বাঙলার সূফী সাহিত্য [সংস্করণ-১] | Banglar Sufi Sahitya [Ed. 1]

বই থেকে নমুনা পাঠ্য (মেশিন অনুবাদিত)

(Click to expand)
এসব মতের ধারকরা ব্রাহ্মণ্যবাদী জৈন ও বৌদ্ধদের কাছে 'লোকায়তিক' বলে ঘৃণ্য ছিল, যদিও বেদাদি সব শা্ত্রগ্রছ্থেই আমরা এসব মতের অপরিমেয় প্রভাব লক্ষ্য করি। মৈথুন মাধ্যমে সৃষ্টি প্রক্রিয়ার অভিজ্ঞতা মানুষকে নারী-পুরুষ. তত্ত্বভাবনায় তথা মৈথুনতত্ত্ব কল্পনায় দিয়েছে প্রেরণা | কিন্তু কালে মৈথুনতত্ত্বের আদি উদ্দেশ্যের বিস্মৃতি ঘটেছে এবং এটি নতুন তাৎপর্য পেয়ে অধ্যাত্ম মাধুর্যে মহৎ এবং Wis PHS অসামান্য হয়ে উঠেছে। এর বিচিত্র বিকাশ আমরা জৈন-বৌদ্ধ সমাজে এবং শৈব-শাক্ত-বৈষ্ণব-গাণপত্য- লিঙ্গায়েতে দেখেছি। আবার এর আদি রূপও নিঃশেষে লোপ পায়নি। তার রেশ রয়েছে জয়পুর, পাঞ্জাব, নিলগিরি, ছোট নাগপুর, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব বাঙলার আদিবাসীদের মধ্যে ২৫ মৈথুন যেমন আদিতে ফসল উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক অঙ্গরূপে বিবেচিত হয়েছে, তেমনি আবার রতি বিরোধ সাধনায়ও প্রবর্তনা দিয়েছে। কাজেই বামাচারী ও কামবর্জিত সাধনার উৎস অভিনু 1২৬ বলেছি, যাংখ্য হচ্ছে SY, আর যোগ ও তন্ত্র হচ্ছে সাধনশান্ত্র । যোগ ও তন্ত্র দুটো fey ধারায় যেমন চলেছে, তেমনি আবার যোগতান্ত্রিক মিশ্রধারাও সৃষ্টি করেছে। মুসলমানেরা ধর্মীয় বাধার দরুন তন্ত্রাচার পরিহার করবার চেষ্টায় ছিল । তবু কোন কোন শ্রেণীর সূফী-বাউলে তন্ত্রাচার বিরল ছিল না । দৃষ্টাস্তস্বরূপ সৈয়দ মর্তুজা, আউলটাদ, মাধব বিবি প্রমুখ সাধক- সাধিকার ACTA করা যায়। ৭ তন্ত্রমতে পুরুষ ও প্রকৃতির আদি মৈথুন থেকেই বিশ্বের উৎপত্তি ।২৭ সাংখ্যেও তাই ।২৮ তন্ত্রের মতোই সহজিয়া প্রভৃতি সম্প্রদায়ও আদিম কৃষিকেন্দ্রী যাদুবিশ্বাস থেকেই জন্ম লাভ করেছে।২৯ সাংখ্য, যোগ ও তন্ত্র মূলত দেহাত্মবাদী ও নাস্তিকমত। যোগে ও তন্ত্রে ঈশ্বর পরবর্তীকালে ঠাই করে নিয়েছেন বটে, কিন্তু এসব সাধনায় ঈশ্বররোপাসনার স্থান অপ্রধান। দেহতত্ত্বই মুখ্য । এই দেহাত্মবাদী নাস্তিক্যমতকে বাশ্মণ্যবাদীরা গোড়ার দিকে WTS’ বলে আখ্যাত করেছে।০০ গীতায় বলা হয়েছে, অসুর মতে 'অপরস্পর AES কিমন্যং কাম হৈতুকম |” ১৬।৮ অর্থাৎ জগৎ নারীপুরুষের মিলনজাত এবং কামোদ্ভুত 1 একে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা লোকায়ত মত বলে অবজ্ঞা করেছে। নিঃসন্দেহে আদি অবিমিশ্র তান্ত্রিক, যোগী এবং সাংখ্যমতবাদীরাই লোকায়তিক। তাই শীলান্ক রচিত 'সূত্রকৃতাজ্ঞ সূত্রের ভাষ্যে' সাংখ্য ও লোকায়তিকে বিশেষ পার্থক্য স্বীকৃত হয়নি।০১ তিন মতই গীতার আমলেও অভিনু ছিল। ৮ যোগতান্ত্রিক সাধনতত্ত্ব : একজন বিদ্বানের ভাষায় সাধন তত্ত্টি এই “যাহা আছে ভাতে, তাহাই আছে বশ্কাণ্ডে-'বন্কাণ্ডে যে গুণা ঃ সন্তি তে তিষ্ঠস্তি কলেবরে ।' ইহাই সকল তন্ত্রের সিদ্ধান্ত ৷... তন্ত্র বলিতেছেন যে যখন ব্রহ্ধাগ ও দেহভাগু একই পদ্ধতি অনুসারে একই রকমের উপাদান সাহায্যে নির্মিত, উভয়ের মধ্যে একই পদ্ধতির খেলা হইতেছে; তখন দেহগত শক্তির উন্মেষ ঘটাইতে পারিলে Fer শক্তি তোমার অনুকূল হইবে ।...এদেশের সিদ্ধগণ বলেন যে মনুষ্যদেহের মতন পূর্ণাবয়ব যন্ত্র আর নাই...অতএব এই AHR Ase’ গুপ্ত এবং সুপ্ত শক্তির উন্মেষ ঘটাইতে MACH অন্য কোন স্বতন্ত্র যন্ত্র ব্যতিরেকে তোমার বাসনা পূর্ণ হইতে পারে ।৩২ এখানে বিরোচনের উক্তি স্মর্তব্য : এই পৃথিবীতে দেহের পূজা ও পরিচর্যা করে দেহকে ১৬



Leave a Comment