী। এঁদের কবিতা এই যুগেই যথেষ্ট প্রচারিত হয়ে রবীন্দ্রযুগের সৃষ্টি করেছে। এঁদের
'বশিষ্ট্য কল্পনার সৌকুমার্য, ভাষা ও ছন্দের মনোরম্যতা। মধুসূদন-হেমচন্দ্র যে কবিতার আদর্শ
স্থাপিত করেছিলেন, সেটা এই আদর্শের থেকে আলাদা। অক্ষয়কুমার বড়াল দেবেন্দ্রনাথ সেন
নীরীন্দ্রমোহিনী দাসী রবীন্দ্রযুগের বা রবীন্দ্রাদর্শের কবি নন। গীতিকবি হিসাবে সার্থক ও
স্মরণীয় হলেও রবীন্দ্রনাথ যে ভাষাছন্দ ও কল্পনার অভিনবত্ব সৃষ্টি করে দিয়েছেন, এঁরা ঠিক
তার অনুগামী নন। মোহিতলালের কাব্যচর্চার প্রথম যুগে এই দুই আদর্শের কবিরাই মোহিতলালকে
প্রভাবিত করেছিল। অবশ্য তিনি রবীন্দ্রাদর্শেরই কবি ছিলেন, সে-কথা আমরা আলোচনা
করেছি। কিন্তু দেবেন্দ্রনাথ সেনের বা অক্ষয়কুমার বড়ালের গাঢ়বদ্ধ কাব্যভাষার তিনি অনুরাগী
ছিলেন, এ-কথাও সত্য। এই নিষ্ঠার পরিচয় মোহিতলালের পরবর্তী পর্যায়ের কাব্যে যতখানি
HED, প্রথম পর্যায়ের কাব্যে তত প্রকট নয়। তবে সনেটের ঘনপিনদ্ধ শিল্পকলায় দেবেন্দ্রনাথ
সেনের যে সাফল্য ইংরেজি সাহিত্যের অনুরাগী ছাত্র হিসাবে মোহিতলাল দেখেছিলেন, তাতে
আচ, হয়ে তিনি যে *্নবেন্দ্রনাথের উদ্দেশ্যেই একগুচ্ছ সনেট রচনা করেছিলেন, সেটাও
Tu করবার বিষয় অবশ্যই। অধুনা- Petey দেবেন্দ্র-মঙ্গল কাব্যখানা প্রকাশিত হয়েছিল
১৯১২, খ্রিষ্টাবন্দে। সেটাই মোহিতলালের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ এই সময়ের একজন বড়ো কবি সত্যেন্দ্রনাথ WS | সত্যেন্দ্রনাথকে মোহিতলাল নানা সাহিত্যিক
গোষ্ঠাতে দেখে থাকবেন। তার প্রধান কয়েকটি কবিতাগ্রন্থই ১৯১৪-র মধ্যে প্রকাশিত হয়েছিল।
দলবৃত্ত ছন্দে লঘু কল্পনার Cow মোহিতলালকে প্রভাবিত করেছিল সন্দেহ নেই। কারণ
মোহিতলালের স্বপন-পসারী কাব্যেই তার যথেষ্ট প্রমাণ আছে। স্বপন-পসারীর কবিতাগুলি ১৯১৪-
১৫ থেকেই লেখা হতে থাকে। সত্যেন্দ্রনাথের কাব্যে রবীন্দ্রীয় কল্পনালীলা যেমন ছিল, তেমনি
ছিল রবীন্দ্রকাব্য-শিল্পকলার বৈচিত্র্যপ্রবণতা। কাব্যশিল্পে এই বৈচিত্র্য সৃষ্টি উনিশ শতকের কবিরা
করেন নি-_রবীন্দ্রনাথই করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের বৈচিত্র্যপূর্ণ ভাযাশিল্প, ছন্দ এবং রমণীয় সৌন্দর্য-
কল্পনার অনুসরণেই করুণানিধান-'কুমুদরঞ্জন'-কালিদাস রায়ের অগ্রণী কবি হয়ে এসেছিলেন
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত। অবশ্যই এঁদের নিজের-নিজের বিশিষ্টতা স্বীকার্য। এঁদের দিয়েই রবীন্দ্রযুগের
সূত্রপাত এবং ভারতীগোষ্ঠীর সৃষ্টি। মোহিতলাল তার কবিজ্বীবনে প্রথমত ছিলেন ভারতী-গোষ্ঠীরই
অন্যতম এবং সত্যেন্দ্রনাথ ছিলেন তার দিশারী। পরবর্তী কালে সত্যেন্্রনাথের থেকে আলাদা
বৈশিষ্ট্য নিয়েই মোহিতলাল বাংলা কাব্যজগতে স্মরণীয় হয়েছেন। সত্যেচ্দ্রনাথকে নিয়ে মোহিতলাল
কবিতা এবং স্মৃতিকথাও লিখেছেন। মোহিতলালের যৌবনে আর একটি সম্ভাব্য প্রভাবের কথাও উল্লেখ করা কর্তব্য। সম্ভবত এ
ব্যাপারটি কেউ তেমন করে ভেবে দেখেন নি। মোহিতলালের কাব্যের একটি প্রধান বিষয় ছিল,
afta জীবন ও ফার্সি কবিতার জগৎ। করুণানিধান, কুমুদরঞ্জন, কালিদাস রায়---কারো কাব্যেই
এই ধরনের বিষয়ের প্রাধান্য ছিল না। তারা বাংলার জীবন পল্লীপ্রকৃতি--এসব নিয়েই কবিতা
রচনা করেছেন। এ-সব বিষয় নিয়ে মোহিতলালের কবিতার পরিমাণই বরং কম। কালিদাস রায়
বলেছেন-_'আশ্চর্যের বিষয়, তার নিজের রচিত কবিতাগুলির অধিকাংশেই বাংলার নিজস্ব প্রাণধর্মের
কোন সম্বন্ধ নাই। আমি এ রহস্যের কোনো সমাধান করতে পারি নি মোহিতলাল নিজেই বলেছেন, তার Proce ফার্সি কবিতার রসিক পাঠক ছিলেন। সম্ভবত
তিনি বালক বয়স থেকেই ফারসি কবিতার রস আস্বাদন করে এসেছেন। তিনি যখন কলেজের